মঞ্জুরে খোদা টরিক: বিভাজন, বিতর্ক আমাদের সংস্কৃতির অংশ। অনেক বাঙালি একসঙ্গে ভালো থাকবে সেটা হয় না। একযোগে কিছু করবে তা ইতিহাসে দৈবাৎ হয়েছে। অধিকাংশ সময়ই আমরা ঝগড়া-বিবাদ করেই কাটিয়ে দিয়েছি। তা যদি আমাদের সংস্কৃতি না হয় তাহলে বলুন কোন বিষয়ে আমাদের বোঝাপড়া আছে?
র্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যু হলো বা হত্যা করা হলো সেটা নিয়ে কোনো হৈচৈ আছে? আসলে হত্যা-খুনও আমাদের জীবনের অংশ, গা সওয়া একটি বিষয়। তা যখন নিজের স্বজনের ক্ষেত্রে ঘটবে, তখন মনে হবে অন্যরা খুব স্বার্থপর, বিবেকহীন। আর অন্যদের মনে হবে, এটা তো আমার বিষয় নয়, যারটা সে বুঝুক। এর জন্য সরকার-প্রশাসন তো আছেন। আমরা গুরুত্বহীন, ফালতু বিষয়কে জাতীয় সমস্যা মনে করে বিতর্কে জাড়িয়ে পড়ছি, কামড়াকামাড়ি করছি। সরকার কৌশলে আমাদের মধ্যে বেহুদা বিতর্কের নেশা ঢুকিয়ে পায়ের উপর পা তুলে কান চুলকাচ্ছে। ফলে জেসমিন মার্ডারের ঝড়-বিতর্ক ফেসবুকের কয়েক ঘণ্টা মাত্র।
কারণ গোসতো খাওয়া আর উচুঁ আয়ে-মানুষের এখন অনেক সুখ। আমার শুধু ইরানের মাসা আমেনির কথা মনে হয়। ঠিকমতো হিজাব না পড়ার অপরাধে ইরানের নৈতিক পুলিশ গতবছর সেপ্টেম্বরে মাসা আমেনিকে হত্যা করেছিলো। এই এক ঘটনায় ইরান সরকার পরে অবস্থা। এক বোনের হত্যার প্রতিবাদে পাঁচ শতাধিক তরুণ-তরুণী তাদের জীবন দিয়েছে। মাসের পর মাস তরুণরা বড় বড় শহর অচল করে দিয়েছে, দখল করে রেখেছে। সে প্রতিবাদ এখনো হচ্ছে। আমরা ব্যস্ত আছি, যদি, বা, কিন্তু, অথবা নিয়ে। ফালতু, ফাসেক বিতর্ক নিয়ে। আমিও তাদের একজন। তারপরও জেসমিন হত্যার প্রতিবাদ জানাই। তার হত্যার বিচার চাই। মাসা হত্যার প্রতিবাদে ইরানে যতজন জীবন দিয়েছে, জেসমিন হত্যার প্রতিবাদে দেশে ততোজনের একটা মিছিল দেখলেও শান্তি পেতাম। লেখক ও গবেষক