আহসান হাবিব: [১] প্রকৃতিতে প্রতিযোগিতা অবাধ। তবে প্রতিযোগিতায় কে জিতবে তা নির্ভর করে তার টিকে থাকার সামর্থ্যরে উপর। একই প্রজাতির ভেতর যেমন এই প্রতিযোগিতা চলে, আবার অন্য প্রজাতির সঙ্গে চলে এই প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতা একপ্রকার লড়াই, টিকে থাকার লড়াই। সামর্থ্যবানরাই টিকবে। [২] মানুষই একমাত্র প্রাণী যাদের দার্শনিক ভাবনা আছে এবং এরই ভিত্তিতে নানা গোষ্ঠীতে বিভক্ত। এমনকি একই দার্শনিক চিন্তার অন্তর্গত মানষরাও একে অপরের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে। এটা গোষ্ঠীর ভেতরে অন্তঃলড়াইয়ের নমুনা। এই লড়াই চিন্তাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। একটা দলের ভেতরে যত এই ধরনের অন্তঃলড়াই থাকবে, দল তত গতিশীল হবে।
[৩] অনেকেই কবি সাহিত্যিকদের গোষ্ঠীতে বিভক্তকে খারাপ চোখে দেখে। আমার মনে হয় এখানে খারাপ কিছু নেই। কবি-সাহিত্যিক হলেই তাদের চিন্তা বা দার্শনিকতায় পার্থক্য থাকবে না, তা হতে পারে না। ফলে এই বিভক্তি লড়াইয়ের সূচক। এটা থাকা মানেই বুঝতে হবে সংস্কৃতির মাঠ সজীব আছে। যেমন অনেকেই শাহবাগকে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবে। তারা শাহবাগ শুনলেই ছ্যাঁত করে ওঠে। আবার শাহবাগীরা এই সব বিরোধীদের দেখা মাত্র জ্বলে ওঠে। এটা একটা স্বাভাবিক বিষয়। এই লড়াই বা বিরোধীতা আছে বলেই জীবন সক্রিয় আছে।
[৪] প্রশ্ন হলো টিকে থাকবে কারা। টিকে থাকবে তারাই যারা প্রগতির চাকাকে সচল রাখার পক্ষে কাজ করবে। বিকাশের অনুকূল উপাদানটিকে শনাক্ত করে তার পক্ষে নিজেকে নিয়োজিত এবং সক্রিয় থাকলে জয় তাদেরই। প্রকৃতি কখনো রক্ষণশীল এবং বর্জিত চিন্তার পক্ষে কাজ করে না। সমাজিক বিবর্তনের দিকে মনোযোগ দিয়ে বিশ্লেষণ করলেও এই সত্য দেখতে পাওয়া যায়। তবে অনেকের কাক্সিক্ষত স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা বলে কিছু নেই। কৌশল এবং দক্ষতার কাছে উনরা পরাজিত হবেই। লেখক: ঔপন্যাসিক