শিরোনাম
◈ ইসরায়েল খেললে বিশ্বকাপ ফুটবল বয়কট কর‌বে স্পেন ◈ এ‌শিয়া কা‌পে রা‌তে শ্রীলঙ্কা - আফগা‌নিস্তান মু‌খোমু‌খি, লঙ্কান‌দের জয় দেখার অ‌পেক্ষায় বাংলাদেশ  ◈ আওয়মী লীগ বিহীন বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে দিল্লিতে এখন যে সব চিন্তাভাবনা  ◈ চ‌্যা‌ম্পিয়ন্স লিগ, চেলসিকে হা‌রি‌য়ে বায়ার্ন মিউ‌নি‌খের শুভ সূচনা ◈ কিশোরগঞ্জ সম্মেলনে যাওয়ার জন্য স্থগিতাদেশ উঠিয়ে দিন, না হলে ভিন্ন পথ নেবো, জানালেন ফজলুর রহমান ◈ দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নতুন অস্থিরতা ◈ হ‌্যান্ড‌শেক না করায় অপরাধ হিসা‌বে ভারতের ম‌্যাচ ফি ৫০ ভাগ একং ২‌টি ডি‌মে‌রিট প‌য়েন্ট জ‌রিমানা হ‌তে পা‌রে ◈ এআই, কোয়ান্টাম ও নিউক্লিয়ার এনার্জিতে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের বড় চুক্তি ◈ উগ্রপন্থা, সীমান্ত অচলাবস্থা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা—বাংলাদেশসহ পাঁচ প্রতিবেশীকে ‘হুমকি’ মনে করছে ভারত ◈ আবারও ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ

প্রকাশিত : ৩০ জানুয়ারী, ২০২৩, ০২:১৬ রাত
আপডেট : ৩০ জানুয়ারী, ২০২৩, ০২:১৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দ্বিতীয় জীবনটি আমার প্রাপ্য ছিলো না 

তসলিমা নাসরিন

তসলিমা নাসরিন: যে জীবনটি আমি যাপন করছি, সে জীবনটি আমার দ্বিতীয় জীবন। আমার প্রথম যে জীবন ছিল সেটির মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু এমনিতে হয়নি। মৃত্যুকে ডেকে আনা হয়েছে। পরিকল্পনায় ছিল একটি লোক আর তার দুই সহকর্মী। তিনটে মাত্র লোক, জিহাদিরা এতকাল ধরে যা পারেনি, তা পেরেছে। জিহাদিরা যদি আমাকে হত্যা করতো, তাহলে আমার এতটা দুঃখ হতো না। কারণ দীর্ঘকাল থেকেই জানি তারাই আমার আততায়ী। দুঃখ বেশি হচ্ছে  কারণ হতাকারীরা জিহাদি নয়। কী কারণ তাদের ছিল তবে আমাকে হত্যা করার? এর মধ্যে বড় দুটো কারণ আপাতত যা মনে হচ্ছে তাহলো ম্যালপ্র্যাকটিস,মার্কেটিং, মানি। অনেকে বলছেন, হত্যাকারীর বিরুদ্ধে মামলা করতে। আমার মতো নিরীহ, নির্বোধ কী করে বড় বড় শক্তিমান মানুষের বিরুদ্ধে আদালত অবধি যাবে। সেই ক্ষমতা তো আমার নেই। শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক কোনও শক্তিও আমার নেই। এই দ্বিতীয় জীবনটি সম্পূর্ণই অন্যরকম। 

আমার প্রথম জীবনের মতো দুরন্ত, দুর্বিনীত নয়। এই দ্বিতীয় জীবনটি অনেকটা রিহ্যাবের পচানব্বই বছর বয়সী জরাগ্রস্ত মহিলাদের মতো। এই জীবনটি আমার জন্য নয়। কিন্তু এই জীবনটিই এখন আমার জন্য বরাদ্দ করেছে আমার হত্যাকারীরা। যতই  প্রাণপণে আমি মনের শক্তি অর্জন করতে চাইছি দুবেলা করে, ততই ব্যর্থ হচ্ছি। আমার কী হয়েছিল? আমার শরীরের ওপর দিয়ে কি কোনও ট্রাক বা ট্রেন চলে গিয়েছিল? হাড়গোড় গুঁড়ো হয়ে গিয়েছিল? না। আমার শরীরের কোনও হাড় কোথাও বাজেভাবে ভেঙেছিল? না। ডিসলোকেশান হয়েছিল? না। ডিসপ্লেসড হয়েছিল? না। আমি কি হাঁটতে পারছিলাম? আমি অন্তত কাউকে ধরে মেঝে থেকে বিছানা অবধি হেঁটে এসেছিলাম। আমি কি বসতে পারছিলাম? আমি বসতে পারছিলাম। আমার কি হিপ জয়েন্ট ফুলে উঠেছিল? না। 

জয়েন্টে ব্যথা ছিল? না। আমার কি কোনও জয়েন্ট ডিজিজ ছিল? না। কী ছিল আমার তবে? শুরুতে হাঁটুতে ব্যথা ছিল, পরে সে ব্যথাও ছিল না।  অকারণ উদ্বেগ ছাড়া কিছুই ছিল না আমার। উদ্বেগটি আমার ভেতরে তৈরি হয়নি। সিরিঞ্জে ভরে ভরে ইঞ্জেক্ট করা হয়েছে। আর আমার উদ্বেগই ছিল ম্যালপ্র্যাকটিসের জন্য চমৎকার পুঁজি। ডাক্তার হিসেবে  কী  করা উচিত ছিল তাদের?  উচিত ছিল আমাকে রেস্টে থাকতে বলা কিছুদিন। এক সপ্তাহ, দু’সপ্তাহ, তিন সপ্তাহ।  অথবা তারও চেয়ে কিছু বেশি। তারা কি ট্রিটমেন্টের কোনও গাইডলাইন ফলো করেছে? করেনি। তারা ডাক্তারের কাজ নয়, করেছে কসাইয়ের কাজ। আমার প্রথম জীবনটি  আমার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই দ্বিতীয় জীবনটির দিকে তাকালে আমার শ্বাসকষ্ট হয়, বড় অসহায় বোধ করি। দ্বিতীয় জীবনটি আমার প্রাপ্য ছিল না। আমার প্রথম জীবনটির নাম ছিল জীবন, আমার দ্বিতীয় জীবনটির নাম ‘মৃত্যু’। আমি বেশ কিছুদিন হলো মৃত্যু যাপন করছি। আমাকে হয়তো আরও বহুদিন মৃত্যুযাপন করতে হবে। ফেসবুক থেকে 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়