শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ৩০ জানুয়ারী, ২০২৩, ০২:১৬ রাত
আপডেট : ৩০ জানুয়ারী, ২০২৩, ০২:১৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দ্বিতীয় জীবনটি আমার প্রাপ্য ছিলো না 

তসলিমা নাসরিন

তসলিমা নাসরিন: যে জীবনটি আমি যাপন করছি, সে জীবনটি আমার দ্বিতীয় জীবন। আমার প্রথম যে জীবন ছিল সেটির মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু এমনিতে হয়নি। মৃত্যুকে ডেকে আনা হয়েছে। পরিকল্পনায় ছিল একটি লোক আর তার দুই সহকর্মী। তিনটে মাত্র লোক, জিহাদিরা এতকাল ধরে যা পারেনি, তা পেরেছে। জিহাদিরা যদি আমাকে হত্যা করতো, তাহলে আমার এতটা দুঃখ হতো না। কারণ দীর্ঘকাল থেকেই জানি তারাই আমার আততায়ী। দুঃখ বেশি হচ্ছে  কারণ হতাকারীরা জিহাদি নয়। কী কারণ তাদের ছিল তবে আমাকে হত্যা করার? এর মধ্যে বড় দুটো কারণ আপাতত যা মনে হচ্ছে তাহলো ম্যালপ্র্যাকটিস,মার্কেটিং, মানি। অনেকে বলছেন, হত্যাকারীর বিরুদ্ধে মামলা করতে। আমার মতো নিরীহ, নির্বোধ কী করে বড় বড় শক্তিমান মানুষের বিরুদ্ধে আদালত অবধি যাবে। সেই ক্ষমতা তো আমার নেই। শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক কোনও শক্তিও আমার নেই। এই দ্বিতীয় জীবনটি সম্পূর্ণই অন্যরকম। 

আমার প্রথম জীবনের মতো দুরন্ত, দুর্বিনীত নয়। এই দ্বিতীয় জীবনটি অনেকটা রিহ্যাবের পচানব্বই বছর বয়সী জরাগ্রস্ত মহিলাদের মতো। এই জীবনটি আমার জন্য নয়। কিন্তু এই জীবনটিই এখন আমার জন্য বরাদ্দ করেছে আমার হত্যাকারীরা। যতই  প্রাণপণে আমি মনের শক্তি অর্জন করতে চাইছি দুবেলা করে, ততই ব্যর্থ হচ্ছি। আমার কী হয়েছিল? আমার শরীরের ওপর দিয়ে কি কোনও ট্রাক বা ট্রেন চলে গিয়েছিল? হাড়গোড় গুঁড়ো হয়ে গিয়েছিল? না। আমার শরীরের কোনও হাড় কোথাও বাজেভাবে ভেঙেছিল? না। ডিসলোকেশান হয়েছিল? না। ডিসপ্লেসড হয়েছিল? না। আমি কি হাঁটতে পারছিলাম? আমি অন্তত কাউকে ধরে মেঝে থেকে বিছানা অবধি হেঁটে এসেছিলাম। আমি কি বসতে পারছিলাম? আমি বসতে পারছিলাম। আমার কি হিপ জয়েন্ট ফুলে উঠেছিল? না। 

জয়েন্টে ব্যথা ছিল? না। আমার কি কোনও জয়েন্ট ডিজিজ ছিল? না। কী ছিল আমার তবে? শুরুতে হাঁটুতে ব্যথা ছিল, পরে সে ব্যথাও ছিল না।  অকারণ উদ্বেগ ছাড়া কিছুই ছিল না আমার। উদ্বেগটি আমার ভেতরে তৈরি হয়নি। সিরিঞ্জে ভরে ভরে ইঞ্জেক্ট করা হয়েছে। আর আমার উদ্বেগই ছিল ম্যালপ্র্যাকটিসের জন্য চমৎকার পুঁজি। ডাক্তার হিসেবে  কী  করা উচিত ছিল তাদের?  উচিত ছিল আমাকে রেস্টে থাকতে বলা কিছুদিন। এক সপ্তাহ, দু’সপ্তাহ, তিন সপ্তাহ।  অথবা তারও চেয়ে কিছু বেশি। তারা কি ট্রিটমেন্টের কোনও গাইডলাইন ফলো করেছে? করেনি। তারা ডাক্তারের কাজ নয়, করেছে কসাইয়ের কাজ। আমার প্রথম জীবনটি  আমার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই দ্বিতীয় জীবনটির দিকে তাকালে আমার শ্বাসকষ্ট হয়, বড় অসহায় বোধ করি। দ্বিতীয় জীবনটি আমার প্রাপ্য ছিল না। আমার প্রথম জীবনটির নাম ছিল জীবন, আমার দ্বিতীয় জীবনটির নাম ‘মৃত্যু’। আমি বেশ কিছুদিন হলো মৃত্যু যাপন করছি। আমাকে হয়তো আরও বহুদিন মৃত্যুযাপন করতে হবে। ফেসবুক থেকে 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়