শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

প্রকাশিত : ২৭ জানুয়ারী, ২০২৩, ০১:৫৭ রাত
আপডেট : ২৭ জানুয়ারী, ২০২৩, ০১:৫৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমরা কি সুশিক্ষিত, মননশীল প্রকৃত মানুষ চাই না!

সুজিত মোস্তফা:

সুজিত মোস্তফা: কোচিং বাণিজ্য নিয়ে বাংলাদেশে বিস্তর লেখালেখি হয়েছে, এখনো হচ্ছে, আরো হবে। আমি নিজেও আগে কয়েকবার লিখেছি। প্রধানত স্কুলে কর্মরত যে শিক্ষক তিনিই পরবর্তী সময়ে কোচিং করান। স্কুলেরই ভবনে অথবা অন্যত্র জায়গা ভাড়া নিয়ে কোচিং সেন্টারগুলো চলে। একজন ছাত্র স্কুলে সময় দেয় আবার কোচিংয়েও সময় দেয়, অর্থাৎ তাকে ডাবল স্কুলিং করতে হয়। একটা জীবনে সময়ের থেকে বেশি মূল্যবান আর কিছু নয়। ছাত্র-ছাত্রী গড়ে ওঠার সময় সলিড পড়াশোনা যেমন দরকার, পাশাপাশি শৈশবের খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক চর্চা, বই পড়া, ইত্যাদিও একই রকম প্রয়োজন। আমরা রোবট তৈরি করতে চাই না, আমরা চাই মানুষ তৈরি করতে। অতএব স্কুলের বাইরে আলাদা করে কোচিংয়ে সময় নষ্ট না করে স্কুলগুলোকে যদি ওয়েল ইকুইপড্ করা হয়, শিক্ষকদের যদি পর্যাপ্ত বেতনের সুব্যবস্থা করা যায় যাতে তাকে কোচিং বাণিজ্যের উপর নির্ভর করতে না হয় এবং ছাত্রছাত্রীরা যেন একটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের পড়াশোনা শেষ করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য দিলে জাতীয় উন্নতি অনেক বেশি হবে বলে বিশ্বাস করি। প্রাইমারি শিক্ষা হচ্ছে শিক্ষা জীবনের ভিত্তি সৃষ্টির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। 
প্রাইমারি শিক্ষক নির্বাচনে আমাদের প্রচণ্ড সতর্ক হতে হবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নির্বাচনেও এখন নির্লিপ্ত হয়ে গেছি। সেখানেও হাবিজাবি লোকজন ঢুকছে, জাল পিএইচডি হচ্ছে। থিসিসের নামে প্লেজিয়ারিজম হচ্ছে প্রচুর। প্রাইমারি শিক্ষার দিকে আমাদের নজর দেওয়ার সময় কোথায়? কিন্তু দিতে তো হবে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করবার জন্য এবং উন্নত মননসম্পন্ন ছাত্র সমাজ গড়ে তুলবার জন্য প্রাইমারি স্কুল লেভেলে ক্লাস ওয়ান থেকে ফাইভ পর্যন্ত  আপাতত সরকার পাঠ্য বিষয়গুলোকে নতুন সিলেবাস সহ আধুনিকায়ন করার পাশাপাশি শিল্পকলাকে বাধ্যতামূলক করবার একটি উদ্যোগ নিয়েছেন। শিল্পকলার মধ্যে সংগীত, নৃত্য, অভিনয় এবং চিত্রাংকন রয়েছে। বাচ্চারা এই বিষয়গুলো চর্চা করবে, অভিনেতা, সংগীতশিল্পী, চিত্রকর বা নৃত্যশিল্পী হওয়ার জন্য নয়। তাদের সাংস্কৃতিক মনন যেন বিকশিত হয়, সেটিই হচ্ছে মূল উদ্দেশ্য। এসব বিষয়ের মধ্যে কোনোটিতে কোনো ছাত্র-ছাত্রীর যদি বিশেষ যোগ্যতা থাকে, তবে ভবিষ্যতে সেই বিষয়ে অধ্যয়ন এবং চর্চা করে কেউ যদি সফল হয় সেটা পরের ব্যাপার। কিন্তু প্রত্যেকে সুন্দর মানুষ হিসেবে গড়ে উঠলে একটি জাতি গঠনে সেটি বিরাট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। 
আমি এই কার্যক্রমে বিশেষজ্ঞের ভূমিকায় কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, সারাদিন ধরে দেশের অভিজ্ঞ এবং উচ্চশিক্ষিত, নির্বাচিত মানুষজন কাজ করছে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। দিনশেষে তাদেরকে ১৮০০ টাকা করে পেমেন্ট করা হচ্ছে। এই বছর সেটা সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে সাড়ে ২২০০ টাকা হয়েছে। এমন নয় যে আমরা সকল ক্ষেত্রেই ভীষণ কৃচ্ছ্রতা সাধন করছি। বিপুল পরিমাণ অর্থ চুরি, অপব্যয় এবং পাচার ছাড়াও নানান প্রকল্পে ব্যয় করা হচ্ছে। আমরা শিক্ষক এবং ছাত্র গড়ার কারিগরদের যদি এইভাবে সম্মানিত করি তাহলে তাদের কাজ করার আগ্রহ তৈরি হবে কীভাবে? আমাদের জাতি গঠনের ভিত্তিমূলই বা তৈরি হবে কীভাবে? আমরা শুধু ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরি করতে বিশাল টাকা খরচ করব কিন্তু মানুষ তৈরি করবার ক্ষেত্রে আমাদের টাকা খরচে এত অনীহা কেন? আমরা কি শুধু বিল্ডিং, সেতু, উড়াল সেতু, এইগুলো চাই? আমরা কি সুশিক্ষিত, মননশীল প্রকৃত মানুষ চাই না? লেখক: সংগীতশিল্পী

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়