শওগাত আলী সাগর: প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে গণ-তদন্ত কমিশনের সামনে হাজির হয়ে নিজের নেওয়া পদক্ষেপের যথার্থতা সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে কেন গণতদন্ত কমিশনের কাছে কৈফিয়ত দিতে হয়েছে, জানেন? সেই কথা বলি। তথাকতিথ ‘ফ্রিডম কনভয়’-এর কথা নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে। বছরের শুরুর দিকে সারাদেশ থেকে ট্রাকাররা মিছিল করে এসে রাজধানী শহর অটোয়ায় অবস্থান নিয়েছিলো। প্রায় একমাস ধরে পার্লামেন্ট হিলের সামনে অবস্থান নিয়ে রাজধানী শহরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলো তথাকতিথ ফ্রিডম কনভয়। ফেডারেল সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে অবরোধের হাত থেকে শহরবাসীকে মুক্ত করেছিলো তখন। সেই জরুরি অবস্থা ঘোষণাটা যৌক্তিক ছিলো কিনা, এর বাইরে বিক্ষোভ দমনের আর কোনো পথ খোলা ছিলো কিনা জরুরি অবস্থাকেই কেন একমাত্র উপায় হিসেবে বেছে নিতে হলো- এই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে।
ফেব্রুয়ারিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর এপ্রিলেই ‘পাবলিক অর্ডার ইমার্জেন্সি কমিশন’ গঠন করতে হয়। একজন বিচারপতির নেতৃত্বে এই কমিশন অক্টোবর থেকে শুনানী শুরু করে। অটোয়ার সিটি মেয়র, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান, সরকারের মন্ত্রী থেকে শুরু করে যাদের জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন সবাইকে ডাকা হয়েছে এই কমিশনের সামনে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, প্রধানমন্ত্রীর গোয়েন্দা উপদেষ্টা কেউই বাদ যাননি। জরুরি অবস্থার বাইরে এই অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের আর কোনো পথ ছিলো না বলেই দেশের সিংহভাগ মানুষ বিশ্বাস করেছে। তারপরও ‘জরুরি অবস্থাটা যে সত্যিই জরুরি ছিলো’- সেটি এখন সরকারকে প্রমাণ করতে হচ্ছে গণতদন্ত কমিশনের সামনে। খোদ প্রধানমন্ত্রীকে ও নিজের নেওয়া পদক্ষেপের যথার্থতার পক্ষে কৈফিয়ত দিতে হচ্ছে তদন্ত কমিশনের সামনে। গণতন্ত্র কেবল মুখের কথাই নয়, সেটি চর্চায়, কাজে দেখানোরও বিষয়। লেখক: কানাডা প্রবাসী সাংবাদিক