আরিফ জেবতিক: ধর্মীয় নেতা আহমাদুল্লাহ বলেছেন যে, নারী ফুটবলরা নিতান্ত গরিব ঘরের সন্তান তাই তাঁরা ফুটবল খেলছেন। তিনি বলেছেন, ‘কিছু পয়সার বিনিময়ে তাদের ইউজ করা হচ্ছে।’ গরিবি থেকে বের হতে খেলাধুলা করে তারকা হওয়ার চেষ্টা সারা দুনিয়াতেই আছে। এই নারী ফুটবলরাও যদি সে চেষ্টা করে থাকেন, সেটি নতুন কোনো ঘটনা নয়। তবে একই ভাবে সত্য যে দেশের লাখ লাখ মাদ্রাসা ছাত্রের অধিকাংশই গরিব ঘরের সন্তান। লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে দুমুঠো ভাতের নিশ্চয়তার আশায় দেশের অগুনতি মা-বাবা তাঁদের সন্তানদের মাদ্রাসায় দিয়ে থাকেন। যদি সারাদেশে স্কুল ফিডিং চালু করে বাচ্চাদের পুষ্টিকর দুটো খাবার পেটপুরে খাওয়ানো যেত, তাহলে এই বাচ্চাদের অনেকেই হয়তো মাদ্রাসায় না পড়ে স্কুলে পড়তে আসতো।
তিনি যেভাবে ভাবছেন যে এই খেলা আসলে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, সেটি আদতে তাঁর নিজস্ব আশংকা মাত্র। খেলাকে জাস্ট খেলা হিসেবেই দেখেন। আমরা মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সব ধর্মের মানুষের দেশ। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টি, সিপিবি, বাসদের দেশ। শুধু খেলাধুলাই এই দেশের মানুষকে মাঝেমাঝে একসাথে করতে পারে। এখানে বাগড়া দেওয়ার কিছু নেই। তবে আমরা ভুলে যাইনি যে মোদীর সফর বন্ধের নামে শিশু কিশোরদের উস্কে দিয়ে পুলিশের গুলির মুখে সঁপে দিয়ে তারা অন্যের বউরে নিয়ে ৫০১ নম্বর কক্ষের ছিটকিনি এটে শুয়ে পড়েছিলেন। কে কারে ‘ইউজ’ করে!
দুমুঠো ভাতের আসায় আসা অপ্রাপ্তবয়স্কদের তারা যেভাবে রাজপথে পুলিশের সামনে নামিয়ে দেন, সেই ‘পলিটিক্যাল যুদ্ধ’ বন্ধ করাটা, তার চিহ্নিত ‘সাংস্কৃতিক যুদ্ধ’ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার চাইতে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। দুমুঠো ভাতের আসায় মাদ্রাসায় পড়তে আসা শিশু কিশোরদের উপর যে যৌন নির্যাতনের খবর আমরা পাই, সেসব বন্ধ করার চেষ্টায় যদি তিনি উচ্চকণ্ঠ হন, তাহলে বরং জরুরি কাজ করা হবে। কলসিন্দুর গ্রামের হতদরিদ্র ১০ জন কিশোরীকে এতো ভয় পাওয়ার দরকার নেই। লেখক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট