শিরোনাম
◈ এশিয়া কাপসহ বড় আস‌রে পা‌কিস্তা‌নের বিরু‌দ্ধে খেল‌বে ভারত, ত‌বে দ্বিপাক্ষীক‌ ক্রিকেট নয়  ◈ এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বড় সুখবর! ◈ আমার স্ত্রীকে ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা ধর্ষণ করেছিলেন: ভারতের অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অমিত কুমার ◈ এবার বিমানের চাকা চুরি করে অন্য এয়ারলাইনসে বিক্রি! ◈ সাত কলেজ নিয়ে গঠিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষা শুরু ◈ কোরআন ছুঁয়ে শপথ, ইসলাম কী বলে? ◈ যে মন্তব্যের কারণে ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের মুখে বরখাস্ত মার্কিন মুখপাত্র শাহেদ গোরেশি ◈ নির্বাচনি জোট গঠনের চেষ্টায় জামায়াত: অধিকাংশ ইসলামি দলের না ◈ ইসরা‌য়েল‌কে আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিষিদ্ধের দাবি এআইএসির ◈ বিকা‌লে সাফ ফুটব‌লে শ‌ক্তিশালী ভারতের মুখোমুখি  বাংলাদেশ নারী দল

প্রকাশিত : ২২ আগস্ট, ২০২৫, ১০:৩০ দুপুর
আপডেট : ২২ আগস্ট, ২০২৫, ১২:১৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভারত ও তাদের এজেন্টদের বিষয়ে যে সতর্কবার্তা দিলেন আমান আযমী

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বলেছেন, আজ ২২ আগস্ট – এই দিনটি আমার ও আমার পরিবারের জন্য একটি ভয়াল দিন। ২০১৬ সালের এই দিনে ভারতের নির্দেশে ভারতের গোলাম সরকারের হুকুমে ডিজিএফআই এর লোক সাদা পোষাকে আমাকে আমার বাসা থেকে অপহরণ করে নিয়ে দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর তথাকথিত ‌‘আয়নাঘরে’ বন্দি করে রেখেছিল। 

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

আযমী বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের পর ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন হলে ৭ আগস্ট রাতে আমাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, সম্প্রতি আধিপত্যবাদী ভারত ও তাদের দেশ-বিদেশের এজেন্টরা আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ক্রমাগত নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। তাদের এসব নির্লজ্জ মিথ্যা প্রচারণার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার নেই। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার পরিবর্তে ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে এ ধরণের নির্লজ্জ মিথ্যাচার হলুদ সাংবাদিকতা ও বিকৃত মানসিকতার প্রতিফলন।    

সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ভারতের আনন্দ বাজার পত্রিকা এবং বাংলাদেশে ভারতের এজেন্ট মনজুরুল আলম পান্নার এসব বক্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই যে, আমার বিরুদ্ধে যা কিছু বলা হয়েছে তা শতভাগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কোথাও কোনো সূত্র বা ঘটনার সামান্যতম প্রমাণ ছাড়াই এ ধরণের বক্তব্য একদিকে সেনাবাহিনীর মাঝে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা এবং অপরদিকে আমার ব্যাপারে জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে করার এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র ছাড়া এটা আর কিছুই নয়। 

তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় ভারত ও তার দালালদের বলতে চাই যে, আমি কোনো দল গঠন করিনি এবং দল করার পরিকল্পনা তো দূরের কথা, দল করার কথা চিন্তাও করিনি। তার বক্তব্য, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে কার্যতঃ নিষ্ক্রিয় করে তিনি একটি ইসলামিক রেভ্যুলেশনারি আর্মি গঠনের চেষ্টা করছেন। এছাড়া, আনসার আল ইসলামের জঙ্গিদের দিয়ে ভারতে হামলা চালানোর জন্য আত্মঘাতী বাহিনী তৈরি করা হচ্ছে এসব পাগলের প্রলাপ। 

তিনি আরও বলেন, এই মিথ্যাবাদীকে আমি প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, তার বক্তব্যের স্বপক্ষে প্রমাণ হাজির করতে। তা করতে ব্যার্থ হলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, এই কুলাঙ্গারের বক্তব্য শোনার পূর্বে আনসার আল ইসলাম নামটিই আমি শুনিনি, এবং এখন পর্যন্ত এ ধরণের কোনো সংগঠণ আদৌ আছে কিনা এ ব্যাপারে আমার সামান্যতম ধারণা নেই। 

আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বলেন, আনন্দ বাজার পত্রিকার বরাত দিয়ে এই কুলাঙ্গার বলছে, সেনাবাহিনীকে ইসলামিকরণের প্রবল চেষ্টা চালাচ্ছে মৌলবাদীরা। … ঐ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে পাকিস্তানপন্থি অবসরপ্রাপ্ত ও বরখাস্ত হওয়া সেনা অফিসারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন আযমী। পাকিস্তানী গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এর অফিসাররা নিয়মিত বাংলাদেশে যাচ্ছেন। তারা ঢাকার মহাখালী ডিওএইচএস এলাকায় একটি অফিস তৈরি করেছেন। এসব বক্তব্য আমার ও আমার প্রাণপ্রিয় সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার ভারতের অপচেষ্টার অংশ বলে নিশ্চিতভাবে বলা যায়। 

তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই যে, আমাকে যারা পাকিস্তানপন্থি বলে অপপ্রচার করে, তারা ভারতের পোষ্য, দালাল, দোসর ও এজেন্ট। আমি খাঁটি বাংলাদেশি – আমার প্রতিটি শিরা, উপশিরা, অণু, পরমানু, লোমকুপ, রক্তবিন্দু খাঁটি দেশপ্রেমিক বাংলাদেশি। সেনাসদর থেকে এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানানো উচিৎ এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ। আমি এ ব্যাপারে সেনাপ্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

তিনি আরও বলেন, ভারতের এই দালাল প্রতিবেদনটি নিয়ে নিজেই সন্দিহান। কারণ সে নিজেই বলেছে, এই রিপোর্ট কতখানি সত্য। উপরন্তু, সে বারবার বলছে, যদি সত্য হয়েও থাকে। সে নিজেই আরও বলছে, আমরা পুরোপুরি সত্য হিসেবে সম্পূর্ণটা হয়তো গ্রহণ করছি না। তার সকল বক্তব্যই যে কল্পিত তা এসবের দ্বারাই প্রমাণিত হয়ে যায়। 

সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলেন, এই পাপিষ্ঠ মনজুরুল আলম ইউটিউবে অপর এক বক্তব্যে ভারতের একই পত্রিকার আরেকটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করে বলেছে, নানা ঘটনার নেপথ্যে সাবেক তিন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা – কোন দিকে নিতে চান তারা বাংলাদেশকে? এই বক্তব্যে আমার সম্পর্কে সামান্যতম কোনো অভিযোগও আনন্দ বাজার বা এই কুলাঙ্গার আনতে পারেনি যার সঙ্গে এই শিরোনামের দূরতম কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে। শুধুমাত্র আমাকে হয়রানি করার জন্য এবং মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ভিউ বাড়ানোর জন্য ন্যাক্কারজনকভাবে এই ধরণের মিথ্যা প্রচার করতে ভারতের গোলামদের লজ্জাও করে না।  

সর্বশেষ তিনি বলেন, আমার প্রায় ৩০ বছরের সামরিক জীবনে আমার পেশাগত যোগ্যতা ও দক্ষতা, মানবিক গুণাবলী এবং দেশপ্রেমের যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে এসেছি, তা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল জেনারেলসহ সব অফিসার এবং সর্বস্তরের সেনাদের কাছে জানা আছে। দেশবাসীও আমার দেশপ্রেম সম্পর্কে ভালো করেই জানেন। ভারতের শত্রুসুলভ আচরণের বিরুদ্ধে আমার বলিষ্ঠ অবস্থানই আমি তাদের চক্ষুশূল হবার কারণ। ভারতের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠের আওয়াজ রুখে দেওয়ার জন্যই আমাকে নিয়ে তাদের এই চক্রান্ত।

আমি ভারতের আনন্দ বাজার পত্রিকা কর্তৃপক্ষ এবং মনজুরুল আলম পান্নাকে এই ধরণের নির্লজ্জ মিথ্যাচারের জন্য শর্তহীন ক্ষমা চাইবার জন্য অনুরোধ জানাই। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সর্তবার্তা দিয়েছে আযমী। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়