নাদিম মাহমুদ: দেশের ভেতরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক চাকরি থেকে ইস্তেফা দিতে চাইলে সহজে দিতে পারেন, কিন্তু শিক্ষাছুটি নিয়ে দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষায় যাওয়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার নিয়ম আর দেশের ভেতরে অবস্থানরত শিক্ষকদের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার মধ্যে বিস্তর তফাৎ রয়েছে। সাধারণত বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উচ্চশিক্ষায় বিদেশে অবস্থানকালে ‘স্ববেতেনে’ যান। অর্থাৎ দেশে সরকার তাকে নিয়মিত বেতন-ভাতাদি দিয়ে থাকে। এই অর্থ হালালের জন্য শর্ত থাকে যে ‘উচ্চশিক্ষা’ শেষে যে সময়টুকু বিভাগের বাইরে অবস্থান করেছিল, সেই সময়টুকু তাকে কর্মঘণ্টায় ফিরে দিতে হবে।
এখন কেউ যদি হঠাৎ চাকরি ছেড়ে দেয়ার ইচ্ছে পোষণ করে কিংবা নির্ধারিত ছুটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান না করে সেই ক্ষেত্রে ‘তাকে সুদাসলে এই বেতন-ভাতা’ প্রাপ্ত অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে ফেরত দিতে হবে। এখন কেউ আজই আবেদন করল চাকরি থেকে ইস্তেফা দেওয়ার জন্য আর তা মঞ্জুর হয়ে যাবে এমনটা নয়। এই বিষয় নিঃসন্দেহে সিন্ডিকেটে যাবে, যা সময় সাপেক্ষ বিষয়। এর বাইরে তার জন্য ইস্যু করা No objection certificate সংশ্লিষ্ট দেশের ভিসায় ব্যাপক প্রভাব ফেলে। আলোচিত সেই জাবি শিক্ষক যদি এখন আমেরিকায় স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদনও করে থাকে তার জন্য তাকে বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে ‘ভিসা ওয়েভারের’ জন্য আবেদন করতে হবে। সেটি করতে না পারলে তার স্থায়ীভাবে বসবাসের বা গ্রিনকার্ডের আবেদন করা কঠিন।
এখন জাবিতে তদন্তনাধীন বিষয়ে কোনো সুরাহা না পর্যন্ত ওই শিক্ষককে বাংলাদেশ সরকার তাকে ‘বাংলাদেশে প্রয়োজন নেই’ এমন মর্মে সুপারিশ করবে কি না সেটা তাদের বিবেচনার বিষয়। আর সম্ভবত এসব জটিলতার বিষয় ভেবে তিনি তার সেই আলোচিত পোস্ট ‘হাইড/সরিয়ে’ রেখেছেন। তবে ফেসবুকে হিপোক্রেসি দেখিয়ে যে শিক্ষক ‘সাধারণ মানুষদের’ মনে যে প্রতিবাদের সুরতান দেখিয়েছেন তার জন্য তাকে ক্ষমা চাওয়া উচিত। রাষ্ট্রের এই সংকটকালীন সময়ে ‘সাধারণ মানুষের’ সমর্থন পাওয়াকে পুঁজি করে উনার যে ‘স্বেচ্ছায় চাকরির ইস্তেফাপত্র’ দেওয়ার কৌশল তা ধিক্কারযোগ্য। যারা এখনো মনে করেছেন, ওই শিক্ষক ‘ইনসাফের’ সহিত চাকরি থেকে সরে যেতে চান, তাদের বলে রাখিÑ তাকে একদিন এই রাষ্ট্রের কাছে জবাবদিহি করতে হবে, বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। ২৬-৭-২৪। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :