শিরোনাম
◈ চাঁদের মাটি খুঁড়ে ‘বিশেষ’ নমুনা নিয়ে ফিরছে চ্যাং ◈ প্রধানমন্ত্রী সেন্টমার্টিন নিয়ে যে আশঙ্কা করেছেন, সেটা অমলূক নয়: কাদের ◈ ঈদ উপলক্ষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির শুভেচ্ছা বিনিময় সোমবার ◈ আসুন ঈদুল আজহার ত্যাগের চেতনায় দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করি: প্রধানমন্ত্রী ◈ মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সেন্টমার্টিন পরিদর্শন বিজিবি মহাপরিচালকের ◈ প্রধানমন্ত্রীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নরেন্দ্র মো‌দি ◈ আজ জামারাতে পাথর নিক্ষেপ করবেন হাজিরা ◈ রাজধানীতে ঈদের দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা ◈ রাফাহ’য় হামাসের সফল হামলা, ৮ ইসরায়েলি সেনা নিহত ◈ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে পান্থপথে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত : ২৩ মে, ২০২৪, ১২:৫১ রাত
আপডেট : ২৩ মে, ২০২৪, ১২:৫১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বঙ্গবন্ধুকন্যার লড়াইয়ের গল্প বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে

দীপক চৌধুরী  

দীপক চৌধুরী: গ্রাম বাংলায় একটি প্রবাদ আছে কথা, ঘটনা সত্য কিন্তু সাক্ষী দুর্বল এ জন্য মামলা ডিসমিস। কিন্তু এ প্রবাদটা বিএনপির ক্ষেত্রে এমন যে, ঘটনা মিথ্যা স্বাক্ষীও মিথ্যা ফলে মামলা ডিসমিস। আসলে এটি এই দলটির ক্ষেত্রে মিলে গেলো। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অটোরিকশা চালকদের ওপর সরকার স্টিম রোলার চালাচ্ছে। অটোরিকশা বন্ধের মধ্য দিয়ে গরিবের আহার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে গরিবদের ওপর জুলুম চালাচ্ছে। কী রকম মিথ্যাচার! 

আসলে বাস্তবতা হচ্ছে যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব পরিস্থিতি ও দ্রব্যমূল্যের কারণে স্বল্পআয়ের মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে শুধু ঢাকা শহরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি দিয়েছেন। তবে ২২টি মহাসড়কে আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ থাকবে। অথচ এখানে কী রকম মিথ্যাচার করল বিএনপি। শুধু অটোরিকশা নয়, সরকার চালানোর লক্ষ্যে মানুষের কাক্সিক্ষত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা ইসু রয়েছে; সবকিছুই দেখতে হয় বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।  

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী  মোহাম্মদ আলী আরাফাত একটি চমৎকার কথা বলেছেন অত্যন্ত সহজ ভাষায়। তাঁর মতে, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যার লড়াইয়ের গল্প বিশ্বের কাছে তুলে ধরাই  হোক অঙ্গীকার’। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের অঙ্গীকার এটাই হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রতিমন্ত্রী। মোহাম্মদ আলী আরাফাত আরো বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার লড়াইয়ের ইতিহাস, ত্যাগের ইতিহাস, প্রতিকূল পরিবেশে লড়াই করে বিজয়ী হওয়ার ইতিহাস  গোটা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে। আবার পুনরায় জাগরণের গল্প আমরা তুলে ধরব।’ 

ইতিহাসের দিকে তাকালে তো বিস্মিত হতে হয়। দল গঠন করার নামে কীরকম চরিত্র সৃষ্টি করেছিলেন জিয়াউর রহমান তা এ প্রজন্মের অনেকেই জানে না। ইতিহাস থেকে জানা যায়, কুখ্যাত রাজাকার শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী করা ছাড়াও  জিয়ার মন্ত্রিসভায় ৫ জন রাজাকার মন্ত্রী ছিলেন। তারা মসিউর রহমান, মির্জা গোলাম হাফিজ, সামসুল হুদা চৌধুরী, শফিউল আলম ও আব্দুল আলিম। ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দের ১১ জুলাই পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে পাকিস্তানপন্থী জামায়াতে ইসলামী নেতা গোলাম আযম ঢাকায় ফিরে আসেন জিয়ার পরামর্শে। সেই যে আসা এরপর জিয়াউর রহমানের স্বার্থ ছাড়া আর কিছুই করতে হয়নি তার। শুরু করা হয় কীভাবে আওয়ামী লীগকে দেশ নির্মূল করা যাবে সেই পরিকল্পনা। কে না জানে জামায়াত-শিবিরের নৃশংসতার কথা।     

জিয়ার নির্দেশে ও পরিকল্পনায় বিশ^বিদ্যালয়-কলেজ  ক্যাম্পাসে রাজনীতির শক্তিতে খুনোখুনির মাত্রাও বেড়ে যায়। একসময় ছাত্রশিবিরের ‘রগ কাটা রাজনীতি’ বিভীষিকা ছড়িয়েছিল বিশেষ করে রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েসহ এসব দেশের কয়েকটি বিভাগের কলেজে। এ সংগঠনটি জামায়াতে ইসলামের অঙ্গ। মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতের হিংস্র ও নৃশংস চেহারা আমরা ভুলতে পারি না। সুতরাং এ দলটির অঙ্গ সংগঠন ভিন্ন আচরণ করবেই না। অন্যদিকে জিয়াউর রহমান রাজনীতিকে ‘ডিফিকাল্ট’ করে দেওয়ার  ঘোষণা দিয়েই নেমেছিলেন এবং একমাত্র টার্গেট ছিল আওয়ামী লীগ। পরবর্তীকালে বিএনপি-জামায়াত-জাতীয় পার্টির একমাত্র টার্গেট ছিল বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। ’৮৮ সালের চট্টগ্রামে জনসভা আর ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউর ২১ আগস্ট ছাড়াও বহুবার টার্গেট করা হয়েছিল। সবসময়ই অস্ত্র আর অর্থ ছিল বিএনপির হাতে। আর এ দলের বাই প্রডাক্টই ছিল জেনারেল এরশাদের জাতীয় পার্টি ও ছাত্রসমাজ। স্বৈরাচারের গুণগান কারা গায়, ওরা কে-কারা, কী  করে, কেন করে এদেশের মানুষ জানে। 

যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে ওরা এ দেশে রাজনীতি করবে কেন? যারা স্বাধীনতাবিরোধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে ওরা এদেশে রাজনীতি করবে কেন? সেই বিএনপি-জামায়াত যখন গণতন্ত্রের কথা বলে তখন গায়ে আগুন ধরারই কথা। গুম-খুন আর মানবাধিকার নিয়ে বিএনপি নামের দলটি যখন প্রতিদিনই নানান রকম অন্তঃসারশূন্য প্রলাপ করছে, সত্য-মিথ্যার মিশেলে বিভিন্ন গল্প জাতিকে শোনাচ্ছে তখনই বিস্মিত হতে হয়। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এক প্রতিবেদনে যখনই বাংলাদেশে র‌্যাবের এক সাবেক মহাপরিচালক ও সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কথা প্রচারিত করল তখনই  বিএনপি নেতাদের গদগদভাব দেখলাম। যেন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দিতে যাচ্ছে। অর্থাৎ দলটির নেতারা বোঝাতে চাইল তারা এতোদিন ধরে যা বলে আসছিল, এর প্রমাণই এটা। শুধু তাই নয়, বিএপি-জামায়াত কিছুদিন প্রতিটি আলোচনায় একমাত্র গুম-খুনের কাহিনি প্রচার করতেই থাকল। অবশেষে এদের ‘কলা’ দেখালো যুক্তরাষ্ট্র।

এদেশীয় যারা লাফালাফি করছেন, তাদের লজ্জা থাকা উচিত যে, কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী রাজাকার-আলবদরদের দলে ভিড়িয়ে মন্ত্রী-উপদেষ্টা করার পর মানবাধিকার নিয়ে কথা বলা মানে জাতির সঙ্গে মশকারী করা। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে যারা সহযোগিতা করেছিল, তারা সাধারণভাবে রাজাকার নামে কুখ্যাত হয়ে আছে। পাকিস্তানিদের সহযোগী আরও দুটি সংস্থার নাম ছিল আলবদর ও আলশামস। রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর সদস্যরা পাকিস্তানিদের দ্বারা সংঘটিত হত্যা, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি নানা অপকর্মে সহযোগিতা প্রদান করলেও দীর্ঘ ৫৪ বছরে তাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা  তৈরি করা সম্ভব হয়নি। এটাই প্রকৃত সত্য। অথচ এটা জরুরি। লেখক : উপসম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, কথাসাহিত্যিক ও ফিল্মমকোর

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়