শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ০৫:১৫ বিকাল
আপডেট : ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ০৫:১৫ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মুজিবনগর দিবস ও বাংলাদেশের দ্বিতীয় রাজধানী

মাহবুবুর রহমান

মাহবুবুর রহমান, ডেনমার্ক: ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুজিবনগর সরকার গঠন ছিল অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।বঙ্গবন্ধু কতৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর ১৯৭১ সালের ১০এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন করা হয়,এবং ১৭এপ্রিল তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার,মেহেরপুর মহকুমায়,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামের সাথে মিল রেখে বৈদ্যনাথতলা গ্রামের নামকরণ মুজিবনগর করে,মুজিবনগর সরকারের শপথ বাক্য পাঠ করা হয়।

মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাজউদ্দিন আহম্মেদ এছাড়াও এই সরকারের সাথে যুক্ত ছিল আরও অনেকে।

১৯৭০ সালে সরাসরি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়েই মুজিবনগর সরকার গঠন করা হয়,যেটি ছিল সস্পূন্ন বৈধ সরকার।সেই সময় জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে যে কোন ধারনের পদক্ষেপ গ্রহণ করার আইনানুগ ক্ষমতা ছিল এই সরকারের।

মুজিবনগর সরকার গঠিত না হলে বাঙালীদের স্বাধীনতা আন্দোলন  আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্নবাদী অথবা বিদ্রোহী হয়ে পড়ার সুযোগ হয়ে উঠতো।তাই মুজিবনগর সরকার গঠন ছিল অত্যান্ত সঠিক ও গুরুত্বপূর্ণ।

১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু সরকারের এক অসাধারণ সাংবিধান প্রণয়নের ভিত্তি ছিল স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণাপত্র,যা ১৯৭১ সালের ১০এপ্রিল ঘোষিত হয়।
মুজিবনগর সরকার গঠনের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের উপর প্রভাব ছিল অত্যান্ত সুদূর প্রসারী। এই সরকার যুদ্ধকালীন মুক্তিযুদ্ধ সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করেন,এবং বাংলাদেশকে এগারোটা সেক্টরে ভাগ করা হয়,এবং সশস্ত্র বাহিনী সহ মুক্তিবাহিনী গঠন করা হয়।

মুজিবনগর সরকার গঠনের মাধ্যমে বাঙালীদের সদ্য শুরু হওয়া সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ লাভ করে বিশাল ব্যপকতা,এবং শুরু হয় বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতার পক্ষে জনসর্মথন অর্জনে ব্যাপক সাড়া,অর্থাৎ স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বব্যাপী জনমত গঠনে মুজিবনগর সরকার গঠন ছিল একটা অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

সর্বপরি ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন করা ছিল একটা বাস্তাব সস্মত ও সময় উপযোগী এবং সাংবিধানিক পদক্ষেপ। যা বাঙালী জাতীয় জীবনে অন্যতম ও উজ্বল ঘটনা এবং একটা বিশেষ গুরূত্বপূর্ণ পদক্ষেপ

১৯৭২ সালে ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে মুজিবনগর সরকার পূর্ণতা লাভ করে,এবং বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি হিসাবে স্বাধীন বাংলাদেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

তাই মুজিব নগরকে বাংলাদেশের দিত্বীয় রাজধানী ঘোষণার করার মাধ্যমে,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর কর্মকে পৃথিবীর মানুষের কাছে আরও বিশাদভাবে তুলে ধরা সম্ভাব হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি জর্জ ওয়াশিংটনের নামানুসারে ওয়াশিংটন ডিসি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী। ভিয়েতনামের সস্মানীত বিল্পবী নেতা হো চি মিন এর নামানুসারে সায়গনের নাম পরিবর্তন করে নামকরন করা হয়েছে হো চি মিন সিটি। বিশ্বের অনেক দেশে জাতীয় নেতাদের নামে রাজধানীর নামকরণ করা হয়েছে এমনকি পুরো রাজ্যের নামও রাখা হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের রাজধানী নামও একজন রাষ্ট্রনায়কের নামে রাখা হয়েছে। এমনকি আমেরিকা নামটাও রাখা হয়েছে অভিযাত্রী  আমেরিগো ভেসপুচির নামে।

যেহেতু মেহেরপুর বৈদনাথতলার নাম জাতির  জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের নামানুসারে মুজিব নগর রাখা হয়েছে। এইক্ষেত্রে নগরীর নতুন নামকরণের বাবদ কোন খরচ লাগবে না।
আন্তর্জাতিক মহলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম,অবদান ও কাজকে পরিচিত করতে মুজিব নগরকে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বা বাংলাদেশ দ্বিতীয় রাজধানী করা হোক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়