সালেহ্ বিপ্লব: [২] সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, আপনি মার্চে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। এ বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ষড়যন্ত্র ছিলো; এখনো আছে। মার্চে দুর্ভিক্ষের কথা বলেছিলাম। কারণ ষড়যন্ত্রকারীরা ৭৫ সালে শিশু রাসেলকেও ছাড়েনি। আমার স্বপ্ন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র প্রতিবারই হচ্ছে, বার বার হচ্ছে। এবার যাতে নির্বাচন হতে না পারে, সেজন্য বিরাট ষড়যন্ত্র ছিলো। ২৮ অক্টোবরের কথা মনে করুন। সেদিনের নাশকতা হঠাৎ করে নয়, পরিকল্পিত। যারা নির্বাচন বানচালের পক্ষে, তারা যখন দেখলো নির্বাচন আটকাতে পারবে না; তখন তারা অন্য পরিকল্পনা করলো। তাদের আশা ছিলো জিনিসপত্রের দাম বাড়লে সেটা নিয়ে আন্দোলন করবে। বিটিভি
[৩] তিনি বলেন, যারা সরকার উৎখাত করতে চায়, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি তাদেরই কারসাজি। যারা জিনিসপত্র লুকিয়ে রেখে দাম বাড়ায়, এদেরকে গণধোলাই দেওয়া দরকার। সরকার করলে তো বলবে, সরকার এটা করেছে। তাই বিচারটা পাবলিকেরই করা উচিত।
[৪] মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে (এমএসসি) যোগদানের বিষয়ে জানাতে প্রধানমন্ত্রী এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। এবার সরকার গঠনের পর এটিই ছিলো তার প্রথম বিদেশ সফর এবং প্রথম সংবাদ সম্মেলন।
[৫] গণভবনে সকাল সাড়ে দশটায় শুরু হয় সংবাদ সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রী ১৫ মিনিটের লিখিত বক্তৃতায় তার মিউনিখ সফরের বৃত্তান্ত তুলে ধরেন। এরপর অংশ নেন প্রশ্নোত্তর পর্বে।
[৬] লিখিত বক্তব্যে শেখ হাসিনা জানান, মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জার্মানী গিয়েছিলেন তিনি। তিনি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পাশাপাশি তিনি বেশ কয়েকজন বিশ্ব নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন।
[৭] প্রধানমন্ত্রী জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি এবং ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
[৭.১] জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির জেলেনস্কি এবং আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় শেখ হাসিনা যুদ্ধ, বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গাজায় হামলা বন্ধের আহ্বান জানান।
[৭.২] ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এবং যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বর্তমান পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী লর্ড ক্যামেরন এবং জার্মান ফেডারেল অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন মন্ত্রী সভেনজা শুলজেও শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
[৭.৩] ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ব্যবসা করার জন্য বাংলাদেশ ও ভারতীয় মুদ্রা টাকা ও রুপি ব্যবহারের ওপর জোর দেন।
[৭.৪] উইমেন পলিটিক্যাল লিডার (ডব্লিউপিএল) এর প্রেসিডেন্ট সিলভানা কোচ-মেহরিন, সিনিয়র ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ডেভেলপমেন্ট পলিসি অ্যান্ড পার্টনারশিপ অ্যাক্সেল ভ্যান টর্টসেনবার্গ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক পেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসিস, মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট এবং যুক্তরাজ্যের সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী ড. স্যার নিক ক্লেগও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদাভাবে সাক্ষাৎ করেন।
[৮] শেখ হাসিনা মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে ‘ফ্রম পকেট টু প্ল্যানেট: স্কেলিং আপ ক্লাইমেট ফাইন্যান্স’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনায় বক্তৃতা ও ছয়টি প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির জন্য জলবায়ু অর্থায়ন ছাড় করতে এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করে সে অর্থ জলবায়ু তহবিলে জমা দিতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।
[৯] তিনি মিউনিখের বার্গারহাউস গার্চিং হোটেলে জার্মানি ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংবর্ধনায়ও যোগ দেন।
আপনার মতামত লিখুন :