শাহীন খন্দকার: [২] ’ওয়েসিস’ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে অবস্থিত একটি মাদকাসক্তি নিরাময় ও মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শ কেন্দ্র। এটি বাংলাদেশ পুলিশের একটি সমাজ কল্যাণ মূলক উদ্যোগ। এখানে গত ৮ মাসে ৫০ জন মাদকাসক্ত রোগী সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। এমন তথ্য জানালেন, প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক গোলাম মোর্শেদ।
[৩] পরিচালক মোর্শেদ বলেন, সম্পূর্ণ অলাভজনক এ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হচ্ছে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে। দেশের অত্যাধুনিক মাদক নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র এটি। সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত অত্যন্ত নান্দনিক, উন্নত ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয় এখানে।
[৪] পরিচালক আরো বলেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের প্রচেষ্টায় প্রকল্পটির বাস্তবায়ন করেছেন, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমানসহ একদল চৌকস দক্ষ কর্মীবাহিনী। এখানে মাদকাসক্তদের উন্নত বিশ্বের অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা সেবা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করছে ওয়েসিস। বাংলাদেশ পুলিশের দায়বদ্ধতা থেকেই মূলত ওয়েসিস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যা পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে ইতোমধ্যে সাফল্যের মুখ দেখেছে। এখানে বিনামূল্যে কাউন্সিলিংও করা হচ্ছে।
[৫] স্বনামধন্য টেকনিশিয়ান ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে কেন্দ্রটি। তুলনামূলক কম খরচে বিশ্বমানের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এখানে। তাই এখন থেকে মাদকাসক্তদের উন্নত চিকিৎসার জন্য আর বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন নেই
[৬] ৬০ শয্যার এই হাসপাতালটিতে রয়েছে ২২টি কক্ষ। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১৬টি কক্ষে ৪৬টি বেড এবং মহিলাদের জন্য ৬ কক্ষে ১৪টি বেড রয়েছে। ডাবল কেবিনে ২৮টি, ট্রিপল কেবিনে ১৫টি এবং জেনারেল ওয়ার্ডে আছে ১১টি বেড। এছাড়া জেনারেল ট্রিপল বেড আছে ছয়টি। জেনারেল ওয়ার্ড ছাড়া সব ওয়ার্ড বা কক্ষ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে বিনামূল্যে ২৪ ঘণ্টা মেডিসিন সেবাসহ টেলিমেডিসিন সেবা প্রদান করা হয়, যার নম্বর ০১৯৩০৪০৪০৪০।
[৭] এখানে প্রতি ফ্লোরের সিঁড়িতে আছে বিশেষ লকের ব্যবস্থা। কোনো রোগী ইচ্ছা করলেই এক ফ্লোর থেকে অন্য ফ্লোরে চলাচল করতে পারবেন না। কেন্দ্রটির ভবনের ছাদে রয়েছে বাগান। ছাদবাগানে প্রাকৃতিক পরিবেশে খোলা আকাশের নিচে রোগীরা বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইয়োগা ও মেডিটেশন করেন। ছাদবাগানের পাশে রয়েছে ব্যায়ামাগার। ষষ্ঠ তলায় আছে নার্সিং স্টেশন। পঞ্চম তলায় বিশেষ কেবিন ও ইনডোর গেমসের ব্যবস্থা। সেখানে আছে টেবিল টেনিসসহ নানা ধরনের খেলার সরঞ্জামাদি। আছে লাইব্রেরিও। চতুর্থ তলায় রয়েছে ফায়ার ফাইটিং ব্যবস্থা, সাধারণ ওয়ার্ড এবং সাধারণ কেবিন। ভবনের তৃতীয় তলায় আছে কেবিন ব্লক, ডাইনিং ও বিশেষ নার্সিং স্টেশন। দ্বিতীয় তলা প্রশাসনিক ব্লক। রয়েছে প্যাথলজি বিভাগ। আছে সাইকোলজি কাউন্সিলিং ও ফ্যামিলি কাউন্সিলিং এবং স্যাম্পল কালেকশন রুম।
[৮] ওয়েসিসের জনবল ৮৫ জন। এরমধ্যে এসপি পদমর্যাদার একজন পরিচালক, একজন অতিরিক্ত পরিচালক, ডাক্তার, নার্সসহ আরো জনবল রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি আধুনিক পুলিশের আইকন খ্যাত ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমানের সার্বিক তত্তাবধানে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সম্পাদনা: মাজহারুল ইসলাম