শিরোনাম
◈ দিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণে হতাহত, ভারতের পাশে থাকার বার্তা বাংলাদেশের ◈ প্রবাসীদের বড় সুখবর দিল ওমান সরকার ◈ জেদ্দায় স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ–সৌদি হজ চুক্তি: ৭৮ হাজার ৫০০ জনের কোটা নির্ধারণ ◈ ৪৯তম বিশেষ বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ ◈ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর পেলেন ‘সি’ গ্রেড: গ্লোবাল ফাইন্যান্সের মূল্যায়ন ◈ স্বর্ণের দাম আবারও বাড়ল: দেশে ২২ ক্যারেটের ভরি এখন ২ লাখ ৮ হাজার টাকার বেশি ◈ সীমান্ত পাড় হওয়ার চেষ্টা, পুরান ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে গুলি করা সেই দুই শুটার গ্রেপ্তার ◈ ২২ বিচারপতিকে স্থায়ী নিয়োগ ◈ বিএনসিসি মানে আত্মমর্যাদা ও শৃঙ্খলা: প্রধান উপদেষ্টা  ◈ ‘অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দেখলেই ব্রাশফায়ার’ করে হত্যার নির্দেশ দিলেন সিএমপি কমিশনার

প্রকাশিত : ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ০৮:২০ রাত
আপডেট : ১২ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দেখলেই ব্রাশফায়ার’ করে হত্যার নির্দেশ দিলেন সিএমপি কমিশনার

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে গুলি করে একের পর এক হত্যার ঘটনায় এবার আগ্নেয়স্ত্র বহনকারী এবং অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দেখামাত্র সাবমেশিন গান (এসএমজি) থেকে ব্রাশফায়ার করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ওয়ারল্যাস সেটে সিএমপির সব সদস্যদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক মৌখিক নির্দেশনায় তিনি টহল ও থানা পুলিশকে একযোগে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত কয়েক দফায় তিনি একই নির্দেশনা দেন বলে নিশ্চিত করেছে সিএমপির একাধিক সূত্র।

গত ৫ নভেম্বর নগরীর বায়োজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়া এলাকায় চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর জনসংযোগ চলাকালে সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা যান তালিকাভুক্ত আরেক সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা। গুলিতে আহত হন এরশাদ উল্লাহ নিজেও। সরোয়ারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্র, হত্যাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে।

এর পরদিন আবার একই এলাকায় গুলিতে আরও একজন আহত হন।  

এসব ঘটনা ছাড়াও চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, 'অস্ত্রবাজী' ও হত্যার ঘটনার মূল আসামিদের কেউ এখনো ধরা পড়েননি। সন্ত্রাসীরা সক্রিয় থাকলেও পুলিশ ঘটনা রোধে আগাম কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। কাজে আসছে না গোয়েন্দা নজরদারি।

পুলিশ বলছে, পাহাড়ি এলাকা থেকে অস্ত্রধারীরা এসে নগরে এসব ঘটনা ঘটিয়েছে। এসব ক্ষেত্রে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করছেন বন্দরনগরীর সচেতন সমাজ।

এর মধ্যেই জানা গেল সিএমপি কমিশনারের নতুন আদেশ।

সিএমপির ৪ জোনের অন্তত ৫ কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে 'ব্রাশফায়ারের' আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, যেখানে সিএমপি কমিশনার বলেছেন, 'শটগান হবে না, চায়না রাইফেলও বাদ, এখন এসএমজি ব্রাশফায়ার মুডে থাকবে।'

বেতারবার্তার বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপি কমিশনার তা স্বীকার করে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দেখামাত্র ব্রাশফায়ার নিরস্ত্র জনসাধারণের জন্য নয়। যার হাতে অস্ত্র নেই, তার ওপর তো আর এসএমজি ইউজ করব না।'

'সন্ত্রাসী, অস্ত্রধারী যারা তাদের জন্য এই নির্দেশনা। আমার এলাকায় ঢুকে প্রকাশ্য দিবালোকে একটা খুন করে গেল (বায়েজিদের চালিতাতলী)। এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে তারা যেন আর সাহস না পায়। এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে চট্টগ্রাম নগরে ঢোকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। তারা যেন স্বপ্নেও এটি কল্পনা করতে না পারে, সেজন্যই এই ব্যবস্থা,' বলেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আপনাদের নিশ্চিত করি আওয়ামী লীগের যারা ঝটিকা মিছিল করে এটা তাদের ওপর প্রয়োগ হবে না। তাদের গ্রেপ্তার করব, আদালতে সোপর্দ করবো। আওয়ামী লীগের যারা নিরস্ত্র লোক, তাদের ব্রাশফায়ার করতে বলিনি। এটার যেন অপব্যাখ্যা না হয়।'

'আমরা করছি চালিতাতলী বায়েজিদে কুখ্যাত সন্ত্রাসী যারা লোক মারল, তাদের ঠেকানোর জন্য। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলি করে মেরা ফেলা হবে,' ডেইলি স্টারকে বলেন কমিশনার হাসিব আজিজ।

তিনি আরও বলেন, 'সাজ্জাদ বাহিনী, ইয়াসিন বাহিনী, বার্মা সাইফুল ইত্যাদি যারা আছে, যারা কথায় কথায় মানুষ মারে তাদের জন্য এসএমজি ব্রাশফায়ার মুডে থাকবে।'

বেতারবার্তায় যেকোনো পরিস্থিতি এবং নাশকতা এড়াতে টহল টিমগুলোকে এসএমজি ছাড়াও, শিশা শটগান, দুইটি গ্যাস গান এবং টিম ইনচার্জকে নাইন এমএম পিস্তল বহন করতে বলা হয়েছে। এছাড়া স্থায়ী চেকপোস্ট সাতটি থেকে বাড়িয়ে ১৩টি করতে আদেশ দিয়েছেন কমিশনার।

বার্তায় পুলিশ সদস্যদের দণ্ডবিধি ৯৬ থেকে ১০৬ পর্যন্ত, আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার সব পুলিশ অফিসারের আছে বলে আবারও মনে করিয়ে দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার এবং সব দায় কমিশনার বহন করবেন বলে জানান।

কমিশনারের এ ধরনের নির্দেশনায় পুলিশ সদস্যদের মধ্যে পক্ষে-বিপক্ষে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পুলিশ সদস্য দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, অভিযানে অস্ত্র বহন করার নির্দেশনা নতুন করে দিলেও অনেক দিক বিবেচনায় বিশেষ করে পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পুলিশকে কাজ করতে হয়।

'নির্দেশনা থাকলেও আমরা কেউ চাই না অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কারও মৃত্যু হোক। আবার গুলি চালালে, এরপর গুলি চালানো সদস্যকে নানা আইনি তলবের মুখোমুখি হতে হয়,' বলেন তারা।

গত ১৩ আগস্ট আওয়ামী লীগের মিছিলকে কেন্দ্র করে অভিযানে গিয়ে বন্দর থানার এক পুলিশ কর্মকর্তাকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় পুলিশের কোনো টহল দল কিংবা পুলিশি অভিযানের সময় কেউ অস্ত্র বের করলে আত্মরক্ষায় দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন সিএমপি কমিশনার। উৎস: ডেইলি স্টার।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়