ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো বলেছেন, বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে অবৈধ অভিবাসনের মাধ্যমে বিদেশে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের প্রবণতা রয়েছে। এসব কর্মকাণ্ড পাসপোর্টের সূচকে প্রভাব ফেলে। তিনি বলেন, ইতালিতে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া অবস্থান করা আরও বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এ সময় আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। ‘সম্পর্কের বন্ধন সুদৃঢ়করণ : বাংলাদেশ ও ইতালির ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক ওই সেমিনারের আয়োজন করে বিআইআইএসএস।
বাংলাদেশ থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইতালিতে অবৈধ অভিবাসনের প্রসঙ্গ টেনে আন্তোনিও আলেসান্দ্রো বলেন, ২০২৫ সালে ১৮ হাজারের বেশি বাংলাদেশি নৌকায় লিবিয়া হয়ে ইতালি পৌঁছেছেন এবং আশ্রয় চেয়েছেন। এসব কারণে বাংলাদেশের পাসপোর্টের বৈশ্বিক অবস্থান খুব নিচে। এটা হতাশাজনক।
ইতালির রাষ্ট্রদূত বলেন, নথিপত্র জালিয়াতির ব্যাপকতা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করতে পারে এবং দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে পারে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সরকারি নথিপত্র নির্ভরযোগ্য ও সঠিক পেতে চান। তিনি বলেন, যখন কোনো বিদেশি বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে আসেন, তিনি আশা করেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের দেওয়া সনদগুলো আসল হোক। এদেশে খুব সহজে নোটারি পাবলিকের কাছে গিয়ে টাকার বিনিময়ে যে কোনো কাগজ বা নথি তৈরি করা যায়। এটি দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
আন্তোনিও আলেসান্দ্রো বলেন, আমরা চাই, অন্যরা যেন ১৫ হাজার ইউরো (প্রায় ২০ লাখ টাকা) খরচ করে বিপজ্জনক পথে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা না করে। এ সময় তিনি জানান, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি শিগগিরই বাংলাদেশ সফরে আসবেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ইতালি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি, আধুনিকায়ন ও সংস্কারের পক্ষে। আমরা অধ্যাপক ইউনূস ও তাঁর সরকারের প্রতি সমর্থন জানাই এবং ফেব্রুয়ারিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করি।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দা রোজানা রশিদ।
সূত্র: সমকাল