শিরোনাম
◈ ছাত্রলীগ পরিচয়ে নির্যাতনের অংশীদার হতেন ‘ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা’, দিলেন অনেকের পরিচয়: আবদুল কাদেরের ফেসবুক পোস্ট ◈ সি‌লেট স্টে‌ডিয়া‌মে হ‌বে বাংলা‌দেশ - নেদারল্যান্ডস সিরিজের সব ম‌্যাচ ◈ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন থেকে সরকার পতন: এক বছরে বৈষম্য কতটা দূর হলো? ◈ ইয়েমেন উপকূলে শরণার্থীবোঝাই নৌকাডুবি, ৫৪ লাশ উদ্ধার ◈ ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রাসী নীতি আ‌মে‌রিকার  রাজ‌নৈ‌তিক ঝু‌কি বাড়া‌চ্ছে: অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত ◈ প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এনডিএ: কেন, কিভাবে, কতটা যৌক্তিক? ◈ ৭ ট্রিলিয়ন ডলারের হালাল অর্থনীতির অংশীদার হতে চায় বাংলাদেশ: আশিক চৌধুরী ◈ যশোরে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে  বিএনপির ৬ নেতা, কর্মীকে বহিঃস্কার ◈ জুয়ার আসর থেকে ইউনিয়ন জামাতের সভাপতি ও ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার ১৪ ◈ ৬০০০ রানের মাইলফলকে জো রুট

প্রকাশিত : ৩০ জুলাই, ২০২৫, ১১:৩৪ রাত
আপডেট : ০৪ আগস্ট, ২০২৫, ১১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রথম পর্বে ৬২ বিষয়ে ঐকমত্যে রাজনৈতিক দলগুলো, তালিকা প্রকাশ করলো কমিশন

প্রস্তাবিত বিভিন্ন সংস্কার পদক্ষেপ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে প্রথম পর্বে ৬২টি বিষয়ে ‘ঐকমত্যে’ পৌঁছার কথা বলেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

দ্বি-কক্ষ আইনসভা, রাষ্ট্রপতির অভিশংসন, নারীর আসন বাড়িয়ে ১০০তে উন্নীত করা, জুলাই আন্দোলনে ‘গণহত্যা’ ও ভোট ‘জালিয়াতির’ অভিযোগে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করা ও ‘উপযুক্ত’ ব্যবস্থা নিতে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের বিষয়ে দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছেছে বলে তুলে ধরা হয়েছে দলগুলোর কাছে পাঠানো এ তালিকায়।

প্রথম পর্বে ঐকমত্য হওয়া এসব বিষয়ের মধ্যে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কমিশনের দ্বিতীয় দফা সংলাপে আলোচনা চলমান রয়েছে। যেমন- সংবিধান সংশোধন করে দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা করার বিষয়ে ৩০টি দল একমত হয়েছে। তবে উচ্চ কক্ষের গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলমান। আবার সংসদে নারী আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ১০০ করার ব্যাপারে নীতিগতভাবে একমত হয়েছে ১৯টি দল। এটি চূড়ান্ত করতে দ্বিতীয় দফাতেও দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে কমিশন।

প্রথম পর্বে আলোচনা হওয়া ১৬৬টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে ৬২টির বিষয়ে ঐকমত্য হওয়ার এ তালিকা ঐকমত্য কমিশন বুধবার আলোচনায় অংশ নেওয়া দলগুলোকে পাঠিয়েছে।

লেবার পার্টির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আমরা প্রথম পর্বে যে ৬২ বিষয়ে প্রায় একমত হয়েছি- এ সংক্রান্ত তালিকা হাতে পেয়েছি।"

এর আগে বিফ্রিংয়ে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, “আজকের (বুধবার) মধ্যে আমরা ঐকমত্যের ভিত্তিতে যেসব বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে, তার একটি তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে দেব। আশা করছি আগামীকাল আমরা একটি সমন্বিত ও গ্রহণযোগ্য খসড়া সনদ সকল দলের কাছে তুলে দিতে পারব।”

রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে গত অক্টোবরে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে সেগুলো নিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা এবং বাস্তবায়নের রূপরেখা ঠিক করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা করা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের মতামত জানতে চায় ঐকমত্য কমিশন। দলগুলোর মধ্যে ৩৩টি তাদের মতামত দেয়।

এরপর ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত দলগুলোর সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ের সংলাপ শেষ করে কমিশন।

বুধবার দলগুলোর কাছে পাঠানো ৬২টি বিষয়ে ঐকমত্য হওয়ার এ তালিকায় বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় এসব বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে কতগুলো দল একমত হয়েছে সেটিও তুলে ধরা হয়েছে এতে।

রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ ২২তম দিনে গড়িয়েছে বুধবার। এদিন রাষ্ট্রের মূলনীতি, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্বের কাঠামোসহ অমীমাংসিত সাত বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে কমিশন।

বৈঠকে আরও ছয়টি বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। সেগুলো হল- সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান; রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব [অনুচ্ছেদ ৪৮(৩)]; রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, ইলেকটোরাল কলেজ ইত্যাদি; উচ্চকক্ষের গঠন, সদস্য নির্বাচনের পদ্ধতি, এখতিয়ার ইত্যাদি; নাগরিকের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ সম্পর্কিত প্রস্তাব; রাষ্ট্রের মূলনীতি।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত ঐকমত্য কমিশন সংস্কার কাজ এগিয়ে নিতে একটি জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে যা জুলাই মাসের মধ্যে শেষ করতে চায়।

দ্বিতীয় দফার আলোচনায় কমিশনের ২০টি প্রস্তাবের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১২টি বিষয়ে ঐকমত্যে এসেছে রাজনৈতিক দলগুলো বলে আগে জানিয়েছিলে কমিশন।

প্রথম পর্বে ঐকমত্য হওয়া বিষয়ের তালিকা

দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে সংবিধান সংস্কারে ১৮টি বিষয় এসেছে।

এর মধ্যে রয়েছে-

১) বাংলাদেশে একটি দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা থাকবে, যার নিম্নকক্ষ (জাতীয় সংসদ) এবং উচ্চকক্ষ (সেনেট) নিয়ে গঠিত হবে। [৩০টি দল একমত]

২) উচ্চকক্ষের সদস্যদের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা নিম্নকক্ষের সদস্যদের যোগ্যতার অনুরূপ হবে। [২৪টি দল একমত]

৩) জাতীয় সংসদে নারী আসন বাড়িয়ে ১০০ (একশত)-তে উন্নীত করার ব্যাপারে নীতিগতভাবে একমত। [১৯টি দল একমত]

৪) আইনসভার উভয় কক্ষে একজন করে ডেপুটি স্পিকার সরকার দলীয় সদস্য ব্যতীত অপর সব সদস্যের মধ্য থেকে মনোনীত করা হবে। [২৯টি দল একমত]

৫) সংবিধানের ৭৮(৫) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একটি আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সংসদের কমিটিগুলো ও সদস্যদের বিশেষ অধিকার নির্ধারণ করা হবে। [২৪টি দল একমত]

৬) রাষ্ট্রদ্রোহ, গুরুতর অসদাচরণ বা সংবিধান লংঘনের জন্য রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসন করা যাবে। আইনসভার নিম্নকক্ষে অভিশংসন প্রস্তাবটি দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটে পাস করার পর তা উচ্চকক্ষে প্রেরণ এবং উচ্চকক্ষে শুনানির মাধ্যমে দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থনে অভিশংসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। [২৮টি দল একমত]

৭) প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্র ভাষা হবে ‘বাংলা’। সংবিধানে বাংলাদেশে নাগরিকদের মাতৃভাষা হিসেবে ব্যবহৃত সকল ভাষা এ দেশের প্রচলিত ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হবে। [৩০টি দল একমত]

৮) বিদ্যমান সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬(২) এ উল্লিখিত “বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসাবে বাঙালী এবং নাগরিকগণ বাংলাদেশি বলিয়া পরিচিত হইবেন” বিধানটি নিম্নোক্তভাবে প্রতিস্থাপন করা হবে: “বাংলাদেশের নাগরিকগণ ‘বাংলাদেশি বলে পরচিত হবেন।” [৩১টি দল একমত]

৯) সংবিধান বিষয়ক অপরাধ ও সংবিধান সংশোধনের সীমাবদ্ধতা বিষয়ক বিদ্যমান সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭ক এবং ৭খ বিলুপ্ত করা হবে। [২৮টি দল একমত]

১০) সংবিধানে যুক্ত করা হবে যে “বাংলাদেশ একটি বহু-জাতি, বহু-ধৰ্মী, বহু-ভাষী ও বহু-সংস্কৃতির দেশ যেখানে সকল সম্প্রদায়ের সহাবস্থান ও যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে।” [৩৩টি দল একমত]

১১) সংবিধানের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাগে বর্ণিত মৌলিক অধিকারসমূহের তালিকা সংশোধন ও নাগরিকদের অধিকার সম্প্রসারণ করা হবে। [৩১টি দল একমত]

১২) জাতীয় স্বার্থ বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা প্রভাবিত করে এমন আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদনের পরে আইনসভার উভয় কক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে অনুমোদন (রেটিফাই) করা হবে। [২৩টি দল একমত]

১৩) নির্বাচন কমিশনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। [২৮টি দল একমত]

১৪) সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং আইন দ্বারা নির্ধারিত সকল কাজ সম্পাদনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ কার্যকরী স্বায়ত্বশাসন নিশ্চিত করা। জাতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কর্মসূচির অংশ না হলে, স্থানীয় পর্যায়ে সকল উন্নয়নমূলক কাজের উপর স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সম্পূর্ণ আর্থিক নিয়ন্ত্রণ এবং বাস্তবায়নের কর্তৃত্ব থাকবে। [২৭টি দল একমত]

১৫) যে সকল সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কাজে সরাসরি নিয়োজিত তারা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদের অধীনস্ত হবে। এবং যে সকল সরকারি বিভাগ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের এখতিয়ারভুক্ত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্পৃক্ত, তারা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনায় কাজ করবে। [২৭টি দল একমত]

১৬) স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান স্থানীয়ভাবে নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ করতে পারবে। তবে প্রাক্কলিত তহবিল যদি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের বাজেটের চেয়ে কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে সেই বাজেট আইনসভার উচ্চকক্ষের স্থানীয় সরকার সম্পর্কিত কমিটির কাছে পাঠাতে হবে। [২৪টি দল একমত]

১৭) প্রতিটি জেলায় পারস্পরিক কার্যক্রমের সমন্বয়ের লক্ষ্যে একটি জেলা সমন্বয় কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করা, যা সেই জেলার মধ্যে সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি সমন্বয় এবং যৌথ কার্য সম্পাদনকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করবে। এর সদস্য হবেন: ১। প্রতিটি উপজেলা থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও দুইজন ভাইস চেয়ারম্যান, ২। প্রতিটি পৌরসভা থেকে নির্বাচিত মেয়র ও দুইজন ডেপুটি মেয়র, ৩। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান। প্রতিটি সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব সমন্বয় কাউন্সিল থাকবে। [২৫টি দল একমত]

১৮) সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫০(২) বিলুপ্ত করা এবং এ সংশ্লিষ্ট ৫ম, ৬ষ্ঠ এবং ৭ম তফসিল সংবিধানে না রাখা। [২৩টি দল একমত]

নির্বাচন সংস্কারে একটি বিষয় রয়েছে-

১৯) নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহকে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯-এর আওতাভুক্ত করা হবে। [২৪টি দল একমত]

বিচার বিভাগ সংস্কারে ১৮ বিষয় এসেছে-

২০) আপিল বিভাগের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধি এবং প্রধান বিচারপতির চাহিদা মোতাবেক সময়ে সময়েড আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারক নিয়োগ করা যাবে। [৩০টি দল একমত]

২১) সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কমিশন (Judicial Appointments Commission- JAC) গঠন করা। [২৬টি দল একমত]

২২) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাই কোর্ট বিভাগের বিচারক নিয়োগ কমিশন সংক্রান্ত বিধানকে সংবিধানে অর্ন্তভুক্ত করা। [২৯টি দল একমত]

২৩) বিচার বিভাগকে পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদান করা । [৩২টি দল একমত]

২৪) সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে বিচারকদের জন্য পালনীয় আচরণবিধি প্রণয়ন ও প্রকাশ এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর তা পর্যালোচনা ও হালনগদকরণ ও প্রয়োগ করা হবে। [৩১টি দল একমত]

২৫) সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল কর্তৃক সাবেক বিচারপতিদের জন্য পালনীয় আচরণবিধি প্রণয়ন ও প্রকাশ করা এবং শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সতর্ক করা এবং উপযুক্ত ক্ষেত্রে 'বিচারপতি' পদবি ব্যবহার থেকে বারিত করা। [২৯টি দল একমত]

২৬) অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণভাবে সুপ্রিম কোর্টের উপর ন্যস্ত করার জন্য সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৬ ও সংশ্লিষ্ট বিধিমালা সংশোধন করা। [৩১টি দল একমত]

২৭) নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে কার্যকরভাবে পৃথকীকরণের লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা এবং প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করা হবে। বিচার বিভাগের আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এই সচিবালয় সংক্রান্ত সংযুক্ত তহবিল থেকে অর্থায়ন করা। এই সচিবালয়ের উপর অধস্তন আদালতের প্রশাসনিক কার্যক্রম, বাজেট প্রণয়ন, অধস্তন আদালতের বিচারকের পদোন্নতি, বদলী ও শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্ব ন্যস্ত করা হবে। [৩১ দল একমত]

২৮) সংবিধানের অধীনে সুপ্রিম কোর্ট ও জেলা ইউনিটের সমন্বয়ে একটি স্থায়ী সরকারি অ্যাটর্নি সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা হবে। [২৯টি দল একমত]

২৯) একটি স্বতন্ত্র ফৌজদারি তদন্ত সার্ভিস প্রতিষ্ঠার জন্য আইন প্রণয়ন এবং তা কার্যকর করা। [৩০টি দল একমত]

৩০) বিচার বিভাগের সকল স্তরে বিচারক ও সহায়ক জনবল বৃদ্ধি এবং বিশেষায়িত আদালত স্থাপন করা হবে। [৩২টি দল একমত]

৩১) বিদ্যমান জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থাকে অধিদপ্তরে রূপান্তর করার আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। [৩০টি দল একমত]

৩২) প্রতি তিন বছর পর পর সুপ্রিম কোর্ট এবং অধঃস্তন আদালতের বিচারক এবং সকল আদালতের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পত্তির বিবরণ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে আনুসঙ্গিক পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিধান করা হবে। [২৮টি দল একমত]

৩৩) মামলার দীর্ঘসূত্রতা ও হয়রানি নিরসন, স্বচ্ছতা আনয়ন, মামলার খরচ হ্রাস ও বিচারপ্রাপ্তি সহজলভ্য করার জন্য বিভিন্ন বিধি প্রণয়ন, সংশোধন ও সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক নির্দেশনা জারির মাধ্যমে আদালত ব্যবস্থাপনার সংস্কার ও ডিজিটাইজ করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। [৩২টি দল একমত]

৩৪) ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন ২০০০' রহিত করা এবং মেডিয়েশনের বিধান সম্বলিত 'আইনগত সহায়তা ও মধ্যস্থতা সেবা প্রদান অধ্যাদেশ ২০২৫' জারী করা এবং সালিস আইন ২০০১ ও সংশ্লষ্ট অন্যান্য আইন সংশোধন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। [৩১টি দল একমত]

৩৫) আইনজীবীদের আচরণবিধি যুগোপযোগীকরণ করা; জেলা পর্যায়ে বার কাউন্সিল ট্রাইবুনাল স্থাপন এবং তার প্রধান হিসেবে একজন বিচারককে দায়িত্ব প্রদান করা হবে। অপরদিকে আদালত প্রাঙ্গনে দলীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হবে। [২৬টি দল একমত]

৩৬) আইনজীবী সমিতি নির্বাচন এবং বার কাউন্সিল নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এবং নির্বাচন পরিচালনায় দলীয় রাজনীতির প্রভাব বিলোপের জন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট (সহযোগী সংগঠন, অঙ্গসংগঠন, ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ইত্যাদি) আইনজীবীদের যে কোনো সংগঠনকে স্বীকৃতি না দেয়ার বিধান করা হবে। [২৫টি দল একমত]

৩৭) বিচারকদের রাজনৈতিক আনুগত্য প্রদর্শন বা রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশকে অসদাচরণ হিসেবে বিবেচনা করে শৃঙ্খলামুলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান করা হবে। [৩২টি দল একমত

জনপ্রশাসন সংস্কারে ৬ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে

৩৮) জুলাই অভ্যুত্থানকালে গণহত্যা ও নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত এবং ভোট জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের চিহ্নিতকরণ এবং তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা হবে। [৩২টি দল একমত]

৩৯) জনপ্রশাসন সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি স্বাধীন ও স্থায়ী জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হবে। [২৯টি দল একমত]

৪০) নাগরিকরা যাতে সহজে ও অবাধে সরকারি সেবা সংক্রান্ত তথ্য পেতে পারে সেজন্য তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ (Right to Information Act, 2009) পর্যালোচনা করে সংশোধন করা হবে। [৩২টি দল একমত]

41) নাগরিকদের তথ্য ও পরিষেবায় অভিগম্যতা সহজ ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে অফিসিশিয়াল সিক্রেক্টস অ্যাক্ট ১৯২৩ (The Official Secrets Act, 1923) পর্যালোচনা করে সংশোধন করা হবে। [২৭টি দল একমত]

৪২) ভৌগোলিক অবস্থান ও যাতায়াতের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কুমিল্লা ও ফরিদপুর নামে দুইটি প্রশাসনিক বিভাগ গঠন করা হবে। [২৮টি দল একমত]

৪৩) বর্তমানে ভূমি সংক্রান্ত মামলাগুলো নিষ্পত্তিতে অনেক সময় ব্যয় হয় বিধায় নাগরিকদের ভোগান্তি দূর করার জন্য প্রতি বিভাগে একটি করে স্বতন্ত্র ভূমি আদালত স্থাপন করা হবে। [২৫টি দল একমত]

দুদক সংস্কারে ১৯ বিষয়ে ঐকমত্য

৪৪) বিদ্যমান সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০(২) নিম্নরূপে প্রতিস্থাপন করা হবে: “রাষ্ট্র এমন অবস্থা সৃষ্টি করিবেন, যেখানে সাধারণ নীতি হিসেবে কোনো ব্যক্তি ব্যক্তিগত স্বার্থে সাংবিধানিক ও আইনগত ক্ষমতার অপব্যবহার করিতে পারিবেন না ও অনুপার্জিত আয় ভোগ করিতে সমর্থ হইবেন না এবং যেখানে বুদ্ধিবৃত্তিক ও কায়িক, সকল প্রকার শ্রম সৃষ্টিধর্মী প্রয়াসের ও মানবিক ব্যক্তিত্বের পূর্ণতর অভিব্যক্তিতে পরিণত হইবে।” [৩০টি দল একমত]

৪৫) রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের পরিবর্তে একটি দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন করে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ও অরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবিরোধী দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্দিষ্ট করা হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭৭-এর অধীনে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী ন্যায়পাল পদ সৃষ্টি করে ন্যায়পালকে দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় কৌশলপত্রের যথাযথ প্রতিপালন নিশ্চিত করার জন্য ক্ষমতায়িত করা হবে। [৩০টি দল একমত]

৪৬) বিদ্যমান সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০(২) -এর সামঞ্জস্য রেখে বৈধ উৎসবিহীন আয়কে বৈধতা দানের যেকোনো রাষ্ট্রীয় চর্চা চিরস্থায়ীভাবে বন্ধ করতে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করা হবে। [৩২টি দল একমত]

৪৭) রাষ্ট্রীয় ও আইনি ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে স্বার্থের দ্বন্দ্ব নিরসন ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করা হবে। [৩১টি দল একমত]

৪৮) প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত বা চূড়ান্ত মালিকানার তথ্য গোপন করে উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারসহ বিবিধ দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষ্যে আইনি কাঠামোর মাধ্যমে কোম্পানি, ট্রাস্ট বা ফাউন্ডেশনের প্রকৃত বা চূড়ান্ত সুবিধাভোগীর পরিচয়-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাদি রেজিস্টারভুক্ত করে জনস্বার্থে প্রকাশ নিশ্চিত করা। [২৯টি দল একমত]

৪৯) নির্বাচনি আইনে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে রাজনৈতিক ও নির্বাচনি অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও শুদ্ধাচার চর্চা নিশ্চিত করা।

• রাজনৈতিক দলসমূহ ও নির্বাচনের প্রার্থীদের অর্থায়ন এবং আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত করবে;

• জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও দুদকের সহায়তায় নির্বাচন কমিশন নির্বাচনি হলফনামায় প্রার্থীদের দেওয়া প্রদত্ত তথ্যের পর্যাপ্ততা ও যথার্থতা যাচাইপূর্বক প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে;

• সকল পর্যায়ের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ দায়িত্ব গ্রহণের তিন মাসের মধ্যে ও পরবর্তীতে প্রতি বছর নিজের ও পরিবারের সদস্যদের আয় ও সম্পদ বিবরণী নির্বাচন কমিশনে জমা দেবেন এবং নির্বাচন কমিশন উক্ত বিবরণীসমূহ কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে; এবং

• রাজনৈতিক দলসমূহ দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে দলীয় পদ বা নির্বাচনে মনোনয়ন দেবেন না। [২৫টি দল একমত]

৫০) সেবা প্রদানকারী সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের- বিশেষত, থানা, রেজিস্ট্রি অফিস, রাজস্ব অফিস, পাসপোর্ট অফিস এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সকল সেবা-পরিষেবা খাতের সেবা কার্যক্রম ও তথ্য-ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণ (অ্যান্ড-টু-অ্যান্ড) অটোমেশনের আওতায় আনা। [২৯টি দল একমত]

৫১) জাতিসংঘ দুর্নীতিবিরোধী সনদ-ইউএনসিএসি (UN Convention against Corruption-UNCAC) এর অনুচ্ছেদ ২১ অনুসারে বেসরকারি খাতের ঘুষ লেনদেনকে স্বতন্ত্র অপরাধ হিসেবে শাস্তির আওতায় আনা। [৩১টি দল একমত]

৫২) দেশ বিদেশে আর্থিক লেনদেনের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে বাংলাদেশের কমন রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড-সিআরএস (Common Reporting Standards-CRS) এর পক্ষভুক্ত হওয়া এবং বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কার করা। [৩০টি দল একমত]

৫৩) দুদক আইনের ৫(১) ধারা সংশোধন করে ন্যূনতম একজন নারীসহ দুদক কমিশনারের সংখ্যা তিন থেকে পাঁচে উন্নীত করা। [২৯টি দল একমত]

৫৪) দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ধারা ৮(১) এইরূপভাবে প্রতিস্থাপন করা- “আইনে, শিক্ষায়, প্রশাসনে, বিচারে, শৃঙ্খলা বাহিনীতে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে, হিসাব ও নিরীক্ষা পেশায় বা সুশাসন কিংবা দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমে নিয়োজিত সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অন্যূন ১৫ (পনের) বৎসরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কোনো ব্যক্তি কমিশনার হইবার যোগ্য হইবেন।” [২৬টি দল একমত]

৫৫) দুদক আইন ২০০৪ এর ৬(২) ধারার সংশোধন করে দুদক কমিশনারের মেয়াদ পাঁচ বছরের পরিবর্তে চার বছর নির্ধারণ করা। [২৫টি দল একমত]

৫৬) দুদক আইন ২০০৪ এর ৬(১) ধারা সংশোধনপূর্বক ধারা-৭ এর অধীন গঠিত বাছাই কমিটির নাম পরিবর্তন করে “বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি” নির্ধারণ করা। [৩১টি দল একমত]

৫৭) দুদক আইন ২০০৪ এর ৭(১) থেকে ৭(৫) ধারা সংশোধন করে প্রস্তাবিত “বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি” সাত সদস্যের সমন্বয়ে গঠন করা।

তারা হলেন- (১) প্রধান বিচারপতি ব্যতিরেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি [পদাধিকারবলে এই কমিটির চেয়ারম্যান] (২) সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি (৩) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (৪) সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান (৫) জাতীয় সংসদের সংসদ নেতা কর্তৃক মনোনীত একজন প্রতিনিধি (৬) জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা কর্তৃক মনোনীত একজন প্রতিনিধি এবং (৭) প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত দুর্নীতিবিরোধী ও সুশাসনের কাজে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বাংলাদেশের একজন নাগরিক। [২৫টি দল একমত]

৫৮) বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি কর্তৃক দুদক কমিশনার নিয়োগের অনুসরণীয় পদ্ধতি: দুদক আইন ২০০৪ এর ৭(১) থেকে ৭(৫) ধারা সংশোধন করে প্রস্তাবিত “বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি” কমিশনার নিয়োগে সুপারিশ প্রদানের উদ্দেশ্যে নিম্নবর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করা-

>> পত্রপত্রিকা ও অনলাইন মাধ্যমে কমিশনার পদের জন্য আবেদন বা মনোনয়ন আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে;

>> প্রত্যেকটি আবেদন বা মনোনয়নের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য প্রার্থীর সম্পদের হিসাব বিবরণী এবং জীবন বৃত্তান্ত (রেফারি হিসেবে দুইজন ব্যক্তির নামসহ) সংযুক্ত করতে হবে;

>> আবেদনকারী ও মনোনয়নপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যারা কমিশনার পদের যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করবে, তাদের নিয়ে কমিটি একটি প্রাথমিক তালিকা প্রণয়ন করবে; উক্ত তালিকায় কমিটি নিজস্ব উদ্যোগেও প্রার্থীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে;

>> কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যায়ন রুব্রিক্স (evaluation rubrics) অনুসরণে প্রাথমিক তালিকা থেকে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রণয়ন করে কমিটি সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকবে;

>> সাক্ষাৎকারকালে কমিটি প্রার্থীর যোগ্যতা, দক্ষতা ও সততার পাশাপাশি দুদক কমিশনার হিসেবে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা পর্যালোচনা করবে;

>> সাক্ষাৎকার গ্রহণের প্রয়োজনে কমিটি দুইজন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞকে সাক্ষাৎকার গ্রহণ-প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে;

>> সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে কমিটি প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে তিনজন প্রার্থীর নাম জনসম্মুখে প্রকাশ করবে;

>> জনসম্মুখে নাম প্রকাশের ন্যূনতম সাত দিন পরে কমিটি প্রতি শূন্য পদের বিপরীতে দুইজন প্রার্থীর নাম গোপনীয়তার সহিত রাষ্ট্রপতির নিকট প্রেরণ করবে। [২৭টি দল একমত]

৫৯) বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি কর্তৃক দুদকের কার্যক্রম পর্যালোচনার পদ্ধতি: দুদক আইন ২০০৪ এর ৭(১) থেকে ৭(৫) ধারা সংশোধন করে প্রস্তাবিত “বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি” দুদকের কার্যক্রম পর্যালোচনার উদ্দেশ্যে নিম্নবর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করবে-

>> প্রতি ছয় মাস অন্তর দুদক তার কার্যক্রমের প্রতিবেদন তৈরি করে প্রস্তাবিত বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটির নিকট পেশ করা;

>> উক্ত প্রতিবেদনের ছক কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত হইবে। তবে প্রতিবেদনে আবশ্যিকভাবে যে সকল বিষয় থাকতে হবে, সেগুলো হল-

(১) প্রাপ্ত অভিযোগের সংখ্যা এবং যাচাই বাছাই শেষে তদন্তে প্রেরিত অভিযোগের সংখ্যা (২) কী কারণে কতগুলো অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে বা হয়নি, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ

(৩) দুর্নীতির ধরন ও মাত্রা অনুযায়ী তদন্ত ও বিচার কার্যক্রমে চলমান বিভিন্ন মামলার সংখ্যা

(৪) চলমান গোপন অনুসন্ধানের সংখ্যা ও ধরন

(৫) পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত গুরুতর ও বৃহৎ আকারের দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে দুদকের কার্যক্রমের বিবরণ

(৬) অর্থপাচার-সংক্রান্ত অপরাধের তদন্ত ও বিচারের অগ্রগতি বিষয়ক প্রতিবেদন

(৭) রাষ্ট্রীয় ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সহিত সহযোগিতার ব্যপারে অবহিতকরণ

(৮) দুর্নীতি প্রতিরোধ কার্যক্রমের ব্যপারে প্রতিবেদন

(৯) দুদকের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি দমন বিষয়ে অগ্রগতি

(১০) দুদকের দুর্নীতি প্রতিরোধী কার্যক্রমের বিবরণ;

>> কমিটি দুদক কর্তৃক উপস্থাপিত প্রতিবেদনের ওপর উন্মুক্ত শুনানির ব্যবস্থা করবে;

>> কমিটি যথাসম্ভব উক্ত শুনানি কার্যক্রমে নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের ও বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দেবে;

>> উক্ত শুনানি শেষে কমিটি তার লিখিত পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করবে;

>> কমিটিকে এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, উক্ত শুনানির কারণে কোনো অবস্থাতেই যেন চলমান তদন্ত বা অনুসন্ধানের গোপনীয়তা লঙ্ঘিত না হয় এবং কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বা মামলা সম্পর্কে আলোচনার সূত্রপাত না হয়;

>> কমিটি উন্মুক্ত শুনানিতে অনুসরণীয় স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (Standard operating procedure-SOP) প্রণয়ন করবে এবং এর যথাযথ প্রতিপালন নিশ্চিত করবে। [৩১টি দল একমত]

৬০) দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ধারা ৩২ক অনুযায়ী জজ, ম্যাজিস্ট্রেট বা সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্ত করা। [২৭টি দল একমত]

৬১) আয়কর আইন, ২০২৩-এর ধারা ৩০৯ সংশোধনপূর্বক এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, দুদক কর্তৃক চাহিত কোনো তথ্যাদি বা দলিলাদির ক্ষেত্রে এই ধারা প্রযোজ্য হবে না। [২৭টি দল একমত]

৬২) উন্মুক্ত সরকারের ধারণা সংক্রান্ত ওপেন গভর্নমেন্ট পার্টনারশিপ (Open Government Partnership-OGP) এ বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয়ভাবে পক্ষভুক্ত হওয়া। ওজিপিতে পক্ষভুক্ত হলে স্বচ্ছ, অংশীদারিত্বমূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের আন্তর্জাতিক উত্তমচর্চা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা লাভের সুযোগ সৃষ্টি হবে। [২৩টি দল একমত]

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়