আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি. আর. আবরার আজ মঙ্গলবার মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজে বিমান বিধ্বস্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন।
পরিস্থিতির চাপে পরে তারা শেষমেষ দ্রুত স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার পরে কলেজের ৫ নম্বর ভবনের নিচতলায় কনফারেন্স কক্ষে যান। তাদের সঙ্গে কলেজের শিক্ষকেরাও ছিলেন। সেখানে পাঁচ থেকে সাতজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধির সঙ্গে তাদের আলোচনা চলছে। বাইরে শত শত শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলছে।
নিহতদের সঠিক নাম ও পরিচয় প্রকাশ, আহতদের সম্পূর্ণ ও নির্ভুল তালিকা, শিক্ষার্থীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, বিমানবাহিনীর ব্যবহৃত ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরোনো প্রশিক্ষণ বিমান বাতিল করে আধুনিক ও নিরাপদ বিমান চালুসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন।
মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষার্থীরা সকাল ৯টায় ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছিল। সকাল সোয়া ৯টার দিকে দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সভা-সমাবেশ, দলবদ্ধ কর্মসূচি কিংবা অবস্থান নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
ঘোষণা দিয়ে জানানো হয়, দিয়াবাড়ি গোলচত্বর ও আশপাশের এলাকায় কোনো ধরনের জমায়েত বা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা যাবে না।
এদিকে আজও কলেজ ও আশপাশের এলাকায় উৎসুক জনতার ভিড় দেখা গেছে। অনেকেই সেখানে আসছেন। কেউ কেউ খুঁজছেন সন্তান ও স্বজনকে।
মঙ্গলবার সকালে স্কুলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের হোস্টেল ছাড়তে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা আসছিলেন এবং তাদের সন্তানদের নিয়ে যাচ্ছিলেন। বিমান যে ভবনে বিধ্বস্ত হয় সেটির পেছনে হায়দার আলী হোস্টেল থেকে শিক্ষার্থীদের চলে যেতে দেখা গেছে।
সোমবার দুপুরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এতে আজ সকাল পর্যন্ত ২৭ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী চিকিৎসক মো. সায়েদুর রহমান। তিনি আরও জানান, চারটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৭৮ জন।
মাইলস্টোন কলেজের পরিচালক রাসেল তালুকদার জানান, এক নম্বর ভবনের নিচে হতাহতদের তথ্যের বিষয়ে হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে। শিক্ষকেরা সেখানে তথ্য হালনাগাদ করছেন। অভিভাবকেরা সেখানে তথ্য দিচ্ছেন এবং তথ্য নিচ্ছেন।
এদিকে, ছয় দফা দাবিতে দিয়াবাড়ি গোলচত্বর এলাকায় বিক্ষোভ করছেন মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত ৬টি দাবি হলো -
১. দুর্ঘটনায় নিহতদের সঠিক নাম ও পরিচয় প্রকাশ করতে হবে।
২. আহতদের নির্ভুল ও পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
৩. ঘটনাস্থলে শিক্ষকদের গায়ে সেনাসদস্যদের ‘হাত তোলার’ অভিযোগে নিঃশর্ত প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
৪. নিহত প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পরিবারকে বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৫. বিমানবাহিনীর ব্যবহৃত পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ বিমান বাতিল করে নতুন ও নিরাপদ প্লেন চালু করতে হবে।
৬. বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষণ এলাকা মানবিক ও নিরাপদভাবে পুনর্বিন্যাস করতে হবে।