ভূঁইয়া আশিক রহমান: ফোবানার আউটস্ট্যান্ডিং মেম্বার ও সাবেক চেয়ারপার্সন জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, ১৯৮৭ সালে ইকবাল বাহার চৌধুরী, ড. নূরুননবী, ফেরদৌস হোসাইনি, আতিকুর রহমান, মীর চৌধুরী-সহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে ফোবানা প্রতিষ্ঠিত হয় ওয়াশিংটনে। সেই সময় বিশ্বব্যাংকের হেড-কোয়ার্টারের ছোট একটা হলরুমে, ২৫০ জনকে নিয়ে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। এখন ২০-৩০ হাজার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন হলে ফোবানা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
২১ মে মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ফোবানা একটি গণতান্ত্রিক সংগঠন। এখানে কোনো ব্যক্তি সদস্য হতে পারেন না। সংগঠন সদস্য হতে পারে। যেমন বাংলাদেশ লীগ অব আমেরিকা, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্লোরিডা, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব নিউ জার্সি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব নিউ ইয়র্ক, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব মিশিগান ইত্যাদি। নন-পলিটিক্যাল সংগঠনগুলো ফোবানার সদস্য হতে পারে। অনেকেই এ ধরনের সংগঠনের মাধ্যমে এসে ফোবানায় নির্বাচন করেন। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরে তারা সেই পরাজয় মেনে নিতে পারেন না বলেই ফোবানার নামে আরেকটি দোকান খোলার চেষ্টা করেন।
ফোবানার সাবেক এই চেয়ারপার্সন আরও বলেন, ২০-২১ সালে ফোবানার নির্বাচন হয়েছে। করোনার সময়। ভার্চুয়ালি ইলেক্ট্রনিকস ভোটিং মাধ্যমে। আমার সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন মোহাম্মদ আলগীর, ওয়াশিংটনের। তিনি একজন কনভিক্টেড ফেলন। অপরাধের কারণে আমেরিকায় ৫ বছরের জেল খেটেছেন। উনার অ্যাটর্নির লাইলেন্স রিমুভ করেছে। ফলে উনাকে ভোটাররা গ্রহণ করেননি। ভোটের মাধ্যমে আমি নির্বাচিত হয়েছিলাম। ভোটে হেরে তিনি বিএনপি-জামায়াতসহ দেশবিরোধী শক্তি, যারা বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত, তাদের নিয়ে ফোবানার নামে আরেকটি সংগঠন খোলেন। অথচ ফোবানার ইতিহাসে তিনি ১৩ বার নির্বাচন করেছেন, তেরোবারই পরাজিত হয়েছেন।
জাকারিয়া চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, ইন্টারকন্টিন্যান্টাল হোটেলে মিট দ্য প্রেস করেছেন তারা। অথচ সেখানে কোনো সাংবাদিককে দাওয়াত করেননি। গোপনে মিটিং করেছেন। খুব সম্প্রতি প্রেসক্লাবেও আরেকটি মিট দ্য প্রেস ফোবানার নামে করা হয়েছে, যেখানে অন্তর শোবিজের স্বপন চৌধুরী ঘোষণা করলেন ৩৮তম ফোবানা সম্মেলন! তিনি কীভাবে ফোবানা সম্মেলনের ঘোষণা দেন? তিনি তো দেশের একজন ইভেন্ট অরগানাইজার।
সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়, ফোবানা চেয়ারম্যন জনাব আতিকুর রহমান ও নির্বাহী সম্পাদক ড.রফিক খানের পক্ষ থেকে সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে ৩৮তম ফোবানা সম্মেলন হবে ডেট্রয়েট (মিশিগান, ইউ. এস. এ.) শহরে, আগামী অগাস্ট ৩০ সেপ্টেম্বর ১, ২০২৪। ফোবানা সম্মেলনটি প্রতি বছর উত্তর আমেরিকার (ইউ.এস.এ. ও কানাডার) বিভিন্ন শহরে উদযাপিত হয়। এবার দীর্ঘ ২১ বছর পর বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ মিশিগান আবারো আয়োজন করতে যাচ্ছে ফোবানা সম্মেলনটি। এই সম্মেলনটির কনভেনার হচ্ছেন সংগঠক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজ চৌধুরী এবং মেম্বার সেক্রেটারী হচ্ছেন খালেদ হোসেন। সম্মেলন সার্থক করতে ইতোমধ্যে হিল্টন গার্ডেন হোটেল নির্ধারণ করা হয়েছে এবং শিল্পী, সাহিত্যিক ও আলোচকরে আমন্ত্রণ করার কাজ দ্রুত চলমান রয়েছে।
বিশেষ এই সম্মেলনে থাকবে বিশেষ সেমিনার ও আলোচনা সভা যেখানে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে তুলে ধরা হবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের ইতিহাস। আরো তুলে ধরা হবে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলা বাংলাদেশের তথ্যবহুল বিশ্লেষণ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে প্রবাসীদের অংশগ্রহণ নিয়ে বিশেষ আলোচনা। সেমিনারগুলোতে সংযুক্ত থাকবেন স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, লেখক ও গবেষক সহ অন্নান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
ফোবানা সম্মেলন হচ্ছে বিদেশের মাটিতে হাজার বাংলাদেশিদের মিলন ও সংযোগের এক বিশাল মাধ্যম। এখানে শুধু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানই মূল লক্ষ্য নয়। এই সম্মেলনের মাধ্যমে তুলে ধরা হয় উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের নানা ক্ষেত্রে সাফল্যের দৃষ্টান্ত যাতে করে সকলে এর থেকে উপকৃত হতে পারেন। এ ব্যাপারে বিশেষভাবে আয়োজন করা হবে ‘বিজনেস নেটওয়ার্কিং সামিট’ যেখানে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গদের মধ্যে থাকবেন বাংলাদেশ দূতাবাসের নেতৃবৃন্দ, ইউ.এস.এ এবং কানাডার চেম্বার অফ কমার্সের নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বে বসবাসকারী সফল ব্যবসাইবৃন্দ সহ আরো অনেকে। এই বিশেষ সামিটের মধ্যমে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হবে বলে প্রকাশ করা হয়।
মিট দ্য প্রেসে ৩৮তম ফোবানা সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সংগঠনের সাবেক চেয়ারপার্সন ও আউটস্ট্যান্ডিং মেম্বার বেদারুল ইসলাম বাবলা। আমেরিকা থেকে টেলিফোনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ফোবানার এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি ড. রফিক খান ও চিফ কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন।
আপনার মতামত লিখুন :