শিরোনাম
◈ দেশে অনলাইন জুয়া সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে: অনলাইনে জুয়া বন্ধে কঠোর হচ্ছে সরকার ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ (ভিডিও) ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধের ডাক হাসনাতের (ভিডিও) ◈ নারায়ণগঞ্জ থেকে কাশিমপুর কারাগারে আইভী ◈ ‘মিথ্যাচার ও আক্রমণাত্মক বক্তব্যের’ জবাব দিলেন আসিফ নজরুল ◈ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার রিপোর্ট দাখিল সোমবার ◈ জনগণ দ্রুত নির্বাচন চায় : ডা. জাহিদ ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিবৃতি ◈ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল ◈ যমুনার সামনে বিক্ষোভকারীদের জুমার নামাজ আদায়, নিরাপত্তা জোরদার, বাড়তি সতর্কতা

প্রকাশিত : ০২ মে, ২০২৩, ০৪:০৬ দুপুর
আপডেট : ০৩ মে, ২০২৩, ০১:১৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবি সম্পাদক পরিষদের

মাজহারুল মিচেল: সম্পাদক পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৩, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সকল প্রকার মানবাধিকারের চালিকাশক্তি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ দাবি জানান।

এক্ষেত্রে সরকারের কোনো আপত্তি থাকলে আইনটি সংশোধন করে সেখানে যেন এটি সাংবাদিকদের ওপর প্রয়োগ করা হবে না, এমন বিধান যুক্ত করা হয়, সে দাবিও জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।

জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে মঙ্গলবার (২ মে) দুপুরে এ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, এ অ্যাক্টটি সাইবার ক্রাইম বন্ধ করার জন্য করেছি। তাহলে সেখানে একটা ধারা যুক্ত করা হোক গণমাধ্যম ও স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর প্রয়োগ করা হবে না।

এছাড়াও তিনি এ আইনে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মুক্তি দেয়ারও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমাদের তৃতীয় দাবি হচ্ছে দেশে সাংবাদিকতায় যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, আমরা কিছু লিখতে দ্বিধাগ্রস্ত, এটাতে আমরা থাকতে চাই না।

অনুষ্ঠানে সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, আমি মনে করি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল নয়, সংশোধন করা হোক। সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করতে হলে তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে করতে হবে।

সভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, আজকে আমরা বলছি গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ শুধু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করছে। কিন্তু কতটুকু মালিকপক্ষ করছে, কতটুকু কর্পোরেট কোম্পানিগুলো করছে তা দেখি না। টেলি কোম্পানিগুলো দ্বারা গ্রাহকরা বিভিন্নভাবে ভুক্তভোগী হচ্ছে, কিন্তু আপনারা তা লেখেন না। 

কারণ তারা আপনাদের বিজ্ঞাপন দেয়। কিন্তু এখানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যুক্ত না। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পর্যালোচনা ও সংশোধন দরকার। অনতিবিলম্বে তথ্যমন্ত্রীর কথা শুনে কোন কোন জায়গায় সংশোধন লাগবে সেগুলো করে ফেলা দরকার। এটা ঝুলিয়ে রাখা ঠিক না।

ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বলেন, আমার এখন কথা বলতে ভয় লাগে। কারণ মিস ইন্টারপ্রেট করে। সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ আজকে নতুন কিছু না। যুগে যুগে সব শাসকরাই এটা করে এসেছেন। বিভিন্ন সময় ইত্তেফাক পত্রিকাও বন্ধ করা হয়েছিল। সবসময় যারা রাষ্ট্র চালায় বা যাদের দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালিত হয় তাদের দ্বারাই কণ্ঠ রোধ করা হয়। আমরা বাঙালিরা সবসময়ই সংগ্রাম করেছি, করে যাচ্ছি।

নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর বলেন, যারা মুক্তভাবে মত প্রকাশ করতে চায় ও স্বচ্ছভাবে দেশের অসংগতিগুলো পত্রিকায় তুলে ধরতে চায় তারাই এর (ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট) ভিক্টিম। একদলীয় শাসন ব্যবস্থার মধ্যে ভিন্ন মত পোষণ করা যায় না। অনুনয় বিনয় করে কোনো লাভ নেই। আমরা সরকারের সঙ্গে বহুবার কথা বলেছি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে, কিন্তু কিছুই বদলায়নি। এ আইন হয়েছে।

সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, বড় বড় দেশে যখন কোনো আইন হয় তখন ছোট দেশগুলোতে সেটার কপি হয়। কতিপয়ের কাছে অধিকাংশ গণমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ। তেমনি নানা ধরনের  আইন-বিধিনিষেধ মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করছে। সত্যের পক্ষে যখন সাংবাদিকরা দাঁড়াবে, তখন পৃথিবীও সাংবাদিকদের পক্ষে দাঁড়াবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮৩ শতাংশ ভুক্তভোগী হচ্ছে নারীরা। আর ২৭ শতাংশ ভুক্তভোগী হচ্ছে সাংবাদিকরা।

তিনি আরও বলেন, শুধু আইনের দোহাই দিলেই হবে না। এখন পেশাদার সম্পাদক আর মালিকের সম্পাদকের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়েছে। কে পেশাগত কাজ করছে ,আর কে মালিকের স্বার্থের জন্য কাজ করছে সেটাও বুঝতে হবে।

অনুষ্ঠানে সমকালের সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, পেশাজীবী হিসেবে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও ঐক্য দরকার। আজকে স্বাধীন সাংবাদিকতা বিপন্ন হয়েছে।

ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট তৈরি করা হয়েছে ভয় দেখানোর জন্য বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

দ্যা ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ বলেন, সাংবাদিকদের অবস্থা এখন করুন। তাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করা হয়েছে; একটা আইন করে, আরেকটা সাংবাদিকদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করে। আইনমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন অ্যাক্টটি সরকারের মধ্যেও একটা অস্বস্তি তৈরি করেছে।

এসময় তিনি চারটি দাবি জানান। দাবিগুলো হচ্ছে­: 

১. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা। বাতিলে যদি প্রতিবন্ধকতা থাকে সেক্ষেত্রে একটি ক্লজ যুক্ত করা যে আইনটি স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য প্রযোজ্য নয়। ২. এই আইনে যে সব সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে সেগুলো বাতিল করা। ৩. ভয়ের সংস্কৃতি দূর করাতে সরকারকে উদ্যোগী হওয়া। ৪. হুইসেল ব্লোয়ারদের রক্ষা আইন করা।

সভায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানও উপস্থিত ছিলেন। এটি সঞ্চালনা করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।

এমএম/এএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়