শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের  ◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ২১ অক্টোবর, ২০২২, ১২:২৪ দুপুর
আপডেট : ২১ অক্টোবর, ২০২২, ০৪:১৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘খাদ্যসংকটের ঝুঁকি থাকলেও দুর্ভিক্ষের শঙ্কা নেই’

আতিউর রহমান

ভূঁইয়া আশিক রহমান : করোনা মহামারি বিশ্বের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিকে টালমাটাল করে দিয়েছে। ২০২৩ সাল অর্থনৈতিক মন্দার বছর হবে। খাদ্যসংকটের আলোচনা গতি পেয়েছে। বিশ্বের দেশে দেশে দুর্ভিক্ষের শঙ্কাও করা হচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিও কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে। এমতবস্থায় বাংলাদেশে খাদ্যসংকট ও দুর্ভিক্ষের যে শঙ্কার কথা বলা হচ্ছে, তা কতোটা বাস্তবসম্মত? আদৌ কি কোনো আশঙ্কা আছে খাদ্যসংকট, মন্দা বা দুর্ভিক্ষের, বাংলাদেশে?

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, বিশ্বের এই সংকটকালেও আমাদের অর্থনীতি ভালো করছে। বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে এখনো ভালো আছে বাংলাদেশ। আমনের ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির কারণে জমিতে ময়েশচার থেকে যাবে, এতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে আমাদের শীতকালীন ফসলের উপর। এমনকি বোরোর উপরও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। যদি বোরো উৎপাদন ঠিকমতো করতে পারি, সারারাত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখা যায়, তাহলে সংকট হবে না। 

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা থাকলেও আমাদের ক্ষেত্রে তা হবে না। তার মানে এই নয় যে, আমাদের অর্থনীতির উপর চাপ পড়বে না। আমাদের অর্থনীতির উপর চাপ পড়বে। তবে খাদ্য, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে হবে। মানুষের আয়-রোজগার বৃদ্ধির জন্য বাড়তি উদ্যোগ গ্রহণ হবে সরকারকে। নিম্ন বা স্বল্প আয়ের মানুষকে বিনামূল্যে অথবা কমমূল্যে খাদ্য সরবরাহ করা, কৃষকদের ভালো বীজ দেওয়া, সার নিশ্চিত করা, জ্বালানি নিরাপত্তা ও সারারাত বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে হবে। এ ধরনের উদ্যোগ বা কর্মসূচি খুব দ্রুত করার চিন্তা করতে হবে।  

বিশ^বাজারে গম ও চালের সরবরাহ না হলে বা কমে গেলে দেশে খাদ্যসংকট সৃষ্টির শঙ্কার কথা জানিয়ে অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, বিশ্ববাজারে গম ও চালের সরবরাহ না হলে বা কমে গেলে গরিব দেশগুলোতে খাদ্য সংকট তৈরি হয়। খাদ্যসংকট, মন্দা বা দুর্ভিক্ষের শঙ্কার কথা আগেভাগে জানানো ভালো। কিন্তু আমরা যা দেখছি না, তা হচ্ছেÑ যে পরিস্থিতি সামনের বছর হতে পারে বা তার পরবর্তী বছর হওয়ার শঙ্কা আছে, এর জন্য যেসব প্রস্তুতি আমাদের নেওয়া দরকার, সেগুলো হচ্ছে না। সংকট মোকাবেলায় প্রস্তুতির অভাবটাই হচ্ছে বড় চিন্তার ব্যাপার। পূর্ব প্রস্তুতি যদি থাকে তাহলে মন্দা, খাদ্যসংকট বা দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা করা যায়। 

এই অর্থনীতিবিদের মতে, সত্যি সত্যিই বিশ্বমন্দা দেখা দিলে বাংলাদেশ এর বাইরে থাকতে পারবে না। বাংলাদেশ জনশক্তি ও পোশাক রপ্তানি করে। কিন্তু বিদেশ থেকে আমাদের কৃষির অনেক উপকরণ আমদানি করে আনতে হয়। এটা একটা অদ্ভুত ধরনের মন্দা, যে মন্দায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি, একইসঙ্গে পর্যাপ্ত পণ্যও পাওয়া যায় না। 

আসন্ন সংকট মোকাবেলায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপের জোর দিয়েছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থউপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। সরকারি কর্মসূচিগুলো যেন অনিয়মমুক্ত ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় বাস্তবায়ন হয়, সেদিকেও নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, সংকট নিরসনে স্বল্প মেয়াদী যেসব পদক্ষেপ সরকার নিয়েছে, তা ঠিক আছে। তবে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন যেন হয়। স্বল্পমূল্যে কোটি মানুষের কাছে খাদ্যপণ্য বিক্রির উদ্যোগটি বেশ ভালো। এই কর্মসূচি যাতে সঠিক ব্যবস্থাপনায় হয় সেদিকে তীখ্ন নজর রাখতে হবে। 

তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে খাদ্যের অনেক দাম বেড়েছে। আমরা অনেক খাদ্য আমদানি করে থাকি। একদিকে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিভার্জ কমে যাচ্ছে, আমদানি মূল্য মেটাতে গিয়ে সামনের দিনগুলোতে অসুবিধার সম্মুখিন হতে পারি। বেসরকারি খাতে আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, ফলে আমদানি কম হচ্ছে। এতে সার্বিকভাবে খাদ্যের সরবরাহ কমে যেতে পারে। আর সেটা হলে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হতে পারে। বিশ্বমন্দ্রার আঘাত আমাদের উপর কতোটুকু পড়বে বলা মুশকিল। তবে মন্দার আঘাত আমাদের ওপরেও পড়বে, এটা ধরে নিয়েই আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে।  

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়