ববি বিশ্বাস: [২] বিগত কয়েক মাস যাবত আলোচনার পর ধর্ষণের একক সংজ্ঞা নির্ধারণে ব্যর্থ হয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য দেশগুলো। এই ব্যর্থতার ফলস্বরূপ ধর্ষণের সংজ্ঞা ছাড়াই নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে একটি অভিন্ন গাইডলাইন বা নীতিমালা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। এ নিয়ে বর্তমানে নারীদের সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছে ই্ইউ। সুত্র: ভয়েস অব আমেরিকা
[৩] গত সপ্তাহের মঙ্গলবার ইউরোপীয় পার্লামেন্ট বৈঠকের পর গণমাধ্যমের সামনে আলোচনার ফলাফল তুলে ধরেন পার্লামেন্টের আইরিশ সদস্য ও রক্ষণশীল দল ইউরোপীয় পিপলস পার্টির ভাইস- প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সেস ফিটজগেরাল্ড। তিনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রথমবারের মতো নারীর প্রতি সহিংসতাকে নিয়ে একটি স্বচ্ছ বার্তা দিচ্ছে। অপরদিকে ধর্ষণের সংজ্ঞা নিয়ে একমত হতে না পারায় পার্লামেন্টের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
[৪] বর্তমানে ধর্ষণের একক সংজ্ঞা নির্ধারণে ‘হ্যাঁ মানেই হ্যাঁ’ ও ‘না মানে না’ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ইউরোপের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা দ্য কাউন্সিল অব দ্য ইউরোপীয়ান ইউনিয়নে দেখা গেছে দ্বিধাবিভক্তি। তাছাড়া ধষর্ণের অনুষঙ্গ হিসেবে সহিংস বা বিপজ্জনক পরিস্থিতিকে অপরিহার্য উপাদান হিসেবে গণ্য করা হবে কি না এ নিয়েও রয়েছে ব্যাপক মতভেদ।
[৫] ভয়েস অব আমেরিকা জানায়, ইউরোপভিত্তিক নারী অধিকার এনজিও ইউরোপিয়ান উইমেনস লবির ২০২৩ সালের অক্টোবরের একটি বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ইইউ’র ১৪টি সদস্য রাষ্ট্রের আইন ধর্ষণের ক্ষেত্রে শুধু ‘হ্যাঁ মানেই হ্যাঁ বা যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে নারীর স্বচ্ছ ও আবশ্যিক সম্মতি’র দৃষ্টিভঙ্গি সমর্থন করে। সুইডেন, স্পেন, ক্রোয়েশিয়া, গ্রিস এই দৃষ্টিভঙ্গি সমর্থনকারীদের মধ্যে অন্যতম।
[৬] অপরদিকে ‘না মানে না বা ধর্ষণের শিকার অথবা অভিযোগকারীর প্রমাণের ভিত্তিতে’ পদক্ষেপ নীতিতে বিশ্বাস করে জার্মানি ও অস্ট্রিয়া।
[৭] ২০২২ সালে ইইউ পার্লামেন্টে অনুমোদিত ইস্তাম্বুল কনভেনশনে শুধু ‘হ্যাঁ মানেই হ্যাঁ’ নীতিকে সমর্থন দেয়া হয়। তবে এটাও বলা হয়, কোনও নারীকে তার অসম্মতিতে জোরপূর্বক যৌন সংসর্গে বাধ্য করা হলে তা শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। কিন্তু ২০২৩ সালের মে মাসে ধারাটির ‘আইনি ভিত্তি যথেষ্ট নয়’ বলে কনভেনশন থেকে বাদ দেয় ইইউ কাউন্সিল। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ধর্ষণের সংজ্ঞার ব্যাপারে কোনও সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি ইইউ। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী
আপনার মতামত লিখুন :