সাজ্জাদুল ইসলাম: [২] কানাডার শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার ঘটনায় ভারতের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রকাশ্য আনার পর দিল্লি-টরেন্টো তীব্র উত্তেজনা চলছে। সূত্র : সিএনএন, রয়টার্স
[৩] নিজ্জার হত্যা নিয়ে ভারত-কানাডা তিক্ত বিরোধ পাঞ্জাবেও অনুভূত হচ্ছে। রাজ্যটিতে শিখদের অনেকেই ভারতের বিজেপি সরকারের রোষানলে পড়ার পাশাপশি কানাডায় তাদের উন্নত জীবনের সম্ভাবনাও হুমকির মুখে পড়েছে বলে মনে করছেন।
[৪] মূলত নিজ্জার হত্যার পেছনে ভারত সরকারের হাত থাকতে পারে বলে গত সপ্তাহে প্রথম মন্তব্য করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের একটি শিখ মন্দিরের বাইরে গত ১৮ জুন গুলি করে হত্যা করা হয় ৪৫ বছর বয়সী নিজ্জারকে।
[৫] কানাডার হাউস অব কমন্সের সভায় প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেন, তাদের গোয়েন্দা সংস্থা নিজ্জারের হত্যার সাথে ভারত সরকারের এজেন্টদের সংশ্লিষ্টতার ‘বিশ্বাসযোগ্য’ প্রমাণ পেয়েছে। জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের সময় তিনি ব্যক্তিগতভাবে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে কথাটি জানিয়েছেন। ভারত অবশ্য ট্রুডোর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
[৬] ট্রুডোর পক্ষ থেকে এই অভিযোগ সামনে আসার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি ট্রুডোর এই অভিযোগ ভারত ও কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে। উভয় দেশ একে অপরের একজন করে কূটনীতিককে বহিষ্কার করে। কানাডার নাগরিকদের ভিসাদান স্থগিত করে ভারত।
[৭] কানাডায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় উৎসও হচ্ছে ভারত। ভারতীয় শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ৪৭ শতাংশ বেড়ে ৩ লাখ ২০ হাজার জনে পৌঁছেছে। কানাডায় যেতে চান পাঞ্জারের আন্ডারগ্রাজুয়েট শিখ শিক্ষার্থী গুরসিমরান সিং। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ভয় পাচ্ছি কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা দেবে কিনা বা ভারত সরকার এক্ষেত্রে কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে কিনা।’
[৮] ভারতের ১৪০ কোটি জনসংখ্যার মাত্র দুই শতাংশ শিখ। তবে পাঞ্জাবের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ শিখ। ৩ কোটি জনসংখ্যার উত্তর ভারতীয় এই রাজ্যেই ৫০০ বছর আগে শিখ ধর্ম জন্মলাভ করেছিল। অন্যদিকে পাঞ্জাবের বাইরে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিখ বাস করেন কানাডায়।
[৯] ভারতের পাঞ্জাবে শিখদের আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের দাবিতে গড়ে ওঠা খালিস্তান মুভমেন্ট ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানের পর স্তিমিত হয়ে যায় ১৯৮০এর দশকে। কিন্তু এ আন্দোলনের ‘শিখা’ সেখানে এখনও জ্বলছে। সম্পাদনা: রাশিদ