রাশিদুল ইসলাম: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আর ৬ মাস বাদেই দিল্লি বদলাবে, আমরা জাতিদাঙ্গা করতে দেবো না। শনিবার বিকেলে পশ্চিমবঙ্গের শালবনীতে এক সভায় বক্তব্য রাখার সময়ে তিনি ওই মন্তব্য করেন। মমতা কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারকে নিশানা করে বলেন, ‘দিল্লি আমাকে চমকায়! ওরা আমাকে ধমকায়! এটা না করলে ওটা হবে, এটা না করলে একশো দিনের কাজ প্রকল্পে টাকা দেবো না, রাস্তার টাকা দেবো না, ঘর তৈরির টাকা দেবো না! আমি বলি আর তো ৬ মাস। আর ৬টা মাস একটু কষ্ট সহ্য করুন। তার পর দিল্লি বদলাবে এবং দিল্লি বদলালে মানুষের অধিকার দিল্লি যেগুলো কেড়ে নিয়েছে, সেগুলো মানুষের হাতে আমরাই তুলে দেবো। আমরা জাতিদাঙ্গা করতে দেবো না।’ পারসটুডে
মুখ্যমন্ত্রী বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, প্রথমে দাঙ্গা করল হিন্দু-মুসলমানে। ওই তত্ত্ব আছে এখনও। ‘এনআরসি’ (জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) এখন বলছে করতে হবে। (কেন্দ্রীয় সরকার) আমায় চিঠি দিয়ে বলেছে, তুমি একমাত্র টাস্কফোর্স করোনি। কেন? তিন/চার দিন আগে চিঠি এসেছে। আমি যদি টাস্কফোর্স করি তাহলে ওই টাস্কফোর্সকে বলবে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেখো কে বিদেশি, মানে কে হিন্দু আর কে মুসলমান- এই তো অবস্থা! আসামে তো হিন্দুরাও বাদ যায়নি, মতুয়ারাও বাদ যায়নি, শিখ সম্প্রদায় বাদ যায়নি। মনে রাখবেন যুদ্ধ যখন হয়, দুর্ভিক্ষ যখন হয়, তখন একজনের ঘর ছেড়ে আরেক জনের ঘর প্লাবিত হয় না। আগুন লাগলে পাশাপাশি সব ঘরগুলোতে লাগে। তাই আগুন লাগাতে নেই, যুদ্ধ লাগাতে নেই, দাঙ্গা লাগাতে নেই, এটা মাথায় রাখতে হবে।’
এদিকে, পশ্চিমবাংলার বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী শনিবার এক সভায় বলেছেন, ‘যে কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে ঢুকেছ, তাকে কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে যেতে হবে, সে হিন্দু হোক আর মুসলমান হোক। কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে এলে তার সঙ্গে কোনও ব্যাপার নেই। যে ভারতে জন্মেছ, যে রাষ্ট্রবাদকে বিশ্বাস করো, জনগণমন অধিনায়ক গাও, বন্দেমাতরম বলো, তার সঙ্গে বিজেপির বিরোধ ছিল না, আজকেও নেই কালকেও থাকবে না।’
অন্যদিকে, বিজেপিশাসিত মণিপুরের সাম্প্রতিক সহিংসতা প্রসঙ্গে মমতা বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, ‘নিজেরাই জাতিগত দাঙ্গা লাগিয়েছে। কয়কশো লোক মারা গেছে, আমি জানি না ফিগার। কই যারা রোজ জিন্দাবাদ-জিন্দাবাদ করে তারা তো কেউ যায়নি সেখানে আজ পর্যন্ত! বলছে পরে একদিন যাবেন। কবে যাবেন? খতম হয়ে যাওয়ার পরে যাবেন?’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বিজেপির পাশাপাশি রাজ্যের সাবেক শাসকদল সিপিএমেরও তীব্র সমালোচনা করেন।