ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নিজের বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতির মামলাগুলো বাতিল করতে রাষ্ট্রপতি আইজ্যাক হারজগের কাছে ‘পূর্ণ ক্ষমা’ চাওয়ায় দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। রোববার রাতে তেল আবিবে রাষ্ট্রপতির বাসভবনের সামনে হাজারো মানুষ জড়ো হয়ে এই আবেদনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন।
বিক্ষোভকারীরা ‘ক্ষমা বেনানা রিপাবলিক’ স্লোগানধ্বনি তুলে প্রধানমন্ত্রীকে ব্যঙ্গ করেন। একজন বিক্ষোভকারী কয়েদি সাজে ও কলার স্তূপ সামনে রেখে নেতানিয়াহুর পদক্ষেপকে ব্যঙ্গাত্মকভাবে চিত্রিত করেন। বিক্ষোভে অংশ নেন বিরোধী দলীয় এমপি নামা লাজিমি এবং দীর্ঘদিনের সরকারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ শিকমা ব্রেসলারও।
শিকমা ব্রেসলার বলেন, “তিনি কোনো দায় স্বীকার না করেই বিচার বন্ধ করতে চাইছেন। দেশকে যেভাবে তিনি বিভক্ত করেছেন তার মূল্যও তিনি দিতে চান না। ইসরায়েলের ভবিষ্যৎ এখন সত্যিই ঝুঁকিতে।”
৭৬ বছর বয়সী নেতানিয়াহু রাষ্ট্রপতির কাছে যে ক্ষমা আবেদন পাঠিয়েছেন, তাতে কোনো দোষ স্বীকার বা অনুশোচনা প্রকাশ নেই। বরং এক সংক্ষিপ্ত ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, “জাতীয় স্বার্থে এই বিচার এখনই থামানো প্রয়োজন। বিচার চালিয়ে গেলে দেশ আরও বিভাজিত হচ্ছে।”
রাষ্ট্রপতির দপ্তরে পাঠানো ১১১ পৃষ্ঠার আবেদনে তাঁর আইনজীবীরা দাবি করেছেন—বিচার চললে শেষ পর্যন্ত তিনি নির্দোষই প্রমাণিত হতেন।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গত পাঁচ বছর ধরে তিনটি আলাদা মামলায় বিচার চলছে। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে—
* বিলিয়নেয়ারদের কাছ থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার ডলারেরও বেশি মূল্যের বিলাসবহুল উপহার গ্রহণ,
* বিনিময়ে রাজনৈতিক সুবিধা দেওয়া,
* সংবাদমাধ্যমে ইতিবাচক প্রচারের জন্য অনৈতিক সুবিধা প্রদান,
* এবং বিশ্বাসভঙ্গ ও জালিয়াতির অভিযোগ।
রাষ্ট্রপতির কাছে তাঁর এই ক্ষমা আবেদন প্রকাশ্যে আসার পরই দেশজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, যা এখন তেল আবিবের রাস্তায় প্রতিদিনের বিক্ষোভে রূপ নিয়েছে।
সূত্র: জনকণ্ঠ