এল আর বাদল: রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট যে করেই হোক, দেশ থেকে অবৈধ অভিবাসীদের খেদাতে চান। সব অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়ন করলে দেশের লাভ নাকি ক্ষতি হবে, সে প্রশ্ন এখন সামনে এসেছে। অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকাতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি-ডিএইচএসের অধীনে আইসের মতো আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তার, বন্দি রাখা ও দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া, অ্যাসাইলাম প্রার্থীদের ক্ষেত্রে প্রবেশ ও প্রক্রিয়া সীমাবদ্ধ করা, সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা কড়াকড়ি ও অবৈধভাবে দ্বিতীয়বার প্রবেশে ১০ বছরের কারাদণ্ডের মতো ব্যবস্থা। --- বাংলা নিউইয়র্ক
এ ছাড়া আরও অনেক নিয়ম পরিবর্তন করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
আইসের কর্মকাণ্ড নিয়ে দেশব্যাপী তুমুল আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও তা সম্প্রসারণ করে যাচ্ছেন তিনি। যে করেই হোক, দেশ থেকে অবৈধ অভিবাসীদের খেদাতে চান রিপাবলিকান এ প্রেসিডেন্ট। সব অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়ন করলে দেশের লাভ নাকি ক্ষতি হবে, সে প্রশ্ন এখন সামনে এসেছে।
এনিয়ে কয়েকটি পয়েন্ট নিচে তুলে ধরা হলো। ইউনিভার্সিটি অব নিউ হ্যাম্পশায়ারের কার্সে স্কুল অব পাবলিক পলিসির এক গবেষণায় উঠে এসেছে, আগামী দশকে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দুই দশমিক ছয় শতাংশ কমে যেতে পারে।
অভিবাসী বিতাড়নের ফলে নির্মাণ, হোটেল, কৃষি, রেস্তোরাঁ, উৎপাদন ও পরিবহন খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে শ্রমিক সংকট দেখা দেবে। ফলে এসব কর্মকাণ্ডের খরচ বৃদ্ধির পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি বাড়বে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীরগতির হবে বলে জানানো হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে।
ফেডারেল, স্টেইট ও স্থানীয় কর রাজস্বও হ্রাস পাবে। কারণ অভিবাসীরা সাধারণত সরকারের সুবিধা হিসেবে যতটা পান, তার চেযে বেশি কর প্রদান করেন।
বিপুলসংখ্যক অনথিভুক্ত শ্রমিককে দেশ থেকে বের করে দিলে দেশজ শ্রমিকদের চাকরি কমে যেতে পারে এবং তাদের মজুরি হ্রাস পেতে পারে। কারণ শ্রমবাজারে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।
অলাভজনক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউনিডোস ইউএস জানিয়েছে, বিপুল পরিমাণ অবৈধ অভিবাসীর প্রত্যাবাসনে পরিবারগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে যৌথ অর্থনৈতিক কাঠামোর পরিবারগুলোয় যখন অন্তত একজন অনিবন্ধিত ব্যক্তি রয়েছেন। তাদের কেউ প্রত্যাবাসনের শিকার হলে পরিবারের আয় প্রায় ৫৯ শতাশ কমে যেতে পারে, যা অ্যামেরিকায় জন্ম নেওয়া শিশুদের জন্য আর্থিক কষ্ট বয়ে আনবে।
আয় হারানোর কারণে বাড়িঘর হারানো বৃদ্ধি পাবে। ফলে আবাসন বাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং বাড়বে গৃহহীন ব্যক্তিও।
পরিবার ও সম্প্রদায়ের ভাঙন অর্থনৈতিক সূচকের বাইরে গিয়ে বৃহত্তর সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। গণবিতাড়নের ফলে সরকারের ব্যয় উল্লেখযোগ্য হার বাড়বে বলেও জানিয়ছে অর্থনীতি বিশ্লেষণ করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
সরকারি ব্যয় বাড়তে থাকা খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে আটক, বহিষ্কার প্রক্রিয়া ও আইনি কর্মকাণ্ড পরিচালনা।
আইস, ডিএইচএসের মতো প্রতিষ্ঠানে ব্যয়বৃদ্ধির ফলে আগামী ১০ বছরে ফেডারেল সরকার প্রায় ৯০০ বিলিয়ন ডলারের রাজস্ব হারাতে পারে, যা আর্থিক ঘাটতি আরও বাড়াবে বলে দাবি করেছে বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান।