ইফতেখার আলম বিশাল, রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী সরকারের সন্তানদের বিরুদ্ধে তারই হিমাগারে এক মেডিকেল শিক্ষার্থী, কিশোরী ও নারীকে আটকে রেখে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হিমাগারে ডেকে নিয়ে মোহাম্মাদ আলী সরকারের ছেলেসহ কর্মচারিরা এ পাশবিক নির্যাতন চালায়।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে রাজশাহী বায়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকারের ছেলে আহসান হাবিব জিকু, মেয়ে আখি ও হাবিবা খাতুনসহ আরো অজ্ঞাত ৪-৫জনের বিরুদ্ধে জনাবুর রহমান নামে এক ব্যক্তি এয়ারপোর্ট থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
এ ঘটনায় সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ আলী সরকারের ছেলে ও দুই মেয়েকে আটক করেছে পুলিশ। আহত মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরী ও এক নারীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, মামলার বাদি জনাবুর রহমানের সাথে সরকার হিমাগারের মালিক মোহাম্মদ আলী সরকারের দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক। ফলে দুই পরিবারের যোগাযোগ ও কথা-বার্তা স্বাভাবিকভাবে। কিন্তু মোহাম্মাদ আলীর ছেলে মেয়েরা তাদের এ সম্পর্ক ভালোভাবে মেনে নেয় না। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে আহসান হাবীব জিকু হিমাগারের এক কর্মচারী দিয়ে আমার ছোট বোন আইরিন ইসলাম (৩০), ইরিন ইসলাম জুবা (১১) এবং আমার খালাতো ভাই বিশাল খন্দকার অমিকে (২৭) বায়ায় অবস্থিত সরকার কোল্ড স্টোরেজে ডেকে নেয়। আমার ভাই বোন তাদের হিমাগারে গেলে তারা বিভিন্ন ধরণের গালিগালাজ শুরু করে।
আমার ছোট ভাই বোন তাদের গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে জিকুর নির্দেশে কর্মচারিরা আমার ছোট ভাই বোনদের সরকার হিমাগারের অফিস রুমে জোর পূর্বক ঢুকিয়ে কাঠের লাঠি, বাঁশ ও হাতুড়ি দিয়ে এলোপাথালী মারপিট করে। এতে তারা রক্তাক্ত জখম হয়। মারধরের এক পর্যায়ে তারা সেফটি পিন দিয়ে তাদের হাতের মাংস পিন্ডে খোঁচা মেরে রক্তাক্ত জখম করে।
সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি আমাকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছোট ভাই-বোনদের আটকে রেখে মারধর ও নির্যাতনের বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে তিনি আমি দ্রুত ঘটনাস্থালে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। মামলায় তিনি আরো উল্লেখ করেছেন, আমার ছোট বোন আইরিন ইসলাম, ইরিন ইসলাম জুবাকে ৫০নং ওয়ার্ড ও খালাতো ভাই বিশাল খন্দকার অমিকে ৪ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক হোসেন জানান, ঘটনাটি জানার পরপরই থানা থেকে পুলিশ পাঠানো হয়। উদ্ধার করা হয় আটকে রাখা তিনজনকে। পরে সেখান থেকে মোহাম্মাদ আলী সরকারের তিন সন্তানকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের পক্ষে তাদের ভাই একটি মামলা দায়ের করেছেন।