শিরোনাম
◈ ক্রিকেটের ফিক্সিং বন্ধ করার আগে, নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করেন: তামিম ইকবাল (ভিডিও) ◈ ঢাকাসহ ১০ জেলায় সন্ধ্যার মধ্যে হতে পারে ঝড়বৃষ্টি ◈ সরকারি চাকরিজীবীরা বড় সুখবর পেলেন পে-স্কেল কার্যকর নিয়ে ◈ স্বাধীনতাবিরোধীরা এখন ভোট চাইছে, হিন্দুরা বোকা নয়: মির্জা আব্বাস ◈ প্রবাসীরা বিশ্বের যেখানেই থাকুন, ভোট দিতে পারবেন: সিইসি ◈ প্রতীক ছাড়াই এনসিপি ও বাংলা‌দেশ জাতীয় লীগ নিবন্ধন পে‌তে যা‌চ্ছে ◈ পাকিস্তান তালেবানে জ‌ড়া‌চ্ছে বাংলা‌দে‌শি তরুণরা, কিন্তু কীভাবে ◈ মানুষকে চেনা যায় তার কঠিন সময়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত দিয়ে, ভালো সময়ে নয়: অনুপম খের ◈ যে কারণে বিসিবির নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন তামিম ইকবাল ◈ এমবাপ্পের হ্যাটট্রিক, রিয়া‌ল মা‌দ্রিদের দাপ‌টে কাইরাত হার‌লো ৫ গো‌লে

প্রকাশিত : ০১ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৫২ দুপুর
আপডেট : ০১ অক্টোবর, ২০২৫, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান মিয়ানমারের ভেতরেই: ইউএনএইচসিআর প্রধান

বাসস: জাতিসঙ্ঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেছেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান কেবল মিয়ানমারের ভেতরেই সম্ভব। সাহসী পদক্ষেপ ছাড়া এ সমস্যার অবসান হবে না।

রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান কেবল মিয়ানমারের ভেতরেই সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসঙ্ঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্ডি। তিনি সতর্ক করে বলেন, মিয়ানমারের সাহসী পদক্ষেপ ছাড়া রোহিঙ্গাদের দুর্দশার অবসান হবে না।

মঙ্গলবার জাতিসঙ্ঘ সদর দফতরে আয়োজিত ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি’ বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, ‘এই সঙ্কটের উৎপত্তি মিয়ানমারে। আর সমাধানও সেখানেই।’

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, আট বছর আগে মিয়ানমারের সেনাদের নির্মম সহিংসতায় ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে যায়। আর অনেকে রাখাইন রাজ্যেই বাস্তুচ্যুত অবস্থায় রয়ে যায়। এখন আরাকান আর্মি রাখাইনের বেশিভাগ এলাকা দখলে নিলেও রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। তাদের জীবনে প্রতিদিনের বাস্তবতা হলো গ্রেফতার ও আটক হওয়ার ভয়, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষায় প্রবেশাধিকার সীমিত, চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা, জোরপূর্বক শ্রম ও নিয়োগ। প্রতিদিনই তারা বর্ণবাদ ও আতঙ্কের শিকার।

বাংলাদেশের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, দেশটি বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে এবং ২০২৪ সালের নতুন করে শুরু হওয়া সঙ্ঘাতের পর আরো দেড় লাখ রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করেছে।বাংলাদেশী পোশাক

ইউএনএইচসিআর প্রধান আরো বলেন, ‘অসংখ্য চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ এখনো রোহিঙ্গার আশ্রয় দিয়ে বিশ্বের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তারা দেখিয়েছে, উদাসীনতা ও দায়িত্বহীন মনোভাব যখন স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে, সে সময়েও সহানুভূতি দেখানো সম্ভব। শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে জীবন রক্ষা করে বাংলাদেশ তা প্রমাণ করেছে।’

বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের ১.২৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তার তিনি প্রশংসা করেন। তবে বাংলাদেশে মানবিক সহায়তা তহবিলের ঘাটতি এখনো রয়ে গেছে বলেও উদ্বেগ জানান।

তিনি সতর্ক করে বলেন, যথেষ্ট তহবিল ছাড়া জরুরি সহায়তা কাটছাঁট করতে হতে পারে। ফলে শিশুদের পুষ্টিহীনতা বাড়বে এবং আরো রোহিঙ্গা বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রায় নিজেদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলবে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন।

ইউএনএইচসিআর প্রধান বলেন, ‘যদি পর্যাপ্ত তহবিল না আসে, তাহলে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও আমাদের কিছু কাটছাঁট করতে হবে। তবে আমরা শিশুদের অপুষ্টিজনিত মৃত্যু এবং বিপজ্জনক নৌযাত্রায় রোহিঙ্গাদের প্রাণহানির ঘটনা রোধের চেষ্টা করব।’

তিনি বৈশ্বিক সম্প্রদায়কে তহবিল, পুনর্বাসন, শিক্ষা ও শ্রমবাজারে প্রবেশের সুযোগ বাড়ানোর আহ্বান জানান। তবে গ্রান্ডি জোর দিয়ে বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা এই সঙ্কট সমাধান করতে পারবে না।

তিনি বলেন, ‘আমরা উদাসীনতার পথে চলতে পারি না। একটি জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস হতে দিয়ে সমাধানের আশা করা যায় না।’

রাখাইন উপদেষ্টা কমিশনের কমিশনের সুপারিশগুলো আগের মতোই প্রাসঙ্গিক এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে দিকনির্দেশনা হওয়া উচিত উল্লেখ করে গ্রান্ডি বলেন, ‘কিন্তু সাহসী পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে না।’ বাংলাদেশী পোশাক

তিনি প্রভাবশালী দেশগুলোকে আহ্বান জানান মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ও আরাকান আর্মির সাথে সক্রিয় সম্পৃক্ততা বাড়ানোর, যাতে মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা যায়। সাথে আস্থা পুনঃস্থাপন করে মিয়ানমারের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত জনগণের জন্য ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই সমাধান গ্রহণ করা যায়।

অন্যান্য সঙ্ঘাত থেকে শিক্ষা নেয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ধারাবাহিক রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ও নতুন পন্থার মাধ্যমে জটিল সংঘাতের গতিপথ পরিবর্তন করা সম্ভব।’

বক্তব্যর শেষে গ্রান্ডি বলেন, ‘মিয়ানমারের জনগণের জন্য ন্যায়সঙ্গত, বাস্তব ও ভবিষ্যৎমুখী নতুন অধ্যায় শুরু করতে চাই। রোহিঙ্গাদের দুর্দশার স্থায়ী সমাধানে, আমাদের সামনে এছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়