আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর দুই দিনব্যাপী বৈঠক শেষ হওয়ার পরদিনই চীন তাদের পারমাণবিক শক্তি প্রদর্শন করলো। বিজয় দিবস উপলক্ষে বুধবার বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত এক কুচকাওয়াজে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতাদের সামনে নতুন প্রজন্মের আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ডিএফ-৫সি উন্মোচন করা হয়।
ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষমতা:
বিশেষজ্ঞদের মতে, তরল জ্বালানি চালিত এই ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা ২০ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি, যা এটিকে যেকোনো মহাদেশে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম করে তোলে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে নিক্ষিপ্ত পারমাণবিক বোমার চেয়ে অন্তত ২০০ গুণ বেশি শক্তিশালী।
চীনের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিবিদ অধ্যাপক ইয়ং চেংজুন জানিয়েছেন, ডিএফ-৫সি হলো ডিএফ সিরিজের সবচেয়ে উন্নত সংস্করণ এবং এর ছয়টি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে:
* নতুন কাঠামোয় নির্মিত এবং সহজে পরিবহনযোগ্য:** এটি বহন করা এবং স্থাপন করা সহজ।
* দীর্ঘপাল্লার:** যেকোনো দেশের সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত হানতে সক্ষম।
* অনন্য উৎক্ষেপণ প্রযুক্তি:** এটি একটি উন্নত উৎক্ষেপণ পদ্ধতি ব্যবহার করে।
* ১০ ম্যাক পর্যন্ত গতি:** এই উচ্চ গতি একে প্রতিহত করা কঠিন করে তোলে।
* একাধিক স্বাধীন ক্ষেপণাস্ত্র বহন:** এটি একই সাথে একাধিক ওয়ারহেড বহন করতে পারে।
* বেইডো নেভিগেশন সিস্টেম:** এই সিস্টেমের মাধ্যমে লক্ষ্যভেদে এটি অতুলনীয় নির্ভুলতা অর্জন করে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের বিরুদ্ধে বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে চীন প্রতি বছর ৩ সেপ্টেম্বর বিজয় দিবস পালন করে। এবারের ছিল এর ৮০তম বার্ষিকী। চীন এই দিনটিকে 'জাপানের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের বিজয়' হিসেবে উদযাপন করে। এই ঘটনায় জাপান ইতিমধ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং বিশ্বব্যাপী সতর্কবার্তা দিয়েছে।
কূটনৈতিক টানাপোড়েন:
চীনের এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন বেইজিং-টোকিও সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ মনে করে, কুচকাওয়াজে এত শক্তিশালী পারমাণবিক অস্ত্র প্রদর্শন চীনের ক্ষমতা প্রদর্শনের একটি কৌশল।
তবে অধ্যাপক ইয়ং জোর দিয়ে বলেছেন যে, চীন সর্বদা আত্মরক্ষামূলক পারমাণবিক নীতি মেনে চলে এবং কোনো পরিস্থিতিতেই প্রথমে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না।