সৌদি আরব তাদের কর্মভিসা নীতিতে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। এখন থেকে বিদেশি কর্মীদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে ভিসা প্রদান করা হবে, যা দেশটিতে কাজের সুযোগ আরও সহজ ও বিস্তৃত করবে। এর ফলে দক্ষ কর্মীদের জন্য সৌদিতে ভালো বেতনে চাকরি পাওয়া এবং ভিসা প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ হবে।
সৌদি সরকার বিদেশি কর্মীদের দক্ষতা অনুযায়ী তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করেছে:
১. উচ্চ-দক্ষ (High-skilled): এই স্তরে রয়েছেন প্রকৌশলী, ডাক্তার, আইটি বিশেষজ্ঞ, গবেষক এবং উচ্চপদস্থ ব্যবস্থাপকদের মতো পেশাদাররা। এই ভিসার জন্য উচ্চশিক্ষা, পেশাগত অভিজ্ঞতা এবং একটি পয়েন্ট-ভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।
২. দক্ষ (Skilled): এই স্তরের অন্তর্ভুক্ত হলেন হিসাবরক্ষক, সেলস কর্মী, টেকনিশিয়ান এবং বিভিন্ন যন্ত্রচালক। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা প্রয়োজন হলেও কোনো পয়েন্ট-ভিত্তিক পদ্ধতির প্রয়োজন নেই।
৩. সাধারণ (General): এই স্তরে মূলত শ্রমিক ও সহায়ক কর্মীরা অন্তর্ভুক্ত। তাদের জন্য নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা বা দক্ষতার প্রয়োজন নেই, তবে আবেদনকারীর বয়স ৬০ বছরের বেশি হওয়া যাবে না।
বাড়তি সুযোগ: দক্ষ কর্মীদের জন্য কাজের সুযোগ বহুগুণে বাড়বে।
স্বচ্ছ প্রক্রিয়া: ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ, দ্রুত এবং সহজ হবে।
সঠিক মূল্যায়ন: কর্মীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার সঠিক মূল্যায়ন করা হবে।
ভালো বেতন: অদক্ষ কর্মীদের তুলনায় দক্ষ কর্মীরা স্বাভাবিকভাবেই ভালো বেতন ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন।
সৌদি আরবের নতুন দক্ষতা-ভিত্তিক কর্মভিসার জন্য আবেদন করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে।
১. চাকরির অফার: প্রথমেই সৌদি আরবের কোনো নিবন্ধিত কোম্পানি থেকে একটি আনুষ্ঠানিক চাকরির প্রস্তাব বা অফার লেটার পেতে হবে। এই কোম্পানিই আপনার ভিসার স্পন্সর হবে।
২. মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন: আপনার নিয়োগকর্তা সৌদি আরবের মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আপনার জন্য কাজের অনুমোদন সংগ্রহ করবেন।
৩. মেডিকেল পরীক্ষা: সৌদি সরকার-অনুমোদিত যেকোনো ক্লিনিক থেকে একটি সম্পূর্ণ মেডিকেল পরীক্ষা করাতে হবে (রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, এইচআইভি, হেপাটাইটিস ইত্যাদি)।
৪. ডকুমেন্ট জমা: পূরণ করা আবেদনপত্র, মেডিকেল রিপোর্ট, পাসপোর্ট এবং অন্যান্য জরুরি কাগজপত্র আপনার দেশের সৌদি দূতাবাসে বা কনস্যুলেটে জমা দিতে হবে।
৫. ইকামা (বসবাসের অনুমতি): ভিসা পেয়ে সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর ৯০ দিনের মধ্যে নিয়োগকর্তার সহায়তায় আপনাকে অবশ্যই "ইকামা" বা বসবাসের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
বৈধ পাসপোর্ট (কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদ থাকতে হবে)।
সদ্য তোলা রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পেশাদারী দক্ষতার সনদপত্র (শিক্ষা বোর্ড/বিশ্ববিদ্যালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্বারা সত্যায়িত)।
কাজের অভিজ্ঞতা সনদপত্র (যদি থাকে)।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
সঠিকভাবে পূরণ করা ভিসা আবেদন ফর্ম।
ভিসা ফি পরিশোধের প্রমাণপত্র বা রশিদ।