ইরানের বিরুদ্ধে সংঘাতে ‘বড় সাফল্য’ পাওয়ার দাবি করা সত্ত্বেও, দ্রুত নিজেদের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ইন্টারসেপ্টরের সরবরাহ কমে আসছে ইসরাইলের। এতে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার স্থায়িত্ব নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
মিত্রশক্তির (যুক্তরাষ্ট্র) গোয়েন্দা মূল্যায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত একজন মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল (ডব্লিউএসজে)।
ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে অবিরাম ক্ষেপণাস্ত্র বিনিময়ের মধ্যেই এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। বলা হচ্ছে, গত শুক্রবার ইসরাইল অপারেশন ‘রাইজিং লায়ন’ শুরু করার পর থেকে, ইরানি বাহিনী ইসরাইলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে প্রায় ৪০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
ইসরাইলের দাবি, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, বিশেষ করে উচ্চ-উচ্চতার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে প্রতিহত করার জন্য তৈরি অ্যারো সিস্টেম, ইরান থেকে আগত বেশিরভাগ প্রজেক্টাইলকে ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে। তবে এর জন্য বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে বলে ইসরাইলকে।
তেল আবিবের কর্মকর্তারা ডব্লিউএসজে-কে বলেছেন, ইরানের এক-তৃতীয়াংশ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপক ধ্বংস করা হয়েছে। ইরানের আকাশের ওপর ‘শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন’ বা নিয়ন্ত্রণে নেয়ার দাবিও করেছেন তারা।
তবুও গোয়েন্দা সূত্রগুলো সতর্ক করে দিয়েছে যে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র মজুদের অর্ধেকেরও বেশি অক্ষত রয়েছে, যার একটি অংশ সম্ভবত ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় রাখা আছে।
ইসরাইলের বহুস্তরযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে আয়রন ডোম, ডেভিডস স্লিং, অ্যারো সিস্টেম এবং মার্কিন সরবরাহিত প্যাট্রিয়টস এবং থাড। প্রতিবেদন মতে, ইরানের সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ ইসরাইলের জন্য বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইসরাইলি দৈনিক দ্য মার্কারের অনুমান, কেবল ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা কার্যক্রমের জন্যই প্রতিরাতে ২৮৫ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত খরচ হয় ইসরাইলের। এরমধ্যে আবার শুধুমাত্র অ্যারো সিস্টেমই ইন্টারসেপ্টর ফায়ার করে, যার প্রতিটির দাম ৩ মিলিয়ন ডলার।
প্রতিবেদন মতে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত থাকায়, ইসরাইলি আকাশ প্রতিরক্ষার মজুদ এখন তীব্র চাপের মধ্যে রয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার সাথে সম্পর্কিত একটি সূত্র ডব্লিউএসজে-কে জানিয়েছে, ইরান যদি হামলার ধারাবাহিকতা বজায় রাখে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া ইসরাইল হয়তো আর মাত্র ১০-১২ দিন তার ক্ষেপণাস্ত্র-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বজায় রাখতে পারে।