মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তিনি মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রশংসা করেন। এরপরই তিনি যুবরাজকে এক ব্যতিক্রমী প্রশ্ন করেন। রিয়াদের বিশ্ব ব্যবসায়িক নেতাদের এক সম্মেলনে ট্রাম্প সৌদি আরবের ডি ফ্যাক্টো শাসককে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি রাতে ঘুমান কিনা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজের খবরে বলা হয়েছে, সমালোচনা মোকাবিলা করে দেশকে শক্তিশালী ব্যবসায়িক কেন্দ্রে পরিণত করার জন্য সৌদি যুবরাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘মোহাম্মদ, তুমি কি রাতে আদৌ ঘুমাও? কীভাবে ঘুমাতে পারো তুমি?’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘কী দারুণ কাজ তোমার!’ এ সময় তিনি সৌদি যুবরাজকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘তিনি আমাদের অনেকের মতোই পাশ ফেরেন, সারা রাত এপাশ-ওপাশ করেন এই ভেবে যে, আমি কীভাবে আরও ভালো করতে পারি। যারা রাতে এপাশ-ওপাশ করেন না, তারা কখনোই আপনাকে প্রতিশ্রুত ভূমিতে নিয়ে যেতে পারবে না।’
ট্রাম্পের এমন উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় বিন সালমান হেসে ফেলেন এবং দর্শকেরা দাঁড়িয়ে অভিবাদন তাঁকে জানান। এমবিএস নামেও পরিচিত এই যুবরাজের নেতৃত্বে সৌদি আরবের পরিবর্তনে নিজের মুগ্ধতা প্রকাশ করে ৭৮ বছর বয়সী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সমালোচকেরা ভেবেছিল এটা (সৌদির উত্থান) সম্ভব নয়, কিন্তু আপনারা তা করেছেন। কিন্তু গত ৮ বছরে সৌদি আরব সমালোচকদের ভুল প্রমাণিত করেছে...আমি তাঁকে খুব পছন্দ করি। আমি তাঁকে অনেক বেশি পছন্দ করি।’
যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে ‘ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক’ বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি জানিয়ে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, তিনি এমবিএস ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের অনুরোধে সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আহ, যুবরাজের জন্য আমি কত কিছুই না করি!’
ট্রাম্প তাঁর বক্তৃতায় সৌদি আরবকে ‘বিশ্বের কেন্দ্র’ হিসেবে আখ্যা দেন। তবে তিনি সৌদি আরবের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও ২০১৮ সালে ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ড নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
ট্রাম্প ও এমবিএস-এর সম্পর্ক অভিন্ন স্বার্থের ওপর দাঁড়িয়ে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বড় অর্থনৈতিক সাফল্য এবং এই অঞ্চলে আমেরিকার পুনরুজ্জীবিত ভূমিকা চান। অন্যদিকে, বিন সালমান উন্নত প্রযুক্তি, সামরিক সমর্থন এবং সৌদি আরবকে আধুনিকীকরণ ও আঞ্চলিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য শক্তিশালী মিত্র খুঁজছেন।
সম্মেলনে ট্রাম্প ১৪২ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অবকাঠামো ও জ্বালানিসহ ৬০০ বিলিয়ন ডলারের একটি সৌদি বিনিয়োগ প্যাকেজের কথা তুলে ধরেন। যুবরাজের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক মার্কিন আইনপ্রণেতা, মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষকদের সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। তারা মনে করেন, এটি মানবাধিকারের চেয়ে অর্থনৈতিক স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দেয়। সূত্র: আজকের পত্রিকা