গরমে হাঁসফাঁস করা শহরবাসীর কাছে মাঠা বা বাহারি পদের শরবত এখন এক চুমুকে প্রশান্তির আশ্রয়। কিন্তু সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে ‘সস্তা মাঠা’ বা ‘প্রাকৃতিক শরবত’ বলে বিক্রি হওয়া পানীয় নিয়ে উঠেছে গুরুতর প্রশ্ন। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন—এসব পানীয়তে সত্যিকারের দই, মসলা কিংবা স্বাস্থ্যকর উপাদানের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে কেমিক্যাল আর রঙ মেশানো পানি, এমনকি কোথাও কোথাও টিস্যু পেপার ভিজিয়ে সেই পানি মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে কৃত্রিম ঘনত্ব!
রাজধানীর নিউমার্কেট, গুলিস্তান ও চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক অস্থায়ী দোকানে ‘মাঠা’ নামক একটি সাদা ঘোলাটে পানীয় ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যেখানে আসল মাঠার উপাদান দই-চিনির বাজার মূল্য হিসেব করলে কমপক্ষে ২৫-৩০ টাকা খরচ পড়ার কথা। সন্দেহজনক এই অস্বাভাবিক দামে বিক্রি হওয়া পানীয়ের নমুনা পরীক্ষায় উঠে এসেছে, এতে কোনো দুধজাত দ্রব্য নেই বরং পানি, ফ্লেভার, রঙ এবং অতিরিক্ত সোডিয়াম সংমিশ্রিত এক ধরনের দ্রবণ ব্যবহৃত হয়েছে। এবং ঘনত্ব বাড়ানোর জন্য টিসু পেপারও ব্যবহার করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব ভেজাল মাঠা পানে হতে পারে পেটের অসুখ, ফুড পয়জনিং, এমনকি দীর্ঘমেয়াদি লিভার ক্ষতি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুষ্টিবিদ ডা. রওশন আরা বলেন, “টিস্যু বা কেমিক্যাল ব্যবহার করে বানানো এইসব ভেজাল মাঠা শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।”
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জানান, ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়ে ভেজাল মাঠার দোকান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সাধারণ জনগণকে অনুরোধ করা হচ্ছে, রাস্তাঘাটে অস্বাভাবিক সস্তা দামে বিক্রি হওয়া কোনো পানীয় পান না করতে এবং সন্দেহজনক কিছু দেখলে ১৬১২১ নম্বরে কল করে অভিযোগ জানানোর জন্য।
বিস্তারিত ভিডিওতে