দুবাইয়ের এক শীর্ষ ধনীর স্ত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের বিলাসবহুল জীবনযাপনের ঝলক প্রায়ই শেয়ার করেন। চোখ ধাঁধানো পোশাক, ফ্যান্সি গাড়ি ও প্রাসাদের নানা ছবি-ভিডিও দেখিয়ে নেটিজেনদের মন কাড়েন তিনি।
তবে সম্প্রতি তিনি একটি ভিডিও প্রকাশ করে জানালেন, এই বিলাসবহুল জীবনের পেছনে রয়েছে কঠোর কিছু শর্ত, যা মেনে চলতে হয় তাকে। সৌদিও ফারাবিয়া নামে পরিচিত এই নারী তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওতে তুলে ধরেন কোটিপতি স্বামীর নির্দেশনা ও সীমাবদ্ধতা।
তিনি জানান, স্বামীর কয়েকটি কঠোর শর্ত মেনে চলতে হয় তাকে। সবচেয়ে বড় শর্ত হলো কোনো ছেলেকে বন্ধু বানানো যাবে না। এই শর্তটি নিয়ে তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন যে, এটা তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন নিয়মনীতির মধ্যে একটি।
এছাড়া ব্যাগ এবং জুতার রঙ অবশ্যই একই রকম হতে হবে, যা হয়তো ছোটখাট নিয়ম মনে হলেও তার জন্য তা বাধ্যতামূলক। তিনি আর কোনো পেশাগত কাজও করতে পারেন না, কারণ স্বামী তার সব খরচ বহন করেন, তাই কাজ করার প্রয়োজন নেই। রান্নাবান্না করাও তার কাজের অংশ নয়, কারণ তারা প্রতিদিনই বাইরে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করেন।
আরেকটি শর্ত হলো- প্রতিদিন পেশাদার মেকাপ আর্টিস্ট দিয়ে নিজেকে সাজানো। স্বামী চায় তার স্ত্রী সর্বদা পরিপাটি এবং সর্বোচ্চ সৌন্দর্য ধরে রাখুক।
ভিডিওর ক্যাপশনে মিস সৌদিও লিখেছেন, আপনারা আমাকে ‘সৌদিরেল্লা’ নামে ডাকতে পারেন, কারণ আমি তার রাজকুমারী। আমার জন্য যেসব কঠোর শর্ত রয়েছে, সেগুলো আমার কোটিপতি স্বামীর।
ভিডিওটি প্রকাশের পর থেকেই নেটিজেনদের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই এই নারীর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, এত বড় আয়েশী জীবনের পেছনে থাকা এসব শর্ত শোনার পর বোঝা যায়, অর্থের লোভে স্বাধীনতা হারানো কত বড় দাম দিয়ে আসতে হয়।
অনেকেই মন্তব্য করেছেন, কোনো অর্থ সুখ কিনতে পারে না। তবে অর্থ ছাড়া সুখী থাকার চেয়ে অর্থসহ সুখী থাকা ভালো। আবার কেউ লিখেছেন, আপনার স্বামী আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করছেন, আপনাকে বিশ্বাস করেন না এবং আপনাকে একটি পূর্ণ জীবন উপভোগ করতে দিচ্ছেন না।
আরেকজন মন্তব্য করেছেন, দেখে মনে হচ্ছে তিনি আপনার মুখের হাসি কিনে দিতে পারছেন না। এইসব প্রতিক্রিয়া থেকে বোঝা যায়, নেটিজেনরা শুধু আয়েশী জীবনের নয়, মানসিক ও আবেগিক স্বাধীনতার কথাও ভাবছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সূচনা করেছে, যেখানে আধুনিক বিলাসবহুল জীবনের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার সীমাবদ্ধতা ও দমনের বিষয় উঠে এসেছে। একদিকে যেখানে অর্থের চমকপ্রদ উপস্থিতি, সেখানে ব্যক্তির স্বাধীনতা ও মর্যাদা কতটা মূল্যবান তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
পরিশেষে, মিস সৌদিওর এই ভিডিও সমকালীন সমাজে বিতর্ক ও চিন্তার নতুন দিক উন্মোচন করেছে, যা অর্থ এবং স্বাধীনতার সম্পর্ককে নতুন করে পর্যালোচনার সুযোগ করে দিয়েছে।