স্পোর্টস ডেস্ক : আইপিএলের চলতি আসরে ফাইনালে উঠতে পাঞ্জাব কিংসের প্রয়োজন ১৩বলে ২৪ রান। ব্যাটিংয়ের হাফ সেঞ্চুরিয়ান শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গী মার্কাস স্টইনিস। এমন সময় ধারাভাষ্যকক্ষে বসে রবি শাস্ত্রী সবাইকে মনে করিয়ে দিলেন দুইশর বেশি রান করে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স কখনো হারেনি। ইনিংসের ব্রেকের সময়ও ধারাভাষ্যকাররা বারংবার মনে করিয়ে দিয়েছেন। তবে এসব পাশ কাটিয়ে ফাইনালে ওঠার মিশন থেকে একটু সরেনি পাঞ্জাব। ইনিংসের ১৯তম ওভারে বোলিংয়ে আসা আশিনী কুমারের প্রথম বলেই ছক্কা মারলেন আইয়ার।
পরের বলটা অবশ্য পাঞ্জাব অধিনায়ক মিস করেছিলেন। তবে নো বলে কপাল পুড়ে বাঁহাতি পেসারের। ফ্রি হিট পেয়ে আশিনীর অফ স্টাম্পের বাইরের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে ওয়াইড লং অফ দিয়ে ছক্কা মেরে পাঞ্জাবকে ফাইনালের আরও কাছে নিয়ে যান আইয়ার। এক বল পর ডানহাতি ব্যাটার মেরেছেন আরেকটি ছক্কা। ওভারের শেষ বলে আরেকটি ছক্কা মেরে মুম্বাইকে ৫ উইকেটে হারিয়ে পাঞ্জাবকে ফাইনালে তোলেন ৮৭ রানের ইনিংস খেলা আইয়ার। ২০১৪ সালের পর এবারই প্রথম আইপিএলের ফাইনালে উঠল পাঞ্জাব। ১১ বছর পর ফাইনালে ওঠা পাঞ্জাবের প্রতিপক্ষ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। - - ক্রিকফ্রেঞ্জি
আহমেদাবাদে জয়ের জন্য ২০৩ রান তাড়ায় শুরুটা ভালো করতে পারেনি পাঞ্জাব। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে প্রাভসিমরান সিংয়ের উইকেট হারায় তারা। ট্রেন্ট বোল্টের ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে খেলার চেষ্টায় টপ এজ হয়ে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়েছেন রিস টপলির হাতে। আগের ম্যাচে ভালো করতে না পারা প্রাভসিমরান মুম্বাইয়ের বিপক্ষে আউট হয়েছেন ৬ রানে। তিনে নেমে শুরু থেকেই জশ ইংলিস আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে থাকেন।
ইনিংসের প্রথম ওভারে জসপ্রিত বুমরাহকে দুটি করে ছক্কা ও চার মেরেছেন অস্ট্রেলিয়ান এই ব্যাটার। শুরুর ধাক্কা সামাল দিলেও পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে প্রিয়ানশ আরিয়ার উইকেট হারায় পাঞ্জাব। আশিনী কুমারের ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে মিড অফের উপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তবে টাইমিংয়ে গড়বড় হওয়ায় মিড অফে হার্দিকের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ১০ বলে ২০ রান করা প্রিয়ানশ। একটু পর আউট হয়েছেন দারুণ শুরু পাওয়া ইংলিসও।
হার্দিকের বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে উইকেটকিপার জনি বেয়ারস্টোর গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। যদিও খুব বেশি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন কিপার-বোলারের কেউই। এমন অবস্থায় রিভিউ নিয়েছিলেন ইংলিস। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটারের ব্যাট ছুঁয়েই বল বেয়ারস্টোর গ্লাভসবন্দী হয়েছে। ফেরার আগে ২১ বলে ৩৮ রান করেছেন তিনি। ইংলিস ফেরার পর খানিকটা দেখেশুনেই খেলতে থাকেন আইয়ার এবং ওয়াদেরা। ইনিংসের ১৩তম ওভারে এসে দলের রান বাড়িয়েছেন আইয়ার।
টপলির টানা তিন বলে তিন ছক্কা মারার পর সেই ওভারে ১৯ রান এনেছেন পাঞ্জাবের অধিনায়ক। পরের ওভারে বোল্ট দিয়ে গেছেন ১৪ রান। দুই ওভারে ৩৩ রান এনে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। একটু পর অবশ্য হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার আগেই ফিরতে হয় ওয়াদেরাকে। পেসার আশিনীর অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরের বলে এক্সট্রা কভারের উপর দিয়ে খেলতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় পাঁকিয়ে মিচেল স্যান্টনারকে ক্যাচ দিয়েছেন। ওয়াদেরার ব্যাট থেকে এসেছে ২৯ বলে ৪৮ রান।
ওয়াদেরার বিদায়ে ভাঙে আইয়ারের সঙ্গে ৮৪ রানের জুটি। বাঁহাতি ব্যাটার ফেরার পর আশিনীকে থার্ডম্যান দিয়ে চার মেরে মাত্র ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন আইয়ার। পাঞ্জাব অধিনায়কের পঞ্চাশ ছোঁয়ার ওভারে আউট হয়েছেন শশাঙ্ক সিং। বোল্টের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে মিড অনে ঠেলে দিয়ে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে হার্দিকের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়েছেন তিনি। তবে স্টইনিসকে সঙ্গ নিয়ে পাঞ্জাবকে ফাইনালে তোলেন আইয়ার।
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ভালো শুরু না পেলেও ৬ উইকেট হারিয়ে ২০৩ রান তোলে মুম্বাই। তিনে ও চারে নামা দুই ব্যাটার তিলক ভার্মা ও সূর্যকুমার যাদব—দুজনই খেলেছেন ৪৪ রানের করে ইনিংস। এ ছাড়া বেয়ারস্টো ২৪ বরে ৩৮ ও শেষের দিকে নামান ধীর ১৭ বলে ৩৭ রান করেছেন। পাঞ্জাবের হয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। একটি করে উইকেট পেয়েছেন যুবেন্দ্র চাহাল, স্টইনিস, কাইল জেমিসন ও বিজয়কুমার বৈশাখ।
