শিরোনাম
◈ জাতীয় দ‌লে বিদেশি কোচ কে‌নো? ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলার প্রতিক্রিয়া ◈ প্যারিসে অপহরণচেষ্টার মুখে সাহসিকতায় যেভাবে রক্ষা পেলেন ক্রিপ্টো সিইওর কন্যা! ভিডিও ◈ `আমার সোনার বাংলা' কীভাবে ও কেন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হলো? ◈ বেতন বৈষম্য কমাতে নতুন মহার্ঘভাতা পরিকল্পনায় সরকার ◈ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: স্বাধীনতার পর ৭৬ খুন, বিচার হয়নি ◈ বাংলাদেশ-জাপান বৈঠকে আসছে তিস্তা-মাতারবাড়ি-বে অব বেঙ্গল ও চীনের ভূমিকা ◈ কিনতে এসে অভিনব কায়দায় দোকান থেকে ‘১০০ ভরি স্বর্ণ’ নিয়ে পালালেন ৫ নারী (ভিডিও) ◈ জবি শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কাকরাইল মোড় ছাড়বে না (ভিডিও) ◈ আমরা ১৯৭১ সালের যুদ্ধের প্রতিশোধ নিয়েছি: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ◈ এরশাদের বউ বিদিশার গাড়ি রং সাইডে, ভিডিও ভাইরাল!

প্রকাশিত : ১৫ মে, ২০২৫, ০৩:২৯ রাত
আপডেট : ১৫ মে, ২০২৫, ০৯:৩৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বেতন বৈষম্য কমাতে নতুন মহার্ঘভাতা পরিকল্পনায় সরকার

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত মহার্ঘভাতার ঘোষণা আসতে পারে।

তারা বলেন, এই ভাতার চূড়ান্ত হার নির্ধারণে ২০ মে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক হবে।

কর্মকর্তারা টিবিএসকে জানিয়েছেন, নতুন অর্থবছরের বাজেটে এই ভাতার জন্য বরাদ্দ রাখা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রস্তাবটি চূড়ান্ত করতে অর্থ বিভাগের ভেতরে কাজ চলছে, যেখানে প্রাথমিকভাবে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ ভাতা দেওয়ার প্রস্তাবনা তৈরি করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে চালু হওয়া ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা ভাতা বাতিল করে তার পরিবর্তে এই মহার্ঘভাতা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এটি চালু হলে চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা খাতে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হতে পারে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা।

বুধবার (১৪ মে) টিবিএস জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, 'আমি এই বিষয়ে এখনই কিছু বলতে চাই না। তবে অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে আগামী সপ্তাহে একটি বৈঠক হবে, যেখানে তিনিই জনপ্রশাসন-সংক্রান্ত কমিটির প্রধান হিসেবে থাকবেন।'

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, প্রধান উপদেষ্টার সম্মতি পেলে এই মহার্ঘভাতার সিদ্ধান্ত বাজেট বক্তৃতায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

প্রাথমিক প্রস্তাব অনুযায়ী, ১ থেকে ৯ নম্বর গ্রেডের কর্মীদের জন্য ১০ শতাংশ এবং বাকিসব গ্রেডের জন্য ২০ শতাংশ হারে ভাতা চালুর কথা ভাবা হচ্ছে। এতে অতিরিক্ত খরচ হবে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। তবে ১ থেকে ৯ গ্রেডের ভাতা ১৫ শতাংশে বাড়ালে মোট ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

হাসিনা সরকারের পতনের পর—সরকারি কর্মচারীদের ওপর ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে—গত ডিসেম্বরে একটি কমিটি গঠিত হয়। সেখানে ১০ থেকে ২০ নম্বর গ্রেডের কর্মীদের জন্য ২০ শতাংশ এবং ১ থেকে ৯ নম্বর গ্রেডের কর্মীদের জন্য ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মহার্ঘভাতা দেওয়ার প্রস্তাব আসে।

এ কমিটি একাধিকবার বৈঠক করে। তাতে জনপ্রশাসন সচিব চলতি বছরের জানুয়ারি থেকেই এটি কার্যকর করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

তবে অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনায় আপত্তি তোলেন সরকারের একাধিক উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠ কিছু অর্থনীতিবিদ। তারা কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে উপদেষ্টাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। এর পর সরকার জানুয়ারিতে ভাতা ঘোষণার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। সে সময় অর্থ উপদেষ্টা বলেছিলেন, এ বিষয়ে তখনো কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

অসন্তোষ প্রশমনে নতুন চিন্তা
প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন, কমিটি গঠনের পরও ভাতা চালু না করায় প্রশাসনের ভেতরে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

বিশেষ করে নিম্ন আয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এই অসন্তোষ বেশি, যা সরকারের ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এ কারণে সরকার মহার্ঘভাতা বা অন্য কোনও উপায়ে আসন্ন বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা বাড়ানোর চিন্তা করছে বলে জানা গেছে।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৮২ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে একাধিকবার পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে—এসব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বৈষম্যের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন। আবার আগের সরকারের আমলে অবসরপ্রাপ্ত ও পদোন্নতিবঞ্চিত ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে ৭৫ কোটি টাকা।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত প্রতি বছর বেতন-ভাতা খাতে বাজেট বরাদ্দ ৬ থেকে ৮ শতাংশ বাড়ে। সেই হিসাবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য এই বরাদ্দ প্রায় ৮৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে। তবে মহার্ঘভাতা যুক্ত হলে ব্যয় বেড়ে ৯৭ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি যেতে পারে।

সাধারণত সরকার প্রতি পাঁচ বছর পর পর একটি নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করে। তবে ২০১৫ সালের জুলাইয়ে কার্যকর হওয়া অষ্টম বেতন কাঠামোয় বলা হয়, ভবিষ্যতে আর আলাদা কাঠামো ঘোষণা করা হবে না। বরং প্রতি বছরের জুলাই মাসে সব সরকারি কর্মচারীর জন্য ৫ শতাংশ বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি বলা হয়, কোনও অর্থবছরে মুদ্রাস্ফীতির হার ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেলে সেই হার অনুযায়ী বেতন বাড়ানো হবে।

গত জাতীয় নির্বাচনের আগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি কর্মচারীদের সন্তুষ্ট করতে নিয়মিত ৫ শতাংশ বৃদ্ধির পাশাপাশি আরও ৫ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। উৎস: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়