পুলিশের বরাত দিয়ে আজ বুধবার সিএনএন জানিয়েছে, মুখোশধারী তিন ব্যক্তি একটি সাদা ভ্যানে করে এসে ওই নারী, তাঁর সঙ্গী এবং শিশুপুত্রের ওপর হামলা চালায়। ভ্যানটিতে ‘ক্রোনোপোস্ট’ নামে একটি প্যাকেজ ডেলিভারি কোম্পানির লোগো থাকলেও পরে জানা যায়, এটি নকল লোগো ছিল।
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসার শীর্ষ এক কর্তার কন্যা ও নাতিকে অপহরণচেষ্টার হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন পথচারীরা। মঙ্গলবার সকালে প্যারিসের ১১তম জেলার ব্যস্ত এক সড়কে চারজন অস্ত্রধারী এই অপহরণচেষ্টা চালিয়েছিল। বিষয়টি আশপাশের ক্যামেরায়ও ধরা পড়েছে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হামলাকারীরা ওই নারীকে গাড়িতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন, এমনকি একজন হামলাকারীর কাছ থেকে একটি অস্ত্র কেড়ে রাস্তায় ছুড়ে ফেলেন। পরে জানা যায়, ওই অস্ত্রও আসলে নকল ছিল।
এ সময় পথচারীরা ও আশপাশের লোকজনও এগিয়ে আসে। এক ব্যক্তি একটি ফায়ার এক্সটিংগুইশার নিয়ে এসে হামলাকারীদের প্রতিরোধ করেন। বাধার মুখে পড়ে তারা অপহরণে ব্যর্থ হয় এবং দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
অপহরণচেষ্টার শিকার ওই নারী হলেন ‘পেমিয়াম’ নামে একটি ফরাসি ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ কোম্পানির সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইওর মেয়ে। ঘটনার সময় তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন এবং হামলার পর দীর্ঘ সময় ঘোরের মধ্যে ছিলেন। তাঁর সঙ্গীর মুখে রক্তপাত হয়েছিল। তবে সঙ্গে থাকা শিশুসহ তিনজনকেই হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পর ‘পেমিয়াম’ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ফ্রান্সে ক্রিপ্টো শিল্পে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সহকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।’ এই ঘটনার পর ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেতায়ো আগামী দিনে ক্রিপ্টো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক করবেন বলেও জানান।
প্যারিসের প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছে, সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের মাধ্যমে অপহরণ ও সহিংসতার চেষ্টার অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
এ ঘটনা ফ্রান্সে ক্রিপ্টো উদ্যোক্তাদের ওপর একাধিক হামলার ধারাবাহিকতারই অংশ। গত ১ মে এক উদ্যোক্তার বাবাকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। পরে অপহরণের শিকার ওই বাবাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। গত জানুয়ারিতে আরেক উদ্যোক্তা ডেভিড ব্যালান্ড এবং তাঁর স্ত্রীকে অপহরণ করা হয়। এ ছাড়া ডেভিডের এক হাত আংশিকভাবে কেটে ফেলা হয়। সে সময় প্রায় ১ কোটি ইউরো মূল্যের মুক্তিপণের একাংশ পরিশোধ করা হলেও সেটি পরে ট্র্যাক করে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সূত্র: আজকের পত্রিকা