ফারুক আহাম্মদ, ব্রাহ্মণপাড়া(কুমিল্লা)প্রতিনিধিঃ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার দুলালপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণপাড়া-দুলালপুর-গোপালনগর সড়কের পাশে বেজুরা এলাকায় ফসলি জমিতে পুকুর খনন করে মাছচাষ ও পুকুরের উপরিভাগে মুরগির খামার গড়ে পরিবেশ দূষণ ও জনস্বাস্থ্যের ক্ষতির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দা মো. শরীফের বিরুদ্ধে।মো. শরীাফ উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের বেজুরা গ্রামের আবুল বাশার বাদশা মিয়ার ছেলে।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে এভাবে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করে একই স্থানে মুরগির খামার ও ফিশারি পরিচালনা করে আসছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। স্থানীয়রা অভিযোগ তোলে জানান, ব্যাস্ততম সড়কের পাশে এবং আবাসিক এলাকায় পুকুরের উপরিভাগে মুরগির খামার গড়ে তুলেছেন আর নিচে মুরগির বিষ্ঠা ব্যবহার করে মাছ চাষ করছেন শরীফ। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি ঝুঁকিতে পড়েছে ওই এলাকার জনস্বাস্থ্য। এ নিয়ে ভুক্তভোগী স্থানীয় লোকজন দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। মুরগির বিষ্ঠা খাওয়া মাছ খেয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এ সড়কে যাতায়াতকারী যাত্রীরা বলেন, আসা-যাওয়ার পথে মুরগির খামারের বিশ্রী গন্ধ থেকে নাক চেপেও নিস্তার মিলছে না।
পুকুরের পানিতে মুরগির বর্জ্য মিশে পানি দূষিত হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ফলে আশপাশের জনস্বাস্থ্যও হুমকির মুখে পড়ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্রাহ্মণপাড়া-দুলালপুর-গোপালনগর সড়কের বেজুরা অংশে সড়কের পাশে পুকুরে মাছচাষ ও পুকুরের উপরিভাগে খামার স্থাপন করে মুরগি পালন করছেন মো. শরীাফ নামে এক ব্যক্তি। যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ। খামারের দুর্গন্ধে স্থানীয়রাসহ এ সড়কের যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। মুরগির বিষ্ঠা সরাসরি পুকুরে পড়ছে, আর এসব বিষ্ঠা সরাসরি গ্রহণ করছে পুকুরের মাছ। মুরগির বিষ্ঠা পানিতে মিশে পুকুরের পানি থেকে বিশ্রী গন্ধ বের হচ্ছে। আশপাশের বাড়িঘরের বাসিন্দারাসহ এ সড়কে যাতায়াতকারী যাত্রী ও পথচারীরা দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। স্থানীয়রাসহ এ সড়কে যাতায়াতকারী যাত্রী ও পথচারীরা এ ভোগান্তির অবসান চান।
স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল মিয়া বলেন, এ গ্রামে এদের কয়েকটি মুরগির খামার রয়েছে। এসব খামারের বর্জ্যের দুর্গন্ধে আমরা বাসাবাড়িতে থাকতে পারছি না। আমরা স্বাস্থ্যজনিত ঝুঁকিতে রয়েছি। আমরা চাই তারা তাদের ব্যবসা করুক, তবে আবাসিক এলাকায় নয়। তাদের এই খামারের কারণে আমরা দুর্ভোগে রয়েছি। সড়কে যাতায়াতকারী যাত্রী আরিফুর রহমান বলেন, এ সড়ক দিয়ে আসা-যাওয়ার সময় খামারটির কাছে গেলে নাক চেপেও নিস্তার পাওয়া যায় না দুর্গন্ধ থেকে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে। এ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা মো. সাদেক বলেন, এই খামারসহ তাদের আরও কয়েকটি খামার রয়েছে এই অঞ্চলে। আবাসিক এলাকায় এসব খামার গড়ে তোলায় স্থানীয় বাসিন্দারা বিপাকে পড়েছেন। এসব খামারের দুর্গন্ধে শ্বাস নেওয়ার মত অবস্থা থাকে না। খামারের কাছাকাছি যেসব ঘরবাড়ি রয়েছে তারা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি ভোগ করছেন।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. অরূপ সিংহ বলেন, উপরে মুরগির খামার আর নিচে মাছচাষ করা হলে মুরগির বিষ্ঠা সরাসরি পানিতে পড়ে। এর ফলে এসব বিষ্ঠা সরাসরি খাবার হিসেবে গ্রহণ করে মাছ। এছাড়া এসব বিষ্ঠা পানিতে মিশে পানি দূষণসহ আশপাশে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এতে পরিবেশ দূষণের ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়াও অ্যামোনিয়া গ্যাসের মতো বিষাক্ত উপাদানও মাছে মেশার কারণে মাছ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। আর এসব ঝুঁকিপূর্ণ মাছ খেয়ে মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মাহমুদা জাহান বলেন, বিষয়টি আপনার কাছ থেকে অবগত হলাম। সরেজমিনে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।