আরমান কবীর, টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ছেলে জামিলের (২০) বিরুদ্ধে বাবা রাশিদুল হক খান সুমনকে (৪৭) অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার এক সপ্তাহ পর স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছে জামিল। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০ আগস্ট রাতে উপজেলার চকপাড়া গ্রামে বাবা সুমন ও তার ছেলে জামিল একই ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। ওই সময় অসুস্থ বাবাকে ওষুধ দেওয়ার অজুহাতে অতিরিক্ত ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে দেন জামিল। এতে মৃত্যু নিশ্চিত হয় সুমনের।
পরদিন সকালে জামিল প্রতিবেশিদের জানায়, তার বাবার মৃত্যু হার্ট অ্যাটাকে হয়েছে। স্থানীয়রা মরদেহ দেখে সন্দেহ প্রকাশ করলেও সেদিনই সন্ধ্যায় দাফন সম্পন্ন হয়।
এলাকাবাসীর দাবি, হত্যাকাণ্ডটি ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। কারণ ঘটনার তিন দিন আগে জামিল বাড়ির পেছনে একটি গর্ত খুঁড়ে খড়কুটো দিয়ে ঢেকে রেখেছিল। ধারণা করা হচ্ছে, সুমনের মরদেহ গুম করার জন্যই এই পরিকল্পনা ছিল। তবে সাহস করে মরদেহ গোপন করতে না পেরে সে হার্ট অ্যাটাকের গল্প সাজায়। কিন্তু ৭ দিন পর গর্তের বিষয়টি প্রতিবেশিদের নজরে আসে। একই সঙ্গে সুমনের মরদেহের অবস্থাও সন্দেহ তৈরি করে। এতে স্থানীয়রা জামিলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে একপর্যায়ে সে স্বীকার করে, সে তার বাবাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করেছে এবং গর্ত খুঁড়ে মরদেহ গোপনের চেষ্টাও করেছিল। হত্যাকারি জামিলের স্বীকারোক্তি শুনে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। ঘাটাইল থানা পুলিশ জামিলকে গ্রেপ্তার করে।
নিহতের বাবা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক খান জানান, ‘সুমন আমার ছেলে, আর জামিল আমার নাতি। কেন আমার নাতি নিজের বাবাকে হত্যা করল, তা বুঝতে পারছি না। সুমন গ্রামের পাশেই ধলাপাড়া বাজারে ওষুধের ফার্মেসি ব্যবসা করতো। সুমনের স্ত্রীর (জামিলের মা) সঙ্গে বছর চারেক আগে বিচ্ছেদ হয়েছিল। এরপর থেকেই সংসারে অশান্তি চলছিল। আমি এই নৃশংস হত্যার সঠিক বিচার চাই।’
ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে সুমনকে প্রথমে আটক করা হয়। পরে গত বুধবার রাতে নিহতের বাবা থানায় মামলা করে। সেই মামলায় বুধবার পিতা হত্যার দায়ে জামিলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান দেওয়া হয়েছে।