ফরহাদ হোসেন, ভোলা প্রতিনিধি: দীর্ঘদিনের জনবল সংকটে কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়েছে ভোলা সরকারি বালিকা শিশু পরিবার। এতিম ও অসহায় শিশুদের আশ্রয় ও পরিচর্যার জন্য প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটিতে ১৯ জন স্টাফ থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ২ জন। শূন্য রয়েছে ১৭টি পদ। ফলে আশ্রয়ে থাকা ৬১ জন বালিকার সঠিক যত্ন ও সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।
১৯৭২ সালে ভোলা সদর উপজেলার চরনোয়াবাদে প্রতিষ্ঠিত হয় এই শিশু পরিবার। সাড়ে চার একর জমির ওপর নির্মিত পাঁচতলা ভবনে ১০০ জন বালিকার থাকার ব্যবস্থা থাকলেও বর্তমানে ৬১ জন বাস করছে এখানে—এর মধ্যে ৬–১০ বছর বয়সী ৩১ জন, ১০–১৫ বছর বয়সী ১৮ জন এবং ১৫–১৮ বছর বয়সী ১২ জন। তাদের অনেকের বাবা-মা কেউ নেই, কারও শুধু মা বা বাবা নেই।
স্টাফ সংকটে সবচেয়ে বড় ভোগান্তি হচ্ছে দৈনন্দিন যত্নে। চারজন ‘খালাম্মা’ থাকার বিধান থাকলেও এখানে একজনও নেই। ফলে শিশুরা পিতা-মাতার স্নেহের পাশাপাশি খালাম্মার যত্ন থেকেও বঞ্চিত। বাবুর্চির পদোন্নতির পর খাবার পরিবেশনেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। চিকিৎসক, নার্স, কম্পাউন্ডার, সহকারী শিক্ষক, অফিস সহকারীসহ প্রায় সব পদই বছরের পর বছর শূন্য।
আশ্রয়স্থলে থাকা কয়েকজন বালিকা জানিয়েছে, পর্যাপ্ত স্টাফ না থাকায় তারা পড়াশোনা ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বালিকা পরিবারের ভারপ্রাপ্ত উপতত্ত্বাবধায়ক সেলিনা আক্তার বলেন, মাত্র ২ জন স্টাফ নিয়ে এত বড় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হলেও দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রজত শুভ্র সরকার জানান, সীমিত জনবল দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি চালানো হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় নিয়োগের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সচেতন মহল দ্রুত জনবল নিয়োগ দিয়ে ভোলা সরকারি বালিকা শিশু পরিবারে আশ্রয় নেওয়া এতিম শিশুদের জন্য সঠিক যত্ন ও নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।