টানা বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার সীমান্তঘেঁষা নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ৮টা অবদি আকাশে বৃষ্টির আভাস না থাকলেও ৯টায় আকাশের সেই চিত্র পাল্টে গেছে। আকাশে জমেছে মেঘ, শুরু হয়েছে বৃষ্টি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ত্রিপুরা এলাকার পাহাড়ি ঢলের পানি আখাউড়া-আগরতলা সড়কের বঙ্গেরচর এলাকায় সড়কটি দিয়ে অতিক্রম করছে। শুধু তাই নয়, আশপাশের খালগুলো পানিতে টইটুম্বুর। আর সেই খালের মধ্যে জমানো পানি ঢুকছে ঘর-বাড়িতে। এতে থমকে গিয়েছে সেখানকার জীবনযাত্রা। দোকানপাটে পানি ঢোকায় স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যাবসা বাণিজ্য। তবে স্থলবন্দরে বাণিজ্য কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান জানান, আকস্মিক বন্যায় আখাউড়া স্থলবন্দরের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটেনি। সকাল সাড়ে ১০টা অবদি ৩টি ট্রাকে করে ১৫ টন বরফায়িত মাছ ভারতের আগরতলায় রপ্তানি হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আখাউড়া দক্ষিণ, মোগড়া ও মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ১৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সেখানকার ৪৫০টি পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি.এম রাশেদুল ইসলাম বলেন, প্রয়োজনীয় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেখানকার পানিবন্দি কিছু মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া তাদের কাছে শুকনো খাবার পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনজুর রহমান জানান, সকালে ত্রিপুরার হাওড়া নদীর পানি বিপৎসীসার ৫২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে অতিক্রম করছে। আর সেই পানি বাংলাদেশে ধেয়ে আসছে।
স্থানীয়দের ভাষ্যেমতে, এ বন্যা এতটাই আকস্মিক ছিল যে অনেক পরিবার প্রস্তুত হওয়ার আগেই পানিবন্দি হয়ে পড়ে। রাতের অন্ধকারে ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হয়েছে বহু মানুষকে। অনেকেই নিজের মালামাল রক্ষা করতে না পারায় ঘরবাড়ি ও খামারের ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত ও ঢলের তীব্রতায় মোগড়া, মনিয়ন্দ ও দক্ষিণ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পানি উঠে যায়, ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন। গতকাল রোববার উপজেলার ১০ টি গ্রাম প্লাবিত ছিলো।