শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্রে পর্যটক ভিসায় নতুন চাপ: দ্রুত অ্যাপয়েন্টমেন্টে মোটা অঙ্কের ফি প্রস্তাব ◈ কবে খুলবে নগর ভবনের তালা, যা জানালেন ডিএসসিসি প্রশাসক ◈ জ্বালানি তেলের দাম কমেছে, বাড়তি ভাড়া নিলেই ব্যবস্থা: উপদেষ্টা ◈ কোরবানির হাটে স্বস্তি, লাখে ২০-৩০ হাজার টাকা কম দামে গরু বিক্রি ◈ পর্তুগাল‌কে ফাইনা‌লে তুল‌লেন রোনালদো, জার্মা‌নির স্বপ্নভঙ্গ ◈ যুক্তরাজ্যে প্রধান উপদেষ্টার সফর, লন্ডনে ইউনূস-তারেক বৈঠক হবে কি? ◈ মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি, ক্রেতার তুলনায় বিক্রি কম! ◈ আকাশপথে বাণিজ্যে নবযুগ: সিলেট-কক্সবাজারে ফ্রেইটার চালু, তিনগুণ বাড়ছে কার্গো সক্ষমতা ◈ ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে অন্তত ২২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট ◈ লন্ডন চলে যাচ্ছেন ডা. জুবাইদা রহমান

প্রকাশিত : ০৩ জুন, ২০২৫, ০৭:২৩ বিকাল
আপডেট : ০৫ জুন, ২০২৫, ১২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভালো করে পড়াশোনা করিস’ — মেয়েকে শেষ কথা বলে ফাঁস নিলেন সৌদি প্রবাসী পিতা

ময়মনসিংহের নান্দাইলের সিংরুল ইউনিয়নের মহাবৈ গ্রামের রাজিব মিয়া ওরফে হিরো আলম (৩২) নামে এক যুবক সৌদি আরব থেকে পরিবারের সঙ্গে ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার (০২ জুন) সকালে এমন ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ধার-দেনা ও সহায়-সম্পদ বিক্রি করে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে সৌদি আরব যান হিরো আলম। তার আকষ্মিক এমন মৃত্যুতে পরিবারে চলছে আহাজারি। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। খবর পেয়ে সোমবার বিকেলে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পুরো বাড়িজুড়ে চলছে শোকের মাতম।

চিৎকার করে কান্না করছেন বৃদ্ধা মা আনোয়ারা বেগম (৮০)। আমার বাজানরে মাইর‌্যালছে আজিজুইল্যা। হেরে তোমরা ধরো। আমি অহন কারে লইয়া বাচবাম। এ সময় হঠাৎ তিনি অচেতন হয়ে পড়েন।

আজিজুল কে জানতে চাইলে পরিবারের লোকজন জানান, পাশের হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের উত্তর গোবিন্দপুর গ্রামের মো. আবেদ আলীর ছেলে।

তার মাধ্যমে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে এক বছর আগে সৌদি আরবের দাম্মাম যান। কথা ছিল একটি ফ্যাক্টরিতে ৪০ হাজার টাকা বেতন পাবেন। কিন্তু যাওয়ার পর আকামা না থাকায় ও কাজ না পেয়ে পালিয়ে ছিলেন। এ অবস্থায় বড় ভাইয়ের সাহায্যে একটা কাজের ব্যবস্থা হলেও সেই বেতন দিয়ে মাস শেষে নিজের খরচ মেটানোও সম্ভব হতো না। এদিকে দেশের ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে পাওনাদাররা স্ত্রী চাঁদনি বেগমের কাছেও তাগাদা দিতে থাকে।

স্ত্রী ও পরিবারের লোকজন টাকা পরিশোধ করতে না পেরে পাওনাদারের তোপের মুখে পড়ে ছিল বেকায়দায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে স্ত্রী চাঁদনি বেগম সৌদিতে স্বামী হিরো আলমের সঙ্গে ফোনে প্রায় প্রতিদিনই এসব বিষয়ে কথা বলত। কিন্তু হিরো আলম টাকা দিতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দিত। এক পর্যায়ে বাড়ির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

হিরো আলমের ভাবি নিপা আক্তার জানান, সোমবার বেলা ১১টার দিকে তার মোবাইল নম্বরে হিরো আলম অন্য একটি ফোনে ফেসবুক লাইভে থাকাকালীন ভিডিও কল দেয়। এ সময় স্ত্রী চাঁদনির সঙ্গে ২ মিনিট কথা বলার পর দুজনের মধ্যে টাকা পাঠানো নিয়ে উচ্চবাচ্য হয়। এক পর্যায়ে ফোনটি তাকে (ভাবি) দিতে বলে।

তখন হিরো আলম জানায়, তার পক্ষে দেশে টাকা পাঠানো সম্ভব হবে না। নিজেই খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন। এ সময় তার মা ও দুই সন্তানকে দেখে রাখার জন্য অনুরোধ করেন।

এক পর্যায়ে বড় মেয়ে আশা মনি (১২) ও ছোট মেয়ে হাবিবা আক্তারকে (৭) ফোনটি দিতে বলে। পরে ছোট মেয়ে হাবিবার সঙ্গে কথা বলতে বলতে একটি গাছে ফাঁসিতে ঝুলে যায়। পরে মোবাইলটির স্ক্রিন অন্ধকার হয়ে যায়।

জানতে চাইলে নিহত হিরো আলমের ছোট মেয়ে হাবিবা বলে, তাকে ফোন করে বাবা জানায়, ভালো করে পড়ালেখা করতে। আর তার জন্য দোয়া করতে। এই বলেই ফাঁসিতে ঝোলে। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর সৌদি আরবে অবস্থান করা বড় ভাই আরিফুল ইসলাম ফোন করে ভাই হিরো আলম গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে বলে নিশ্চিত করেন।

স্থানীয়রা জানায়, হিরো আলম খুবই ভালো ছেলে ছিল। সংসারের ব্যয় মেটাতে পেরে একটা স্বপ্ন নিয়ে সৌদি আরব গিয়েছিল। কিন্তু আদম ব্যবসার ফাঁদে পড়ে এখন সবই শেষ হলো। এ ঘটনার জন্য আদম ব্যবসায়ী আজিজুলের বিচার চান তারা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আজিজুল মোবাইল ফোনে বলেন, পাঠানোর তিন মাস পর আমার কোনো দায়িত্ব থাকে না। আমার কাজ সঠিকভাবে পাঠনো, সে সহায়-সম্পদ বিক্রি করে যাবে না কীভাবে যাবে সেটা আমার দেখার বিষয় না। এ বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। উৎস: কালবেলা।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়