নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে টানা অবস্থান কর্মসূচির পর কর্মবিরতি, পাশাপাশি গণছুটির কর্মসূচিতে হুমকির মুখে রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। কর্মবিরতির কারণে লাইনের ত্রুটি মেরামত করা যাচ্ছে না, এতে চট্টগ্রাম পবিস-২ একটি ফিডারসহ বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। দেশের বিভিন্ন মফস্বল এলাকায়ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর পাওয়া গেছে।
পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সকল লাইনম্যান কর্মস্থল ত্যাগ করায় বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। ওই সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার কামরুল ইসলাম চিঠি মারফত উদ্বেগের কথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন। বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখা অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সিলেট পবিস-১ ও ২ সহ অনেক সমিতিতে গণছুটির খবর পাওয়া গেছে।
বিদ্যুৎ কর্মীদের দ্রুত কাজে ফেরানো না গেলে পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা করছেন অনেকেই। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে উভয়পক্ষই অনড় অবস্থানে রয়েছেন। আরইবি-পবিস দ্বৈত ব্যবস্থাপনা নিরসন, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও চেয়ারম্যানের অপসারণসহ ৭ দফা দাবিতে অটল আন্দোলনকারীরা। প্রয়োজনে ঈদও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পালনের আগাম ঘোষণা দিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ এসোসিয়েশন। ২১ মে থেকে টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকের কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে ২৮ মে একটি কমিটি গঠন করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির নেতৃত্বে ওই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ঈদের আগেই ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ এসোসিয়েশনের ব্যানারে চলমান আন্দোলন এবং সংগঠনটি বিধিবদ্ধ কোন সংগঠন নয় বলে উল্লেখ করা হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের ওই পদক্ষেপের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে আন্দোলনকারীরা। কোন রকম আলোচনা না করে একপাক্ষিকভাবে করা কমিটি প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছে তারা।
গত ২১ মে থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ এসোসিয়েশন। আন্দোলনের এক পর্যায়ে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি জরুরি সেবা বহাল রেখে কর্মবিরতি পালন করে আসছে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আন্দোলনকারীরা। ৩১ মে আন্দোলনের নতুন মাত্রা যোগ করেছে জরুরি অভিযোগ কেন্দ্রের মোবাইলসমূহ স্ব-স্ব সমিতির অফিস প্রধানের কাছে জমার মাধ্যমে।
পবিস টাঙ্গাইলের লাইন শ্রমিক সানোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের সঙ্গে কোন রকম আলোচনা না করে বিদ্যুৎ বিভাগ এক তরফা কমিটি করেছে। আমরা ওই কমিটি প্রত্যাখ্যান করছি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরছি না।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ এসোসিয়েশনের সভাপতি ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ৪ জুন বুধবার অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে সকল সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।