বোয়ালিয়া থানায় পর্নোগ্রাফি মামলায় ঢাকার ব্যবসায়ী গ্রেফতার
ইফতেখার আলম বিশাল : রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় দায়ের হওয়া এক পর্নোগ্রাফি মামলায় রাজধানী ঢাকার খিলক্ষেত এলাকার এক গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ব্যবসায়ী সারোয়ার আজাদ (৩৫)-কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে সিআর মামলা নম্বর ৬৭৭/২০২৫ (বোয়ালিয়া) অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের করা হয়।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহমেদ গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ২৭ মে ২০২৫ ইং তারিখে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এক নারী ভুক্তভোগী পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ এর ৮(১), ৮(২) ও ৮(৩) ধারায় এ মামলা দায়ের করেন। আদালত থেকে ওয়ারেন্ট ইস্যু হলে ৩১ মে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে আসা হয়। পরদিন ১ জুন তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত সারোয়ার আজাদ, খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ-২ এলাকার বাসিন্দা এবং আবুল কালাম আজাদের পুত্র।
মামলার এজাহার ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত সারোয়ার আজাদ ভুক্তভোগী নারীর কিছু ব্যক্তিগত ও অশ্লীল ছবি সংগ্রহ করে দীর্ঘদিন ধরে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিল। ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা আদায় করে বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
এছাড়া, অভিযুক্ত আরও হুমকি দেয় যে, ভুক্তভোগী তার কথামতো না চললে ও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন না করলে তার নগ্ন ছবি স্বামী, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের মাঝে ছড়িয়ে দিবে।
ভুক্তভোগী আতঙ্কিত হয়ে বিষয়টি তার স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের জানালে তারা অভিযুক্তকে বারবার ছবি ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু সারোয়ার আজাদ নানা কৌশলে তা এড়িয়ে যান।
২০২৪ সালের ২৪ জুন তারিখে ‘রিফাত খান’ নামীয় একটি ফেসবুক আইডি থেকে ভুক্তভোগীর স্বামীর ম্যাসেঞ্জারে পরপর কয়েকটি অশ্লীল ছবি পাঠানো হয়। পরবর্তীতে জানা যায়, সেই ছবি পাঠানো হয়েছিল ‘সারোয়ার আজাদ’ নামে পরিচালিত অপর একটি ফেসবুক আইডি থেকে।
ভুক্তভোগীর স্বামী ছবিগুলি প্রিন্ট করে সংরক্ষণ করেন এবং এরপর পরিবারটির ওপর চাপ আরও বেড়ে গেলে শেষ পর্যন্ত বাদী নারী আদালতের শরণাপন্ন হন।
অভিযোগে আরও জানা যায়, অভিযুক্ত সারোয়ার আজাদ ও ভুক্তভোগীর স্বামী পরস্পর খালাতো ভাই, যা মামলার পারিবারিক জটিলতাকে আরও স্পর্শকাতর করে তুলেছে।
ওসি মোস্তাক আহম্মেদ বলেনপর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ অনুযায়ী, অনুমতি ব্যতিরেকে কারও ব্যক্তিগত ছবি ধারণ, সংরক্ষণ ও প্রচার শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এ সংক্রান্ত মামলাগুলোতে বিচারিক আদালত বেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
রাজশাহী প্রতিনিধি