শিরোনাম

প্রকাশিত : ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০৬:২৭ বিকাল
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০৬:২৭ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নিপাহ ভাইরাস সচেতনতায় ৬টি কারণ বললেন ডা. জুলফিকার

ডা. জুলফিকার

শাহীন খন্দকার: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সুপার স্পেশাল হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. জুলফিকার রহমান খান বলেন, সম্প্রতি দেশের ২৮টি জেলায় নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে।

প্রতি বছর শীত আসার সাথে নিপাহ ভাইরাসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। নিপাহ ভাইরাস মূলত বাদুড় থেকে ছড়ায়। রস সংগ্রহের হাড়ি-পাত্রটি খোলা থাকায় ভাইরাস আক্রান্ত বাদুড় খুব সহজেই রস পান করতে করতে গিয়ে  প্রোস্রাব ও মলমুত্র ত্যাগ করে ভাইরাসটি ছড়িয়ে দিতে পারে। তাই খেজুরের রস সংগ্রহের পাত্র ডাকনা দিয়ে  ডেকে কাপড় দিয়ে বেধে দিওেয়ার পরামর্শ দেনতিনি। সেই সঙ্গে বাদুড় ও পাখী খাওয়া ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

শুধু তাই নয়, যে কোন ফল পানিতে পরিস্কার করে  ধুইয়ে কিছু সময় রেখে পরিস্কার কাপড় দিয়ে মুছে খাওয়ার পরামর্শ দিলিন ডা. জুলফিকার রহমান খান।

তিনি বলেন, নিপাভাইরাস জ্বরের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের অবশ্যই নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, নিপাভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যসেবায় ছয়টি নিদের্শনা মেনে চলতে হবে।

নিদের্শনা সর্ম্পকে এই চিকিৎসক বলেন, রোগী দেখার সময় অবশ্যই মাক্স ব্যবহার করতে হবে। রোগী দেখে শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাবান দিয়ে হাত পরিস্কার করে নিতে হবে। নিপাভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখতে হবে। আর বাসায় রেখে যদি চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয় তাহলে তাকে পৃথক রোমে রেখে সেবা দিতে হবে।

এই রোগের লক্ষন সর্ম্পকে তিনি বলেন, রোগী অজ্ঞান হয়ে যায় এক্ষেত্রে হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউতে) রাখতে হবে। এসময়ে পরিচর্যাকারিদের শুধু মাস্ক বা গ্লাভাস পরলেই চলবে। কারণ রোগী থেকে বাসাসের মাধ্যমে নিপাভাইরাস ছড়ায় না।

তাই আইসিইউতে রেখে এই রোগীর চিকিৎসা করা যায়, এ জন্য রেফার্ড করার প্রয়োজন নেই। যেকোন প্রকার তথ্যের জন্য রোগীর আত্বিয়স্বজন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতা নিতে পারেন ১৬২৬৩ অথবা ৩৩৩ এই নম্বরে।

উল্লেখ্য, চলতি বছর নিপাহভাইরাসে আক্রান্ত ৮ জনের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি জানান। ডা. জুলফিকার রহমান খান বলেন, নিপাহ ভাইরাস আতঙ্ক নয় প্রয়োজন সাবধানতা এবং সচেতনতা।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার ছোট্ট সুঙ্গাই নিপাহ গ্রামে ১৯৯৯ সালে প্রথম এই নিপাহ ভাইরাস রোগ দেখা যায় । সংক্রমনের উৎস ছিলো নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত অসুস্থ শুকুরের দেহ থেকে। সেই সময়ে রোগটি যাতে মহামারি আকারে ছড়িয়ে না পরে সেই লক্ষ্যে লাখ লাখ শুকুর মেরে ফেলা হয়েছিলো সেই সময়।

তিনি আরও বলেন, আক্রান্ত শূকর থেকে ভাইরাস বাড়ির পোষা কুকুর-বিড়াল, ঘোড়া, ছাগলের দেহেও ছড়িয়ে পড়েছিল।

সেই সময় ২৬৫ জনের মধ্যে এনসেফালাইটিস দেখা দেয়, যার মধ্যে মারা যায় ১০৫ জন মানুষ। আক্রান্ত এক রোগীর মস্তিষ্ক থেকে একটি নভেল প্যারামিক্সো ভাইরাস আলাদা করা হয়। লোকটির গ্রামের নামেই ভাইরাসের নাম দেওয়া হয় নিপাহ ভাইরাস। ভাইরাসটি ফলভূক বাদুড়ের মধ্যেও শনাক্ত করা হয়েছিল। এর থেকে ধারণা করা, বাদুড় থেকেই ভাইরাসটি ছড়িয়েছে।

এসকে/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়