শিরোনাম
◈ ভুয়া জুলাই শহীদ-যোদ্ধাদের নাম তালিকা থেকে বাদ, জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় ◈ কুয়াকাটা সৈকত থেকে আবারও অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার ◈ আদমদীঘিতে ভাঙা রেললাইনে কম্বল গুঁজে ১৮ ঘন্টা ট্রেন চলাচল ◈ জুলাই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হলে সব ধর্মের মানুষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা  ◈ ব্যক্তি বিবেচনায় এলএনজি কেনা হচ্ছে না, পিটার হাসের কোম্পানি প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা ◈ বিসিএস পরীক্ষা: কর্মসূচির সময় পরিবর্তন করল জামায়াত ◈ চশমা ছাড়াই স্পষ্ট দেখা সম্ভব, কার্যকর আই ড্রপ উদ্ভাবন ◈ যেসব বিষয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে নতুন বেতন কাঠামোতে  ◈ আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে ইসরা‌য়েল‌কে বহিষ্কারের দাবি জানা‌লেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী ◈ কূটনৈতিক সংকট ছাপিয়ে বাণিজ্যে ভারত–বাংলাদেশের পারস্পরিক নির্ভরশীলতা বাড়ছে

প্রকাশিত : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:৪৮ দুপুর
আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৪:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

টয়লেটে বসে মোবাইল ফোন ব্যবহার, যে ভয়ংকর ঝুঁকি অপেক্ষা করছে আপনার জন্য!

বর্তমানে টয়লেটে বসে মোবাইল ফোন স্ক্রল করেন এমন মানুষের সংখ্যা বিশ্বজুড়ে বেড়ে চলেছে। এতে ক্ষতি হচ্ছে অনেকটাই। বয়সটা আসলে শুধু সময়ের নয়, অনেকটা স্বাস্থ্যকেন্দ্রিকও। গবেষকেরা বলছেন, টয়লেটে মোবাইল ফোন নিয়ে গিয়ে বেশি সময় বসে থাকা হেমোরয়েড হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। বিশেষত পাঁচ মিনিট বা তার বেশি সময় ধরে বসে থাকা এই ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।

হেমোরয়েডের ঝুঁকি কেবল টয়লেটে বসে মোবাইল ফোন স্ক্রল করার জন্যই বাড়ে না; অনেক কারণেই সেটা হতে পারে। তবে মোবাইল ফোন স্ক্রলিং বিষয়টিকেও এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। আর তাই এ বিষয়ে সতর্ক করছেন গবেষকেরা। খানিকটা সচেতনতার মাধ্যমে মোবাইল ফোন কম ব্যবহার করলে, আঁশজাতীয় খাবার ও পানি বেশি খেলে এবং শরীরচর্চা করলে এসব ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

কেন এমন বলছেন গবেষকেরা

৩ সেপ্টেম্বর পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সে (পিএলওএস) একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, একটি মেডিকেল সেন্টারে কোলনোস্কোপি করতে আসা প্রাপ্তবয়স্ক ১২৫ ব্যক্তির টয়লেটে বসা ও অন্যান্য অভ্যাস বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাঁদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ অংশগ্রহণকারী স্বীকার করেছেন, তাঁরা টয়লেটে থাকাকালীন মোবাইল ফোন স্ক্রল করেন। দেখা গেছে, যাঁরা স্ক্রল করেন, তাঁদের মধ্যে হেমোরয়েড হওয়ার ঝুঁকি ৪৬ শতাংশ বেশি। গবেষকেরা দেখেছেন, মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের প্রত্যেকে টয়লেটে ৫ মিনিট বা তার বেশি সময় কাটান। এই অভ্যাস যাঁদের থাকে, তাঁরা সাধারণত সামগ্রিকভাবে শরীর কম সক্রিয় রাখেন।

টয়লেটে মোবাইল ফোন ব্যবহারে চিকিৎসকের দৃষ্টিভঙ্গি

হিউস্টন মেথোডিস্ট ক্লিয়ার লেক হাসপাতালের চিকিৎসক মাইকেল জে. অ্যালেন বলেন, ‘টয়লেটে দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকলে মলদ্বারের রক্তনালিগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি হয়।’ তিনি স্বাস্থ্যবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল ‘হেলথলাইন’কে বলেন, ‘রক্ত সেখানে জমতে থাকে। এই ফুলে যাওয়া রক্তনালিগুলোর কারণে হেমোরয়েড হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এটা অনেকটা বাগানে পানি দেওয়ার পাইপ বাঁকিয়ে রাখার মতো।

যত বেশি সময় বাঁকানো থাকবে, ভেতরের চাপ তত বাড়বে।’ ইট’স মি অ্যান্ড ইউ ক্লিনিকের একজন চিকিৎসক স্নিগুয়েলে গেইগে বলেন, ‘টয়লেটে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে অনেকে নিজের অজান্তেই অনেকক্ষণ ধরে একভাবে বসে থাকেন, যা মলদ্বারের রক্তনালিগুলোর ওপর ধারাবাহিক চাপ সৃষ্টি করে।’ তিনি বলেন, ‘এই অবস্থাটা সাধারণ চেয়ারে বসার মতো নয়। চেয়ারে পেলভিস বা কোমর কিছুটা চাপমুক্ত করার উপায় আছে। টয়লেটে এমনভাবে বসে থেকে একটানা চাপ পড়লে ওই রক্তনালিগুলো ফুলে গিয়ে হেমোরয়েড হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।’

ঝুঁকি কমানোর উপায়

⦁ বাথরুমে মোবাইল ফোন নিয়ে না যাওয়া।

⦁ টয়লেটে বসে থাকার সময় সীমিত রাখা।

⦁ ১০ মিনিটের বেশি বসে থাকা উচিত নয়। আদর্শ সময় হতে পারে ৩ থেকে ৫ মিনিট।

⦁ খাদ্যতালিকায় আঁশজাতীয় খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য কমানো।

⦁ পর্যাপ্ত পানি পান ও হালকা ব্যায়াম করা।

হেমোরয়েডের উপসর্গ

ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক এবং জেনারেল ও কলোরেকটাল সার্জন মো. নাজমুল হক মাসুম এ বিষয়ে জানান, হেমোরয়েডের চিকিৎসা তার ধরনের ওপর নির্ভর করে। তিনি হেমোরয়েডের সাধারণ উপসর্গ সম্পর্কে ধারণা দেন।

⦁ মলত্যাগের পর রক্ত পড়া। তবে এর সঙ্গে সাধারণত কোনো ব্যথা হয় না। পাইলস বা হেমোরয়েড যদি প্রথম ধাপে থাকে, সে ক্ষেত্রে মলদ্বারে বাড়তি মাংসের মতো কোনো কিছুই থাকে না। শুধু মলত্যাগের পর তাজা রক্তপাত হয়।

⦁ দ্বিতীয় ধাপের হেমোরয়েড হলে মলত্যাগের পর তাজা রক্তপাত হয়। তবে সাধারণত ব্যথা হয় না এবং মলত্যাগের পর মনে হয় ভেতর থেকে কী যেন বাইরের দিকে বের হয়ে আসে। সেটি এমনিতেই ভেতরে ঢুকে যায়।

⦁ তৃতীয় ধাপের হেমোরয়েড হলে, মলত্যাগের পর বাড়তি মাংসের মতো বের হয়। সেটিকে চাপ দিয়ে ঢুকিয়ে দিতে হয়।

⦁ চতুর্থ ধাপের হেমোরয়েড হলে মলত্যাগের পর বাড়তি যে মাংসপিণ্ড বের হতো, সেটি আর ঢুকবে না। এ ক্ষেত্রে ব্যথা হবে। এটি থ্রববোসড হেমোরয়েড।

চিকিৎসা

ডা. মো. নাজমুল হক মাসুম জানান, প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসকের কাছে গেলে, অর্থাৎ প্রথম ধাপের হেমোরয়েড হলে তার চিকিৎসায় কোনো অপারেশনের প্রয়োজন হয় না। এ ধরনের রোগীকে ওষুধ দেওয়া হয় এবং পায়খানা স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রচুর শাকসবজি খেতে ও পানি পান করতে বলা হয়। কারও যদি কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে, তাহলে মল নরম করার জন্য কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। তাতে প্রায় ৯০ শতাংশ রোগী ভালো থাকে।

দ্বিতীয় ধাপের হেমোরয়েড হয়ে থাকলেও অপারেশন করা হয় না। ইনজেকশনের মতো এর কিছু আধুনিক চিকিৎসা রয়েছে। একে বলা হয় স্কলেরো থেরাপি। আবার কারও ক্ষেত্রে রিং লাইগেশন করা হয়। যেটিকে বলা হয়, রাবার রিং লাইগেশন। পাইলসের তৃতীয় ও চতুর্থ হেমোরয়েডের ক্ষেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আজকাল সেই অপারেশন একেবারেই কষ্টদায়ক নয়। আধুনিক পদ্ধতিতে লেজারের মাধ্যমে অথবা স্টেপল হেমোরয়ডোপেক্সির মাধ্যমে অপারেশন করা হয়। এর মধ্যে বাইরে কোনো কাটাছেঁড়া হয় না।

সূত্র: হেলথ লাইন, সিএনএন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়