শাহীন খন্দকার: [২] ঈদ মানেই আনন্দ। ঈদ মানেই আপনজনের কাছে ফেরা।এটাই সত্য আর এই সত্যকে ঘিরে বেদনার সুর ও রয়েছে মানসিক হাসপাতাল গুলোতে। ইচ্ছে করলেও বাড়ি যেতে পারেন না মানসিক রোগীরা! তাদের ঘরে ফেরার ইচ্ছেগুলো নির্ভর করে পরিবারের সদস্যদের ওপর। আবার কিছু মানুষ আছেন তাদেরকে বাড়ি থেকে দূরেই রেখে আসা ভালো মনে করেন।
[৩] কারণ স্বজনেরা যাতে ভালো করে ঈদ করতে পারেন। যাদের কথা বলতে চাইছি তারা হলেন, মানসিক রোগী। এসব মানসিক রোগীদের নিয়ে মনোচিকিৎসকরা বলছেন, এই মানুষগুলোও ঈদে প্রিয়জনদের সান্নিধ্যও পেতে চায়। কিন্তু এ বিশেষ দিন বা উৎসবে তারা ঘরে যেতে পারছেন না।
[৪] মনোচিকিৎসকরা বলছেন, যারা সহিংস নয় তাদের প্রতি পরিবার সংবেদনশীল হলে তারাও প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উৎসবে আনন্দ করতে পারে। এদের দূরে না রেখে কাছে রাখাই ভালো বলছেন মনোচিকিৎসকগণ। কেনো না মনুষগুলো কাছের মানুষের সান্নিধ্য চায়।
[৫] বাংলাদেশ মানসিক হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউটে কথা হয় আনোয়ারুল কবীর এর স্ত্রীর সঙ্গে। তিনি জানালেন আনোয়ারুল কবীর ভালো জব করতেন। হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পরেন তিনি। গত চারবছর ধরে চিকিৎসা চলছে কবীরের।
[৬] কবীরের স্ত্রী আরও বলেন, কখনো কখনো হাসপাতালে রেখে আবার বাড়ীতে রেখেই চিকিৎসা চলছে। কিন্ত এবার ঈদে তাকে হাসপাতালে রেখেই আমাদের ঈদ করতে হচ্ছে। কারণ বাড়ীতে বিয়ে, ঈদের দু’দিন পরেই অনেক আত্মীয় এসেছে না না রকম প্রশ্নের ভয়েই বাড়ী নিচ্ছি না। আত্বীয় স্বজনের প্রশ্নে সে বিরক্ত হয়। ফলে বাসায় বড় কোনও আয়োজন হলে বা ঈদের আগে আগে আমরা তাকে মানসিক চিকিৎসাকেন্দ্র কোনও একটায় দশ-পনেরো দিনের জন্য রেখে আসি।
[৭]এদিকে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটটিউট, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ যৌথ জরিপ অনুযায়ী দেশে অন্তত ৩ কোটি মানুষ কোনও না কোনোভাবে মানসিক সমস্যায় আছেন বা মানসিক রোগে আক্রান্ত।
[৮]বর্তমানে দেশে বয়স্কদের মানসিক সমস্যার হার ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ আর তরুণ ১৩ শতাংশ। মানসিক রোগ ও চিকিৎসা নিয়ে কথা হয় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের সহকারি অধ্যাপক ডা. চিত্তরঞ্জন দাস সাথে ।
[৯] আর যারা সহিংস আচরণ করেন না তাদের হাসপাতাল থেকে কিছু সময়ের জন্য বাসায় নিয়ে যান, দুই রকম-ই ব্যবস্থা আছে। যেকোনও উৎসব বা ছুটির সময় একইরকম ইমার্জেন্সি থাকে মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটেও।
[১০] চিকিৎসকরা অন কল থাকেন, ইমার্জেন্সি খোলা থাকে। তবে জরুরি না হলে নতুন রোগী এসময় আসে না। বহির্বিভাগের ওপর চাপ কম থাকে। তিনি আরও জানিয়েছেন, যারা ঈদ উৎসবে হাসপাতালে থাকেন তাদের জন্য সরকারি বিধি অনুযায়ী উন্নত খাবার পরিবেশন করা হয়। সম্পাদনা : কামরুজ্জামান
এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :