শিরোনাম
◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের  ◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল

প্রকাশিত : ২০ নভেম্বর, ২০২২, ০৭:৪৬ বিকাল
আপডেট : ২০ নভেম্বর, ২০২২, ০৭:৪৬ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নদীর মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করছে অর্ধ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য!

আলোচনা সভা

কূটনৈতিক প্রতিবেদক: প্রতি বছর প্রায় অর্ধ মিলিয়ন টন একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জ্য বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করছে। ভারত ও মায়ানমার থেকে বাংলাদেশের ১৮টি আন্তঃসীমান্ত নদীতে প্রতিদিন প্রায় ১৫,৩৪৫ টন একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক প্রবেশ করে। এর মধ্য থেকে ২,৫১৯ টন ভারত থেকে এবং ২৮৪ টন মায়ানমার থেকে আসে। 

এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) এর গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। রোববার (২০ নভেম্বর) ঢাকায় আয়োজিত একটি আলোচনা সভায় গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়।

প্লাস্টিক সল্যুশনস ফান্ড এবং গ্লোবাল অ্যালাসেন্স ফর ইনসিনেরেশন অল্টারনেটিভস এর সহযোগিতায় এসেডো গবেষণাটি পরিচালিত করে। গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল বিপজ্জনক প্লাস্টিক বর্জ্যের আন্তঃসীমান্ত চলাচল হ্রাস করার জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং নীতিগত সিদ্ধান্ত অগ্রসর করার জন্য সরকার ও নিয়ন্ত্রকদের সাথে পরামর্শ করা।

গবেষণার প্রধান ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, এসডো এর গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল আমাদের দেশের জলজ ব্যবস্থায়, বিশেষ করে আন্তঃসীমান্তে প্লাস্টিক দূষণের গতিবিধি বিশ্লেষণ করা। এই গবেষণা বাংলাদেশের নদী বাস্ততন্ত্র সংরক্ষণ সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করবে।

ডিসেম্বর ২০২০ থেকে জুলাই ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মোট ৭,০২০ জনের সঙ্গে জরিপ এর বিষয়ে কথা বলা হয়। যার মধ্যে সাধারণ পেশার মানুষ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, মাঝি, জেলে, দোকানদারা অন্তুভূক্ত ছিলেন।

দেশের বিভিন্ন আন্তঃসীমান্ত এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে প্রায় ১১,৭০০ ধরণের প্লাস্টিক বর্জ্যের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সংগ্রহ ও নিশ্চিত করার জন্য কাঠামোগত প্রশ্নাবলীর মাধ্যমে জরিপটি পরিচালনা করা হয়।

এই গবেষণার জন্য বাংলাদেশের যে সকল আন্তঃসীমান্ত নদীগুলোকে মূল্যায়ন করা হয়েছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আপস্ট্রিমের ক্ষেত্রে মহানন্দা, ডাহুক, করতোয়া, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, সুরমা, কুশিয়ারা; মিডস্ট্রিমের ক্ষেত্রে গঙ্গা এবং ডাউনস্ট্রিমের ক্ষেত্রে ইছামতি-কালিন্দি এবং নাফ নদী।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশকে নদীমাতৃক দেশ বলা হয়। কিন্তু এই নদী ই এখন হুমকির মুখে। এই ভয়াবহ একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, যা কখনই পঁচে না আমাদের নদীগুলোর ধ্বংসের জন্য দায়ী। আমরা আশাবাদী যে আমাদের সরকার আবশ্যই এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিবেন।

সাবেক সচিব ড. মাহফুজুল হক বলেন, নদী রক্ষার্থে শুধুমাত্র সরকারের একাই কাজ করলে চলবে না। আমাদের সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও যে সকল দেশ থেকে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকগুলো ভেসে আসছে, সে সকল দেশ এর সাথের আমাদের আলোচনা করতে হবে একটি সঠিক সমাধানের জন্য।

ইউনিভার্সিটি অফ পোর্টসমাউথ এর ওশান পলিসি অ্যান্ড ইকোনমিকের ডিরেক্টর ড. স্টিভ ফ্লেচার ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। তিনি গ্লোবাল প্লাস্টিক চুক্তির উপর ফোকাস করে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দূষণের উপর নিজের মতামত প্রদান করেন।

এসডোর চেয়ারপারসন ও সাবেক তথ্য সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেন, ‘আমাদের দেশের নদীগুলো প্লাস্টিক বর্জ্যে ভরে গিয়েছে। আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদগুলোর মধ্যে অন্যতম হল নদী। এর জন্য আমাদের পদক্ষেপ নেয়া ও দ্বায়িত্ব নেয়ার সময় এসেছে। আসন্ন প্লাস্টিক চুক্তি আমাদের এই কাজে সাহায্য করবে।

এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা বলেন, এটা সত্যিই চিন্তার কারণ যে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্লাস্টিক-দূষিত দেশ। প্লাষ্টিক তৈরির কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এসব সবারই জানা, কিন্তু বাংলাদেশে প্লাস্টিক দূষণ পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। কারণ এটি একটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা, সমাধানটিও বিশ্বব্যাপী হতে হবে।

এনভায়রনমেন্টাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির জলবায়ু ও মহাসাগর অভিযান বিষয়ক প্রকল্প কর্মকর্তা  জ্যাকব কিন-হ্যামারসন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন। তিনি গ্লোবাল প্লাস্টিক চুক্তির সংক্ষিপ্ত বিবরণ, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির উপর জোর দেন যা আইএনসি মিটিংগুলিতে সমাধান করা উচিত।

গায়া ইন্ডিয়া’র কোর্ডিনেটর শিবু নায়ার এর মতে, আসন্ন গ্লোবাল প্লাস্টিক চুক্তি প্রত্যেকটা দেশকে সাহায্য করবে। একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দূষণ থেকে মুক্তি পেতে সকলের এখন এই দিকে মনোনিবেশ করা উচিত। যাতে আমরা এই একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক থেকে রক্ষা পেতে পারি। প্লাস্টিক চুক্তি আমাদের সবার জন্য একটি বড় মাইলফলক হবে। 


গবেষণার চূড়ান্ত ফলাফল উপস্থাপন করেন এসডো’র সহকারী প্রোগ্রাম অফিসার হৃদিতা ফেরদৌস। এতে উপস্থিত ছিলেন, সরকারি বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি ও এসডো’র বোর্ড মেম্বারস ও সদস্যরা।

টিআই/এএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়