শিমুল চৌধুরী ধ্রুব: [২] দেশীয় লোকসংগীতের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী, সুরকার ও গীতিকার শাহ আবদুল করিমের পরিবারের অনুমতি ছাড়াই তার গান পরিবেশন করছে ভারতের শীর্ষ দুই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সারেগামা এবং টি সিরিজ। প্রতিষ্ঠান দুটি বছরের পর বছর ধরে তার গান পরিবেশন করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া বহুল পরিচিত ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’ গানটির ক্ষেত্রে এর স্রষ্টা করিমের নামও উল্লেখ করা হয়নি। বরং গানটিকে ‘প্রচলিত’ বলে প্রচার করছে টি সিরিজ। যা কপিরাইট আইনে গুরুতর অপরাধ।
[৩] ইউটিউব ঘেটে দেখা গেছে, ২০০৬ সালে করিমের ‘আমি বাংলা মায়ের ছেলে’, ২০০৭ সালে ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’ ও ‘গান গাই আমার’ রেকর্ড করে প্রচার করছে ‘সারেগামা’। ২০১২ সালে ‘আমি তোমার কলের গাড়ি’ প্রকাশ করেছে টি সিরিজ। গত ২৭ সেপ্টেম্বর ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’ গানের একটি ভিডিও চিত্র প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সারেগামা কিংবা টি সিরিজ কোনো প্রতিষ্ঠানই করিম কিংবা করিমের পরিবারের অনুমতি নেয়নি বলে জানিয়েছেন করিমের ছেলে বাউলশিল্পী শাহ নূর জালাল।
[৪] ১ অক্টোবর বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে টি সিরিজের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন নূর জালাল। এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর সারেগামার বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন তিনি। প্রতিষ্ঠান দুটির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমে করিম পুত্র বলেন, ‘টি সিরিজ ও সারেগামা আমাদের অনুমতি ছাড়াই গান করেছে; এমনকি টি সিরিজ বাবার নামও দেয়নি। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’ সূত্র: প্রথম আলো অনলাইন
[৫] অনুমতি ছাড়া সারেগামা ও টি সিরিজের গান প্রচারকে ‘ভয়ংকর অপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের সাবেক রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘শাহ আবদুল করিমের নামে গানটির মেধাস্বত্ব নিবন্ধন করা আছে। এটিকে মনগড়াভাবে ‘প্রচলিত’ লিখে দিলে তো হবে না। কপিরাইট আইন অনুসারে, ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’সহ আবদুল করিমের যেকোনো গান বাণিজ্যিকভাবে প্রচারের আগে স্বত্বাধিকার শাহ নূর জালালের অনুমতি নিতে হবে। অন্যথায় তা কপিরাইট আইনের ৭১ ধারার লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হবে।’
[৬] টি সিরিজের ব্যানারে ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’ গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ভারতের গায়ক গুরুজিৎ সিং। তিনি বলেন, ‘গানটি মুম্বাই থেকে প্রকাশ করা হয়েছে, প্রকাশের পর দেখলাম, শাহ আবদুল করিমের নাম নেই। সঙ্গে সঙ্গে টি সিরিজকে জানিয়েছি। সোমবার জানলাম, তবু নাম যোগ করা হয়নি।’ শ্রোতাদের কাছে ‘দুঃখপ্রকাশ’ করে তিনি জানান, গানটিকে ‘প্রচলিত’ বলে চালিয়ে দেওয়ায় নিজেও বিব্রত হয়েছেন গুরুজিৎ সিং। সম্পাদনা: তারিক আল বান্না
এসসিডি/টিএবি/একে