শিরোনাম
◈ কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীনকে সাময়িক বরখাস্ত ◈ ৯/১১ হামলার ২৪ বছর: নিহতদের স্মরণে যুক্তরাষ্ট্রে শোক ও শ্রদ্ধা ◈ ৩৩ বছর পর ভোট জাকসুতে—ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ২৫ পদে লড়ছেন ১৭৭ প্রার্থী ◈ নরসিংদীতে তুচ্ছ ঘটনায় আপন দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা ◈ চিঠি লিখে ভারতকে একহাত নিলেন নেপালের পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী ◈ লাইফ সাপোর্টে ফরিদা পারভীন ◈ এ‌শিয়া কাপ, ৪ ওভার ৩ বল খে‌লে আরব আ‌মিরাত‌কে হারা‌লো ভারত ◈ আগুন জ্বলে উঠতে পারে ভারতেও, শিবসেনা নেতার সতর্কতা ◈ অবশেষে খোঁজ মিললো ক্ষমতাচ্যুত নেপালি প্রধানমন্ত্রীর ◈ ডাকসু নির্বাচন: শিবিরকে অভিনন্দন জানিয়ে দেয়া পোস্ট সরিয়ে ফেললো পাকিস্তান জামায়াত!

প্রকাশিত : ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০২:১৭ দুপুর
আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ক্ষণজন্মা নক্ষত্র সালমান শাহ: প্রয়াণের ২৯ বছরেও অম্লান স্মৃতিতে, জনপ্রিয়তায় এখনও সবাইকে ছাড়িয়ে

ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়কদের মধ্যে এখনো তাকে সহজে আলাদা করা যায়। যার অভিনয় ও স্টাইলে এখনও মুগ্ধ বর্তমান প্রজন্মের দর্শকেরা। ক্যারিয়ারের সময়সীমা মাত্র চার বছর, আর তাতেই হয়েছিলেন খ্যাতিমান। বলছি ঢাকাই সিনেমার ক্ষনজন্মা নক্ষত্র সালমান শাহের কথা। 

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সবাইকে বিস্মিত করে না ফেরার দেশে চলে যান নায়ক সালমান শাহ। মৃত্যুর এত বছর পরও দর্শক হৃদয়ে আজও বেঁচে আছেন ঢালিউডের হার্টথ্রব নায়ক সালমান শাহ। 

নব্বইয়ের দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের এক ধূমকেতুর নাম সালমান শাহ। ক্ষণজন্মা এই অভিনেতা মাত্র সাড়ে তিন বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শকদের মন জয় করে নিমিষেই খসে পড়েন চলচ্চিত্রের আকাশ থেকে।

১৯৯৩ সালে সালমান শাহ অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ মুক্তি পায়। প্রয়াত নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত সিনেমাটি দেখে মন্ত্রমুগ্ধের মতো আবিষ্কার করল এক নবাগত নায়কের অসাধারণ অভিনয়শৈলী। এমনি করে চলচ্চিত্রপ্রেমীরা প্রেক্ষাগৃহ মুখী হলেন, পরিচালকরা হলেন আস্বস্ত। এমনি করে সুদিন ফিরে আসে বাংলার চলচ্চিত্রে। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি অচেনা অজানা সালমানকে। বাংলা চলচ্চিত্রের ত্রাতা হয়ে একে একে উপহার দিলেন দুর্দান্ত ২৭টি সিনেমা। অভিনয়ের জাদু দেখালেন, সবার মন জয় করলেন আবার কাউকে কিছু না-বলে একবুক চাপা অভিমান নিয়ে চলেও গেলেন।

সালমান শাহ অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে ১৯৯৩ সালে মুক্তি পায় ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘দেন মোহর’ ও ‘তোমাকে চাই’। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পায় ‘বিক্ষোভ’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’ এবং ‘বিচার হবে’। ১৯৯৫ সালে মুক্তি পায় ‘জীবন সংসার’, ‘মহামিলন’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ ও ‘এই ঘর এই সংসার’ প্রভৃতি।

অন্তরে অন্তরে’ সিনেমাসহ কয়েকটি সিনেমায় গুণী অভিনেত্রী আনোয়ারা বেগম সহশিল্পী হিসেবে পেয়েছিলেন সালমান শাহকে। এই নায়ককে এখনো মনে পড়ে জানিয়ে তিনি বলেন, সালমানকে এখনো মনে পড়ে। ও মজা করে আমাকে বলত, ও দাদি ও দাদি আমি তোমার দিওয়ানা। সালমান অনেক বড় মাপের শিল্পী ছিল। ওর ড্রেস সেন্স ভালো ছিল। শুটিংয়ের বাইরে অনেক দুষ্ট ছিল। অনেক পাগলামি করত। তবে কাজে কখনো পাগলামি করত না। চরিত্রে ডুবে যেত। যে কারণে অল্প বয়সে এত নাম করেছে। অল্প সিনেমা করে সালমানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক হয়েছিল। সালমান শাহকে কল্পনা করে কাঁদতাম। আমাদের ভাগ্য খারাপ যে অল্প দিনে ওকে আমাদের হারাতে হয়েছে। বেঁচে থাকলে আরও সিনেমা করত। ওরে আল্লহ খুব দ্রুত নিয়ে গেছে।

‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমা দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন সালমান শাহ। একই সিনেমাতে গান গেয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন কণ্ঠশিল্পী আগুন। এরপর দুজনকেই আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সাফল্য ছুঁয়েছেন তারা জনপ্রিয়তায়। ব্যক্তিজীবনেও সালমান-আগুন ভালো বন্ধু ছিলেন। পর্দায় সালমান শাহের ঠোঁট মেলানো বেশিরভাগ গানই গেয়েছেন আগুন। যদিও মাত্র তিন বছরের মাথায় সেই ধারাবাহিকতায় টান পড়ে। আগুনকে রেখে না ফেরার দেশে চলে যান সালমান। আজও বন্ধুকে মিস করেন আগুন। 

এই গায়ক বলেন, আমার আর সালমানের ক্যারিয়ার একসঙ্গে শুরু। আমরা ছিলাম একে অপরের পরিপূরক। সালমান কাজ পাগল একটা মানুষ ছিল। সেসময় সালমান মানে আগুন, আগুন মানেই সালমান ছিল। সালমান যা করেছে তা বহু মানুষ করতে পারবে না। এখনো পর্যন্ত কেউ করতে পারেনি।

চলচ্চিত্রে সালমানের নামটি আজও জ্বলজ্বলে। কিন্তু এতকিছুর পরও তার নামে নেই কোনো শুটিং ফ্লোর অথবা রাস্তা। তার নামে এফডিসিতে নেই কোনো স্থাপনা। প্রয়াণের এত বছর পেরিয়েও সালমান শাহ তার ভক্তদের কাছে এখনো স্বতন্ত্র আলোয়ে মহীয়ান। মাত্র সাড়ে তিন বছরের ক্যারিয়ারেই সালমান থেকে এতটা প্রাপ্তি সত্যি বিস্ময়ের ব্যাপার। তার হাত ধরেই বাণিজ্যিক সিনেমা পেয়েছিল ভিন্নমাত্রা। প্রথম সিনেমা থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি চলচ্চিত্রেই দর্শক তাকে দেখতে পেয়েছেন নতুন থেকে নতুনত্বে; পরিপূর্ণ থেকে পরিণত রূপে। সালমান অভিনীত ২৭টি সিনেমার মধ্যে ২১টি তার জীবদ্দশায় মুক্তি পেয়েছিল আর বাকি ৬টি সিনেমা মুক্তি পায় মৃত্যুর পর।

সালমান শাহ মৃত্যুর রহস্যের জট আজও খুলেনি। এখনো সালমানের পরিবার, সহকর্মী ও ভক্তরা প্রিয় নায়কের মৃত্যুর আসল কারণ জানার জন্য ব্যাকুল। গতানুগতিক সিনেমা ও নায়কের ভিড়ে তরুণ সালমান নতুন দুয়ার খুলে দেন দর্শকদের জন্য। যে কারণে আজও স্মৃতির আয়নায় সালমান শাহ। স্মৃতি ক্ষয়ে ক্ষয়ে ধূসর হয়ে গেলেও, বেঁচে আছেন দর্শকদের অন্তরে।

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়