পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দুর্বল ও তারল্য সংকটে ভুগতে থাকা শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বিলুপ্ত করে তা অকার্যকর ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোর শেয়ারের মূল্য ‘শূন্য’ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। আগামী ১১ই নভেম্বরের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ফেরত দেয়ার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না আসলে বাংলাদেশ ব্যাংক ঘেরাও, অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি পালনের আলটিমেটাম দিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পুরো ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হয়। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের বানারে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি মিজানুর রশিদ চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাজ্জাদুর রহমান, সংগঠনের অন্যান্য নেতা ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মিজানুর রশিদ চৌধুরী বলেন, “আগামী শনিবার (৮ নভেম্বর) রাত ১২টার মধ্যে অর্থ উপদেষ্টা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করছি। কারণ তারা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা না করে এক করার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিচ্ছে। তাই উল্লিখিত সময়ের মধ্যে তারা পদত্যগ না করলে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুর ২টায় ওই পাঁচ ব্যাংকের বিনিয়োগকারী ও আমানতকারীদের নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।”
তিনি বলেন, “সরকার ব্যাংকগুলোকে একীভূতকরণের মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়েছে। আমাদের কষ্টে অর্জিত বিনিয়োগকে শূন্য ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা ওই ব্যাংকগুলোর শেয়ারের বিপরীতে কিছুই পাবেন না। এটা হতে পারে না। বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কঠোর প্রতিবাদ জানায়। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো এখতিয়ার নাই। নির্বাচিত সরকার এলে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।”
তিনি আরো বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে মার্জার (একত্রীকরণ) প্রক্রিয়া দ্রুত সময়ের মধ্যে বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। যে প্রক্রিয়ার ব্যাংকগুলো মার্জার করা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভুল প্রক্রিয়া। যদি মার্জার করতেই হয়, তাহলে আগামী ফেব্রুয়ারি পরবর্তী নির্বাচিত সরকার এসে সিদ্ধান্ত নিবে। দুই দিনের এই সরকার শেয়ারহোল্ডারদের ধ্বংস করে ব্যাংকগুলোকে মার্জ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা এখন তলানিতে। নানান উদ্যোগ নিয়েও বাজারে ভালো করতে পারছে না।”
সূত্র: মানবজমিন